রাজ্য – বঙ্গোপসাগরে মরসুমের প্রথম ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় আবহাওয়া দফতর (আইএমডি)। দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী মঙ্গলবার, অর্থাৎ ২৮ অক্টোবর রাতে অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে অত শক্তিশালী এই ঘূর্ণিঝড়। যার প্রভাব পড়বে পশ্চিমবঙ্গসহ পূর্ব ভারতের একাধিক রাজ্যে। পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঝড়ের সময় হাওয়ার গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছতে পারে, সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ১১০ কিলোমিটার। ইতিমধ্যেই তামিলনাড়ু ও অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে ‘রেড’ ও ‘অরেঞ্জ’ অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। রবিবার থেকেই উত্তর তামিলনাড়ু, কেরল, পুদুচেরি এবং উপকূলীয় অন্ধ্রপ্রদেশে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি মঙ্গলবার থেকে দক্ষিণবঙ্গে প্রবল বৃষ্টিপাত শুরু হতে পারে।
আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে ইতিমধ্যেই একটি নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে, যা ক্রমে পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে। শনিবার জারি করা বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, রবিবারের মধ্যে ওই নিম্নচাপটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে এবং সোমবার সকাল নাগাদ সেটি ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিতে পারে।
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, সোমবার থেকেই পূর্ব মেদিনীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় বৃষ্টি শুরু হবে। মঙ্গলবার থেকে কলকাতা, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি এবং ঝাড়গ্রাম জেলায় ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। কিছু এলাকায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিও হতে পারে। একইসঙ্গে ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে দমকা হাওয়া বইতে পারে বলে জানানো হয়েছে।
আবহাওয়া দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির পক্ষে অনুকূল। তবে ঝড়ের শক্তি ও গতিপথই নির্ধারণ করবে রাজ্যে বৃষ্টির পরিমাণ এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিধি কতটা হবে।”
দক্ষিণবঙ্গের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গেও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বুধবার জলপাইগুড়ির কিছু অংশে ভারী বৃষ্টি হতে পারে, আর বৃহস্পতিবার মালদা, দক্ষিণ দিনাজপুর, কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার জেলাগুলিতেও প্রবল বর্ষণের পূর্বাভাস জারি করা হয়েছে।
আবহাওয়া দফতরের তথ্য অনুযায়ী, রবিবার থেকেই সমুদ্র উত্তাল হয়ে উঠবে। ওইদিন থেকেই বাতাসের গতি ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। রবিবার রাত থেকে সোমবার সকাল নাগাদ তা আরও বেড়ে ৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছতে পারে। ফলে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত জেলেদের সমুদ্রে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যারা ইতিমধ্যেই গভীর সমুদ্রে আছেন, তাঁদের সোমবারের মধ্যে তীরে ফিরে আসতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৩.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৪.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি থাকতে পারে। ২৮ থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত সমুদ্র উত্তাল থাকবে, এ সময় ঘণ্টায় ৫৫ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। তাই এই তিন দিন মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে না যাওয়ার পরামর্শই দেওয়া হয়েছে।




















