বর্ষা যেতেই কুলিক ছাড়ছে পরিযায়ী পাখিরা, মন ভার শহরের। আনুষ্ঠানিক ভাবে বর্ষা বিদায় নেয় সেপ্টেম্বর মাসের শেষেই। কিন্তু এবছর একের পর এক নিম্নচাপের প্রভাবে বর্ষা কালের লেজ প্রসারিত হয়েছে অক্টোবর মাসের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত। এরকম পরিস্থিতিতে, এবার কুলিক পাখিরালয় ছাড়তে শুরু করেছে বর্ষাকালীন পরিযায়ী পাখিরা। শহরের অতিথিদের বিদায়ে মন ভার পাখি প্রেমী রায়গঞ্জ শহরবাসীর।
এবছর প্রাক মৌসুমী বৃষ্টি শুরু হতেই রায়গঞ্জ শহর লাগোয়া কুলিক পাখিরালয়ে ভিড় জমাতে শুরু করে ইগরেট পাখিরা। সাদা রঙের এই ইগরেটের দল সবুজ অভয়ারণ্যকে সাজিয়ে তোলে সাদা রঙে।
এরপর মৌসুমি বর্ষা শুরু হলে পাখিরালয়ে চলে আসে ওপেন বিল স্টক, কর্মোরেন্ট, নাইট হেরন প্রজাতির পাখিরা। এই অবস্থায় পাখির সংখ্যক পুরোনো রেকর্ড ভাঙবে বলে জানিয়েছিলেন শহরের পাখি বিশেষজ্ঞরা। রায়গঞ্জ শহরের পাখি শুমারীতে অংশ নিয়েছিলেন স্কুল শিক্ষক ক্ষীরোদ সরকার। তিনি বলেন, রায়গঞ্জ বনবিভাগের উদ্যোগে গত সেপ্টেম্বর মাসে শুরু হয় পাখি গননা। সম্প্রতি প্রকাশ্যে আসে সেই পাখি গননার রিপোর্ট।
আরও পড়ুন – উৎসবের মেজাজে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে “ছট” বন্দনা
তাতে দেখা যায়, এবছর কুলিক পাখিরালয়ে আসা মোট পাখির সংখ্যা ৯৯৩৯৩টি। ক্ষীরোদ বাবু জানান, এবছরের পাখি গননা হয় ১৫ ও ১৬ই সেপ্টেম্বর। এতে হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ার্স এন্ড ট্রেকার্স এসোসিয়েশন, উত্তর দিনাজপুর পিপলস ফর এ্যানিম্যালস, রায়গঞ্জ পিপলস ফর এ্যানিম্যালস, ন্যাফ, নর্থ বেঙ্গল ফটোগ্রাফিক ক্লাবের স্বেচ্ছাসেবকেরা অংশ নেয়। ২০২০ সালে এই অরণ্যে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা ছিল ৯৯৬৩১ টি, ২০২১ সালে সংখ্যাটা গিয়ে দাঁড়ায় ৯৮৭৩৯টিএবং এ’বছর মোট পাখির সংখ্যাটা হল ৯৯৩৯৩ টি।
বন আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, এবছর সবার প্রথমে ইগরেট পাখিরা এসেছিল। বাসা বেঁধে বাচ্চাদের বড় করে উড়তে শিখিয়েছিল। তারা উড়ে অন্যত্র পাড়ি দিয়েছে। শামুকখোল পাখিদের যারা পরে ডিম দিয়েছে, তাদের বাচ্চাদের এখন উড়তে শেখানো চলছে। তাই কিছু পরিযায়ী পাখি পড়ে রয়েছে। ওরাও শীত পড়লে ফিরে যাবে দূরদেশে। তখন পড়ে থাকবে দেশীয় নানারকম রঙবেরঙের পাখিরা।