বানারহাট স্বাস্থ্যকেন্দ্র কে গ্রামীন হাসপাতালে উন্নতিকরনের দাবি উঠেছে সব মহলে। নতুন ব্লক হিসেবে বানারহাট কে ঘোষণা করার পর বানারহাট স্বাস্থ্যকেন্দ্র কে গ্রামীন হাসপাতালে উন্নতিকরনের দাবি উঠেছে সব মহলে। বর্তমানে সু স্বাস্থ্যকেন্দ্র পর্যায়ের একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ওপর নির্ভরশীল বানারহাট শহর ও সংলগ্ন প্রায় ২২ টি চা শ্রমিকেরা। মাত্র ১০ শয্যা বিশিষ্ট এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিকাঠামোর অভাবে বহু মানুষ চিকিৎসা ব্যবস্থা থেকে বঞ্চিত হয়ে থাকেন। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসক রয়েছেন মাত্র ২ জন ।
যে কারনে বাধ্য হয়েই তাদের ছুটতে হয় বানারহাট শহর থেকে প্রায় ২৮ কিমি দূরে ধূপগুড়ি বা ২৬ কিমি দূরে বীরপাড়ায়। বানারহাটের সু স্বাস্থ্যকেন্দ্র কে যদি গ্রামীন হাসপাতালে উন্নীত করা যায় তাহলে বানারহাট সহ পার্শ্ববর্তী এলাকার বাসিন্দারাও উপকৃত হবেন। তাই নতুন ব্লক হিসবে বানারহাটের আত্মপ্রকাশের পর বানারহাট স্বাস্থ্যকেন্দ্র কে গ্রামীন হাসপাতালে উন্নতিকরনের দাবিতে সরব হয়েছেন শাসক –বিরোধী থেকে শুরু করে সাধারন মানুষ।
বর্তমানে বানারহাট সু-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মাত্র ১০ টি শয্যার ব্যবস্থা রয়েছে। চিকিৎসক রয়েছেন মাত্র দুজন, নার্স-৪ জন, টেকনিশিয়ান ও সুইপার মিলিয়ে রয়েছে ৪ জন। শয্যা ও চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীর সংখ্যা কোনটিই চাহিদা অনুযায়ী মানানসই নয় বলে দাবি বাসিন্দারাদের। এছাড়া এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রাচীর গুলির অনেকাংশে না থাকায় ও কোন নিরাপত্তারক্ষী না থাকায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এসব সমস্যা থাকতেও মায়েদের প্রসব সংক্রান্ত চিকিৎসার ক্ষেত্রে যথেষ্ট নামডাক রয়েছে বানারহাট সু স্বাস্থ্যকেন্দ্রের। বর্তমানে শুধু সুগার, প্রেসার, টিবি ও ম্যালেরিয়া টেস্ট হয় এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্বাস্থ্যকর্মী জানান, ‘ বানারহাট স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রচুর রোগী চিকিৎসার জন্য আসেন। কিন্তু এখানে কর্মীর অভাবে সাধারন মানুষদের ভুগতে হয়। ’
বানারহাটের সমাজসেবী শৈবাল দাশগুপ্ত বলেন, ‘ নতুন ব্লক হিসেবে আত্মপ্রকাশ পেয়েছে বানারহাট। তাই এখানকার স্বাস্থ্যকেন্দ্র কেউ গ্রামীন হাসপাতালের পর্যায়ে উন্নীত করা উচিৎ। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বর্তমান অবস্থা পুরো ব্লক এলাকার চাপ সামলানোর মত নয়। সরকার যত তাড়াতাড়ি এটিকে গ্রামীন হাসপাতাল করবে , মানুষ ততটাই উপকৃত হবেন। ’ স্থানীয় চিকিৎসক ডাঃ পার্থ প্রতিম জানান, ‘ বানারহাটের স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির ওপর পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন চা বাগানের শ্রমিকেরা নির্ভরশীল। দারিদ্র শ্রেণীর নীচে বসবাস করার তাদের হাতের মুঠোয় চিকিৎসা পরিসেবা পৌঁছে দেওয়া সরকারের কর্তব্য বলে মনে করি। ’
আরও পড়ুন – রায়দিঘীতে পুকুর থেকে উদ্ধার কুমির
তৃণমূলের বানারহাট ব্লক সভাপতি সাগর গুরুং বলেন, ‘ বানারহাট ব্লক পর্যায়ে উন্নীত হওয়ার পর স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিকে গ্রামীন হাসপাতালে উন্নীত করার প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা দলীয় ভাবে রাজ্য স্তর পর্যন্ত এই দাবি জানিয়েছি । আশা রাখি সরকার দ্রুত এই বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহন করবেন ।’ বানারহাট পঞ্চায়েত সমিতির বিজেপি সদস্য পুনিতা ওঁরাও জানান, ‘ বানারহাট সু স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি চিকিৎসকের ও স্বাস্থ্যকর্মীর অভাব সহ নিরাপত্তার দিক থেকে পুরোপুরি বঞ্চিত। চা বাগানের মানুষের স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে সরকারের উচিৎ দ্রুত এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিকে গ্রামীন হাসপাতালে উন্নীত করা’।
এই বিষয়ে জলপাইগুড়ির মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ অসীম হালদার কে ফোন করা হলে তিনি এই বিষয়ে সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খুলতে চাননি। যদিও রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণী কল্যান দপ্তরের মন্ত্রী বুলু চিকবড়াইক এই বিষয়ে স্বাস্থ্য দপ্তরের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দিয়েছেন।