‘বাংলাদেশী’ তকমা পেয়ে জেলে যুবক! মুক্তি মিলল আদালতে

‘বাংলাদেশী’ তকমা পেয়ে জেলে যুবক! মুক্তি মিলল আদালতে

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram

কোচবিহার- বাংলাদেশী তকমা দিয়ে জেলে ভরা হয়েছিল ভারতীয় যুবককে। আদালতের নজরে আসতেই শোরগোল। মানসিক প্রতিবন্ধী ওই যুবককে মুক্তি দিলেন বিচারপতি অজয়কুমার মুখার্জি।
শ্যামলচন্দ্র পাল কোচবিহার জেলার দিনহাটা থানা এলাকার বাসিন্দা। ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন তিনি।বহু খোঁজ করেও তার সন্ধান না পেয়ে মিসিং ডায়রি করে তাঁর পরিবার। কিন্তু তারপরেও খোঁজ মেলেনি তাঁর।



২০২২ সালে শ্যামলবাবুর স্ত্রী চায়না কুন্ডু পাল কোনও ভাবে খবর পান বহরমপুর জেলে রয়েছেন তার স্বামী। কিন্তু সেখানে তার নাম হরিলাল চন্দ্র পাল। তার বাবা থাক্কাচন্দ্র পাল বাংলাদেশের টাঙ্গাইল জেলার বাসিন্দা। বেআইনি অনুপ্রবেশের অভিযোগে তিনি সাজাপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে রয়েছেন। খবর পেয়ে বহরমপুরে ছুটে যান চায়না।সেখানে জেলখানায় গিয়ে দেখা করে নিশ্চিত হন তার স্বামীকে ভুয়ো পরিচয় দিয়ে জেলে বন্দি করে রাখা হয়েছে। স্বামীর প্রকৃত পরিচয়ের নথি দিয়ে বহরমপুর জেল কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেন।


এরপর নড়েচড়ে বসে জেল কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি কলকাতা হাইকোর্টে ২০২২ ক্রিমিনাল রিভিশন হয়। মামলা স্থানান্তরিত হয় জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে। এরপর আদালত স্পেশাল আই জি (জেল) কে তদন্তের নির্দেশ দেন। আই জি কোচবিহার পুলিশ সুপারকে ২২/০৭/২০২৪ সালে বিষয়টি ভেরিফিকেশন করতে পাঠায়। ২০২৪ সালের অগস্ট মাসে এসপি রিপোর্ট পাঠালে দেখা যায় উনি ভারতীয়।



কিন্তু পরবর্তীতে দেখা যায় দীর্ঘদিন ধরে শ্যামলবাবুর আইনজীবী আদালতে তুলছেন না বিষয়টা। এরপর গত ৫ মার্চ বিচারপতি ডক্টর অজয়কুমার মুখার্জি এই মামলার নিষ্পত্তি করতে আদালত বান্ধব আইনজীবী হিসেবে সৌরভ গাঙ্গুলিকে নিযুক্ত করেন। বৃহস্পতিবার মামলার শুনানি হয়। বিচারপতি শ্যামল পালকে মুক্তি দেন। বর্তমানে শ্যামলবাবু বহরমপুর মানসিক হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।


আইনজীবী সৌরভ গাঙ্গুলি বলেন, “আমি শ্যামল চন্দ্র পাল যে একজন ভারতীয়, এই মর্মে যাবতীয় নথি আদালতে দাখিল করি। বিচারপতি সন্তুষ্ট হয়ে তাঁকে মুক্তি দেন। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় একজন মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি কীভাবে সাজাপ্রাপ্ত হলেন? ছয় বছর জেল খেটে ফেললেন। আর পুলিশ কী ভাবে তদন্ত করে ওঁকে বাংলাদেশী বানিয়ে দিল সেটা বোঝা গেল না। তবে ওঁর পরিবার যদি এই বিষয়টি নিয়ে আবার আদালতে রিট পিটিশন করে তবে আদালত নিশ্চয়ই তাঁকে সুবিচার দেবে।



সরকার পক্ষের আইনজীবী অনিরুদ্ধ বিশ্বাস বলেন, “এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। একজন ভারতীয় হয়েও ওঁকে বাংলাদেশী নাগরিক হিসেব পুশ ব্যাক করা হয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশ ওঁকে গ্রহণ করেনি। এরপর বিষয়টি নিয়ে ফের রিভিউ করলে ওঁর আসল পরিচয় বেরিয়ে আসে। আসলে প্রসিকিউশনের কাজ সত্য উদঘাটন করা। সেটাই করা হয়েছে।আজ বিচারপতি ওঁকে মুক্ত করেছেন।”

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top