পুরুলিয়া – অভাবের সংসারে প্রতিদিনের লড়াইয়ের মাঝে ঘটে গেল এক মর্মান্তিক ঘটনা। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের আদ্রা-চান্ডিল শাখার বরাভূম স্টেশনে ট্রেনে মৃত্যু হলো এক মহিলার। কিন্তু এরপর যা ঘটল, তা আরও হৃদয়বিদারক। স্ত্রীর মৃতদেহ নিয়ে ৬ ঘণ্টারও বেশি সময় স্টেশনেই বসে রইলেন স্বামী, অথচ রেল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কোনো সহায়তা মেলেনি বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, মৃতার নাম শান্তা কর্মকার এবং তাঁর স্বামী মনোজ কর্মকার। দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করে ভাঙা বোতল কুড়িয়ে বিক্রি করাই ছিল তাঁদের একমাত্র জীবিকা। ঝাড়খণ্ডের কাঁন্দ্রা স্টেশন থেকে গোমো ট্রেনে ফিরছিলেন তাঁরা। পথিমধ্যে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন শান্তা। তড়িঘড়ি তাঁকে বরাভূম স্টেশনে নামানো হলেও ততক্ষণে সব শেষ হয়ে যায়। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।
মনোজ কর্মকার অভিযোগ করেছেন, স্ত্রীর মৃত্যুর পর দীর্ঘ সময় ধরে তাঁর মৃতদেহ স্টেশনেই পড়ে ছিল। রেলের তরফে কোনো চিকিৎসা বা সহায়তা দেওয়া হয়নি। উল্টে তাঁকে মৃতদেহ সরানোর জন্য চাপ দেওয়া হয়। এই ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, রেলের উদাসীনতায় একজন মৃতের সম্মানও রক্ষা করা হলো না। এমনকি, স্টেশন ম্যানেজার এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতেও রাজি হননি।
খবর পেয়ে পুরুলিয়া জিআরপি ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। চিকিৎসকের রিপোর্ট এলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। তবে এই ঘটনায় রেল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্নের ঝড় উঠেছে।
