দিল্লি – যে হাত একদিন মেয়ের স্বপ্নপূরণে আড়াই কোটি টাকা ব্যয় করেছিল, সেই হাতই এক সকালে ট্রিগার টিপে নিল তার প্রাণ। গুরুগ্রামের হরিয়ানায় টেনিস খেলোয়াড় রাধিকা যাদব হত্যাকাণ্ডে উঠে আসছে এক মর্মান্তিক পারিবারিক ট্র্যাজেডি, যেখানে স্বপ্ন, সামাজিক চাপ এবং মানসিক অস্থিরতা মিলেমিশে তৈরি করেছে এক অন্ধকার পরিণতি।
অভিযুক্ত বাবা দীপক যাদব পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, গত ১৫ দিন ধরে তিনি ঘুমাতে পারছিলেন না, থাকতেন চরম মানসিক অস্থিরতায়। মেয়ের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ যেন তার নিজস্ব অপূর্ণতা ও সমাজের তিরস্কারের ছায়া হয়ে উঠেছিল। লোকের মন্তব্য—”মেয়ের আয়ে চলছে বাবার সংসার”—কুরে কুরে খাচ্ছিল দীপককে।
এই যন্ত্রণার চাপেই একসময় দীপক রাধিকাকে সোশ্যাল মিডিয়া ছেড়ে দিতে বলেন, এবং বারবার অনুরোধ করতে থাকেন যেন সে তার টেনিস একাডেমি বন্ধ করে। অথচ রাধিকা তাকে বোঝাতেন, “আপনি আমার জন্য আড়াই কোটি টাকা খরচ করেছেন। আমি সেই টাকা বৃথা যেতে দেব না। শিশুদের প্রশিক্ষণ দিয়ে নিজের প্রতিভা দিয়ে আমি সেই অর্থের মর্যাদা রাখব।”
কিন্তু সেই বিশ্বাস, ভালোবাসা এবং ভবিষ্যতের আশ্বাসকেও চাপা পড়তে হল ট্রিগারের শব্দে।
শুক্রবার সকালে, যখন রাধিকা রান্নাঘরে বাবার জন্য নাস্তা বানাচ্ছিলেন, তখনই দীপক তার লাইসেন্সধারী রিভলভার থেকে মেয়ের পিঠে গুলি চালান—টানা তিনবার। রক্তাক্ত রাধিকাকে হাসপাতালে নেওয়া হলেও তাঁকে আর বাঁচানো যায়নি।
রাধিকার ঘর থেকে পুলিশ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ আলামত সংগ্রহ করেছে, এমনকি উদ্ধার হয়েছে জীবন্ত কার্তুজও। এই হৃদয়বিদারক ঘটনা আবারও তুলে ধরছে পারিবারিক মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা এবং নারী সাফল্যের প্রতি সমাজের সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গির প্রশ্ন।
