প্রথমবার আইপিএল আর ফাইনাল জয়ের মঞ্চেই বাজিমাত গুজরাতের

প্রথমবার আইপিএল আর ফাইনাল জয়ের মঞ্চেই বাজিমাত গুজরাতের

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram

প্রথমবার আইপিএল আর ফাইনাল জয়ের মঞ্চেই বাজিমাত গুজরাতের। হার্দিক পান্ডিয়ার হাত ধরে আইপিএলের শিরোপা জিতল গুজরাত টাইটান্স। পুরো আসরজুড়ে দুর্দান্ত পারফর্ম করা রাজস্থানের ব্যাটিং লাইনআপ ধ্বসে পড়লো সবচেয়ে বড় মহারণের ম্যাচে। সঞ্জু স্যামসনের দলের ব্যর্থতায় নিজেদের মেলে ধরে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) প্রথম মৌসুম খেলতে এসেই শিরোপা ঘরে তুললো হার্দিক পান্ডিয়ার গুজরাট টাইটান্স। আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়াম বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্টেডিয়াম। সেই স্টেডিয়ামেই রেকর্ড সংখ্যক দর্শকের সামনেই রোববার রাতের ফাইনালে রাজস্থান রয়্যালসকে ৭ উইকেটে হারিয়ে শিরোপা জিতে নেয় আইপিএলের নবাগত দলটি।

 

গুজরাট টাইটান্সের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা হলো এলাম, দেখলাম, জিতলাম। একেবারেই নতুন একটি দল, আইপিএলের যাত্রাই শুরু করলো এবার, আর সেই শুরুতেই বাজিমাত করলো অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়ার গুজরাট। শুরু থেকেই পুরো টুর্নামেন্টজুড়ে অসাধারণ খেলেই ফাইনালে উঠে সেখানেও যথেষ্ট দৃঢ়তার পরিচয় দিয়েই শিরোপা জিতলো গুজরাট। গ্রুপ পর্বে শেষে সবার শীর্ষে থেকেই প্লে-অফে উঠেছিলো নবাগত দলটি। সেখানে প্রথম কোয়ালিফায়ারে এই রাজস্থান রয়্যালসকে হারিয়েই সরাসরি ফাইনালে উঠে আসা, কোয়ালিফায়ারের মতো ফাইনালেও তাদের আবারও হারিয়ে তুলির শেষ আঁচড় দিয়ে শিরোপা নিজেদের করে নেয়া। পুরোটাই যেন গুজরাটের জন্য ছিলো একটা স্বপ্নযাত্রা।

 

ফাইনালের মঞ্চ বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিকেট স্টেডিয়াম আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামকে আবার গুজরাটের ঘরের মাঠও বলা চলে। গুজরাটিই যে অবস্থিত প্রকান্ড এই স্টেডিয়াম। ফাইনালে তাই ঘরের দলের সমর্থকরাই ছিলো বেশি। ফাইনালে এক লক্ষাধিকের ওপর দর্শক উপস্থিত ছিলো স্টেডিয়ামে, যা আবার বিশ্বরেকর্ডও। ঘরের মাঠের এতো দর্শককে আর হতাশ করেননি পান্ডিয়ার দল।

 

বলা যায়, অধিনায়কোচিত এক পারফরম্যান্সেই দলকে শিরোপা জিতিয়েছেন পান্ডিয়াই। পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে বিধ্বংসী ব্যাটিংশৈলী প্রদর্শন করা রাজস্থান ফাইনালে প্রথমে ব্যাট করে সংগ্রহ করে মাত্র ১৩০ রান। হার্দিক পান্ডিয়া নিজের ৪ ওভার বোলিংয়ে মাত্র ১৭ রান দিয়ে একাই নিয়েছেন রাজস্থানের ৩ উইকেট। উইকেটগুলোও ছিলো রাজস্থানের সেরা তিন ব্যাটসম্যানেরই। চার সেঞ্চুরি দিয়ে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক জস বাটলার, রয়্যালস অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসন আর বিগ হিটার শিমরন হিটমায়ারের। ব্যাটিংয়ে নেমেও টাইটান্স অধিনায়ক ৩ চার আর ১ ছক্কায় ৩০ বলে খেলেন ৩৪ রানের ইনিংস।

আরও পড়ুন – রানাঘাটে ‘মন কি বাত’ এ উপস্থিত হয়ে শাসক দলকে নিশানা দিলীপের

ফাইনালে পিচ থেকে গুজরাটের বোলাররা যথেষ্ট সহায়তা আদায় করে নিতে পেরেছে।টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়া রাজস্থান প্রথম দুই ওভারে তোলে মাত্র ৭ রান।

