বাঁকুড়ার পোড়া পাহাড়ে রহস্যময় গুহার সন্ধান, আদিম মানুষের বসবাসস্থল দাবী স্থানীয়দের একাংশের। বাঁকুড়ার পোড়া পাহাড়ে মিলল বিশালাকার গুহার সন্ধান। এতদিন স্থানীয় মানুষ এই গুহার খোঁজ জানলেও সে অর্থে বাইরের লোকজন এই গুহার খোঁজ জানতেন না। প্রায় দুশো ফুট দীর্ঘ এই গুহা কোন সময়ে ও কী কারনে তৈরী করা হয়েছিল তা নিয়ে রহস্য দানা বাঁধছে। বাঁকুড়ার খাতড়া থেকে রানীবাঁধের রাস্তায় কিলোমিটার চারেক গেলেই সাহেব বাঁধ মোড়। সেই মোড় থেকে আরো কিলোমিটার চারেক গেলেই দেখা মিলবে পোড়া পাহাড়ের। দেখতে আর পাঁচটা পাহাড়ের মতোই পোড়া পাহাড়।
পাহাড়ের পাকদন্ডী বেয়ে ঝোপঝাড়ের রাস্তা পেরিয়ে মাঝামাঝি জায়গায় পৌঁছালেই দেখা মিলবে একটি গুহামুখের। সেই গুহামুখ দিয়ে ফুট কুড়ি এগোলেই রয়েছে জাংশান পয়েন্ট। এখান থেকে গুহা দুদিকে চলে গেছে। ডান দিকে গেলে ফুট পঞ্চাশ যাওয়ার পরই গুহার অপর একটি মুখ পাহাড়ের গায়ের একাংশে খোলা আকাশের নিচে বেরিয়ে যাচ্ছে। বাম দিকের সুড়ঙ্গ চলে যাচ্ছে প্রায় দেড়শো ফুট। গোটা গুহার মেঝে থেকে ছাদের উচ্চতা গড়ে সাড়ে ছ’ফুট।
আরও পড়ুন – দেওয়াল কেটে ব্যাঙ্কে চুরি, এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য, উঠছে একাধিক প্রশ্ন
কোথাও কোথাও তা সাত ফুট পর্যন্ত। গুহার ভেতরে মূল সুড়ঙ্গর দুদিকে মোট সাতটি কুঠুরি রয়েছে। কুঠুরি গুলির দৈর্ঘ কুড়ি ফুট প্রস্থ প্রায় সাত থেকে আট ফুট। স্থানীয়দের মধুসূদন মাহাতোর দাবী, “এই গুহায় আদিম মানুষ বসবাস করত”। তবে ভিন্ন মতও উঠে আসছে। কেউ কেউ বলছেন খনিজের খোঁজে কয়েক দশক আগে এই গুহা খনন করা হয়ে থাকতে পারে। যে আমলেই খনন করা হয়ে থাকুক না কেন এই প্রাচীন গুহা সংরক্ষণের দাবী তুলছেন স্থানীয়রা।
বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তথা লোক গবেষক অরবিন্দ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ” লালজল সহ জঙ্গলমহলের বহু জায়গায় প্রাচীন গুহা রয়েছে। সেই গুহাগুলিতে আদি মানবের বসবাসের চিহ্ন মিলেছে। এই গুহাগুলিকে পরবর্তীতে রাজারা ধনঘর হিসাবে ব্যবহার করেছেন। আরো পরে বিপ্লবীরা এই গুহাগুলিকে নিজেদের আত্মগোপনের স্থান ও অস্ত্র লুকিয়ে স্থান হিসাবে ব্যবহার করেছেন। স্বাভাবিক ভাবে এই গুহাগুলির ঐতিহাসিক তাৎপর্য অসীম”।