রাজ্য – বর্ষা শুরু হতেই রাজ্যে ফের উঁকি দিচ্ছে ডেঙ্গির আতঙ্ক। কখনও রোদের ঝলক, কখনও টানা বৃষ্টিতে জল জমে তৈরি হচ্ছে মশার প্রজননের আদর্শ পরিবেশ। আর তাতেই ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে। স্বাস্থ্য দফতরের সাম্প্রতিক তথ্য বলছে, চলতি মাসেই ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় এক হাজার মানুষ।
জেলাভিত্তিক পরিসংখ্যানে শীর্ষে রয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলা, যেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৬৭। এরপর রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা (৩৫৬), হুগলি (২৬৫), হাওড়া (২৪১), মালদা (২৩৩)। তুলনায় কম হলেও কলকাতাতেও আক্রান্ত ১৭৬ জন, যা শহরবাসীর উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে।
ডেঙ্গি রুখতে জোর কদমে নেমেছে স্বাস্থ্য দফতর। ইতিমধ্যে একাধিক বৈঠক হয়েছে, বিশেষ করে গত বছরের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়েই কড়া পদক্ষেপ নিতে চায় সরকার। কারণ, ২০২৩ সালে রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছিলেন প্রায় ১ লক্ষ ৭ হাজার মানুষ, যা ছিল গত ১২ বছরের রেকর্ড।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এবারে বর্ষা একটু আগেই শুরু হওয়ায় ডেঙ্গির প্রকোপ দ্রুত ছড়িয়েছে। শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. প্রভাসপ্রসূন গিরি জানান, “গত ২ বছরে ডেঙ্গির প্রভাব তুলনায় কম থাকলেও এবারে বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।” সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. অমিতাভ নন্দী বলেন, “ডেঙ্গি এখন শহরের গণ্ডি ছাড়িয়ে গ্রামীণ এলাকাতেও ছড়িয়ে পড়ছে।”
তবে শুধু ডেঙ্গিই নয়, ফের ম্যালেরিয়ার দাপটেও নজরে কলকাতা। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের প্রকাশিত ২০২৪ সালের ম্যালেরিয়া রিপোর্টে দেশের ৭৭৫টি জেলার মধ্যে কলকাতা রয়েছে ষষ্ঠ স্থানে। গত বছর শহরে আক্রান্ত হন ১০ হাজার ১৭৭ জন। উল্লেখযোগ্যভাবে, মেট্রো শহরগুলির মধ্যে একমাত্র কলকাতাতেই এত বিপুল ম্যালেরিয়া সংক্রমণ দেখা গিয়েছে।
গত তিন বছরেও (২০২১-২৩) টানা প্রথম স্থানে ছিল কলকাতা জেলা, যা এবার কিছুটা নেমে এলেও উদ্বেগ থেকেই যাচ্ছে। কলকাতার আগে তালিকায় রয়েছে পশ্চিম সিংভূম, গোড্ডা (ঝাড়খণ্ড) এবং কালাহান্ডি, রায়গড়, কান্ধামাল (ওড়িশা)।