গুজরাটের পেসার মোহাম্মদ শামির বলে চার মেরে যাশাসবি জয়সওয়াল রানের খাতা খোলেন অষ্টম বলে গিয়ে। ওই ওভারেই মারেন একটি ছক্কাও। পরের ওভারে ইয়াশ দয়ালকে আরেকটি ছক্কা মারেন। তবে বিধি বাম। এরপরই শাই কিশোরের হাতে ক্যাচ দিয়ে ১৬ বলে ২২ রান করেই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন জয়সওয়াল। তিন নাম্বারে নামা অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসন ফেরেন ১১ বলে মাত্র ১৪ রান করেই। ইনিংসের নবম ওভারে বোলিংয়ে এসে মাত্র এক রান দিয়েই প্রতিপক্ষ অধিনায়কের উইকেট তুলে নেন টাইটান্স অধিনায়ক পান্ডিয়া।

 

এরপর পরপর ২ উইকেট হারিয়ে আরও চাপে পড়ে রাজস্থান। ১০ বলে ২ রান করা দেবদূত পাডিক্কাল ফেরেন রশিদ খানের বলে ক্যাচ দিয়ে। টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক জস বাটলারকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য করান পান্ডিয়া। টুর্নামেন্টজুড়ে রাজস্থানের ভরসার প্রতীক বাটলার ফাইনালে এসে করেন ৩৫ বলে ৩৯ রান। এরপর হিটমায়ার আর অশ্বিনও ফেরেন দ্রুতই। শেষের দিকে রিয়ান পরাগ আর ট্রেন্ট বোল্টের দক্ষতায় কোনমতে ১৩০ রানের সম্মানজনক স্কো দাঁড় করায় রাজস্থান।

 

অধিনায়কের পাশাপাশি গুজরাটের হয়ে আফগান লেগ স্পিনার রশিদ খান দারুণ বোলিং উপহার দেন ফাইনালে। ৪ ওভারে মাত্র ১৮ রান দিয়ে নেনে ১ উইকেট। ১৩১ রানের মামুলি লক্ষ্য তারা করতে নেমে অবশ্য শুরুতেই দুই উইকেট হারায় গুজরাট। দ্বিতীয় ওভারে মাত্র ৯ রানের মাথাতেই ফিরে যান ঋদ্ধিমান সাহা। তিন নাম্বারে নামা ম্যাথু ওয়েডও ফেরেন ১০ বলে মাত্র ৮ রান করেই। ২ উইকেট হারিয়ে গুজরাটের সংগ্রহ মাত্র ২৩ রান।

 

এরপর তৃতীয় উইকেটে ৬৩ রানের জুটিতে দলকে এগিয়ে নেন শুভমান গিল আর পান্ডিয়া। দুজন মিলে ৬৩ রানের জুটি গড়ে দলকে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দিকেই এগিয়ে নিয়ে যায়। ৩০ বলে ৩৪ রান করে পান্ডিয়া বিদায় নিলেও ডেভিড মিলার আর শুভমান মিলে ২৯ বলে ৪৭ রানের জুটিতে দলকে চ্যাম্পিয়ন করেই মাঠ ছাড়েন। ৪৩ বলে ৩ চার ও এক ছক্কায় ৪৫ রান করে অপরাজিত থাকেন শুভমান গিল। আর মাত্র ১৯ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ৩২ রান করেন মিলার। ঘরের মাঠের সমর্থকদের মুখে হাসি ফুটিয়ে ৭ উইকেট আর ১১ বল হাতে রেখেই আইপিএলের নবাগত দল গুজরাট টাইটান্স শিরোপা উঁচিয়ে ধরে।

 

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

রাজস্থান রয়্যালস: ২০ ওভারে ১৩০/৯ (বাটলার ৩৯, জয়সওয়াল ২২, পরাগ ১৫, স্যামসন ১৪; পান্ডিয়া ৪-০-১৭-৩, শামি ৪-০-৩৩-১, কিশোর ২-০-২০-২, রশিদ ৪-০-১৮-১)

গুজরাট টাইটান্স: ১৮.১ ওভারে ১৩৩/৩ (শুভমান ৪৫*, পান্ডিয়া ৩৪, মিলার ৩২*; বোল্ট ৪-১-১৪-১, প্রসিধ ৪-০-৪০-১)

ফলাফল: গুজরাট টাইটান্স ৭ উইকেটে জয়ী হয়ে আইপিএলের ১৫তম আসরের চ্যাম্পিয়ন

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top