বর্ধমান – বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় দুই কোটি টাকা তছরুপের ঘটনায় অন্যতম মূল অভিযুক্ত ভক্ত মণ্ডলকে গুজরাট থেকে গ্রেপ্তার করেছে লালবাজার। বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ বিভাগের ওই কর্মী গত দু’বছর ধরে পলাতক ছিলেন। তদন্তে জানা গেছে, তিনি কিছু সময় নেপালেও আত্মগোপন করেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অভিযুক্তকে অনেক আগেই সাসপেন্ড করা হয়েছে এবং তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে তাদের কোনও আপত্তি নেই।
সিআইডি তদন্তে উঠে এসেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিক্সড ডিপোজিট থেকে টাকা তুলে একাধিক ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছিল। দিল্লি, নদীয়া ও কলকাতা সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে সেই টাকা তোলা হয়। দীর্ঘদিন তদন্তের অগ্রগতি না হওয়ায় আদালত অসন্তোষ প্রকাশ করে এবং লালবাজারের এক অ্যাসিস্ট্যান্ট পদমর্যাদার অফিসারকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়। তিনি একটি বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করে তদন্ত শুরু করেন এবং অবশেষে ভক্ত মণ্ডলকে গ্রেপ্তারে সাফল্য আসে।
এর আগে সিআইডির হাতে গ্রেপ্তার হয়ে জামিনে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মী জানিয়েছিলেন, ভক্ত মণ্ডলই তাঁকে ফিক্সড ডিপোজিটের নথি দিয়েছিলেন। তিনি দাবি করেন, খামের মধ্যে কী ছিল তা তিনি জানতেন না। এ ঘটনায় জড়িত বাকি অভিযুক্তদেরও দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে বলে তদন্তকারী সংস্থা আশাবাদী।
তদন্তে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের আধিকারিকদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাদের সতর্কতার কারণেই এই কেলেঙ্কারি ফাঁস হয়। প্রথমবারে বিষয়টি ধরা না পড়লেও দ্বিতীয়বার টাকা হস্তান্তরের নথি দেখে সন্দেহ হয় এবং তারা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানায়।
এই কেলেঙ্কারিতে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি তুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। তাঁদের মতে, সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের অর্থ নিয়ে দুর্নীতি অগ্রহণযোগ্য, এবং এর সঙ্গে জড়িত প্রত্যেকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
