বাম আমলের বিতর্কিত বেআইনী বহুতল মার্কেট কমপ্লেক্সের নির্মানে স্থগিতাদেশ দিলেন গৌতম দেব

বাম আমলের বিতর্কিত বেআইনী বহুতল মার্কেট কমপ্লেক্সের নির্মানে স্থগিতাদেশ দিলেন গৌতম দেব

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram

বাম আমলের শিলিগুড়ির বিতর্কিত বেআইনী বহুতল মার্কেট কমপ্লেক্সের নির্মান স্থগিতের নির্দেশ দিলেন মেয়র গৌতম দেব। শনিবার থেকে নির্মাণ কাজ বন্ধের নির্দেশ মেয়রের। ১৮বছর আগে শহরের কেন্দ্রে বহুতল ভবন নির্মাণের বেআইনী অনুমোদন ঘিরে অশোক ভট্টাচার্যের ঐতিহাসিক ভুল সিদ্ধান্তের জের ভয়ঙ্কর হয়ে মাথাচাড়া দিয়েছে বর্তমান শিলিগুড়িতে।

 

বিগত ছয়মাস ধরে ফের শহরের কেন্দ্রে বিধান রোডের বহুচর্চিত বেআইনি নির্মাণের কাজ চলছিল প্রোমোটারের নির্দেশে। সালটা ২০০৪ লাল দূর্গের সেসময় শিলিগুড়ি শহরের কেন্দ্র বিধান রোডে রেলের জমি হস্তান্তর করে শিলিগুড়ি জলাপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এর তৎকালীন চেয়ারম্যান অশোক ভট্টাচার্য্য ও বামেদের হাতে থাকা পুরসভা সম্পূর্ণ অবৈধ বহুতল মার্কেট কমপ্লেক্স নির্মাণের অনুমোদন দেন। বেআইনী নির্মাণের একটা অংশের ছাদ ভেঙে পড়ে সেসময়তে মৃত্যু হয় এক শ্রমিকের।

 

শুক্রবার প্রায় দুই দশক পর শিলিগুড়ির পুরনিগমের বোর্ড বৈঠক সভার শীততাপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ উত্তপ্ত হয়ে উঠলো সেই অবৈধ বহুতল নির্মাণকে কেন্দ্র করে। এদিন শিলিগুড়ি পুরোনিগমের ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃনমূল কাউন্সিলর রঞ্জন শীল শর্মা শহরের বেআইনি নির্মাণ প্রসঙ্গ তুলে বলেন কমিউনিস্ট পার্টি ভয়ঙ্কর ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে শহরের কেন্দ্রে পার্কিংয়ের জায়গা রাতারাতি বেআইনিভাবে মার্কেট কমপ্লেক্স তৈরির জন্য অনুমোদন পাশ করে। এই বিল্ডিং শিলিগুড়ির মানুষকে প্রতারণার প্রতিচ্ছবি হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে।

 

ভবনের ৫০% পার্কিং এবং বাকি অংশ বাণিজ্যিক ভবনের কথা বলা হলেও বামেরা শিলিগুড়ির মানুষকে প্রতারণা করে সম্পূর্ণ অংশ বাণিজ্যিক বহুতলের প্ল্যান পাশ করেন। ওই নির্মীয়মান বিল্ডিংয়ের ছাদ ভেঙে একজন শ্রমিকের মৃত্যু হয়। তবে রাজ্যে তৃনমূল সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর ২০১২ সালে একটি জয়েন্ট সার্ভে করা হয়। রঞ্জন বাবু বলেন ওই জয়েন্ট সার্ভেতে তিনি নিজে এবং দুলাল দত্ত ছিলেন। সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে বিল্ডিং তৈরি করা হচ্ছে সে রিপোর্ট তারা রাজ্য সরকারকে পেশ করে। রঞ্জন বাবু জানান ওই বহুতল নির্মীয়মান মার্কেট কমপ্লেক্স সম্পূর্ণটাই অবৈধ পরিকল্পনাহীন ত্রুটিপূর্ন পরিকাঠামো।

 

নির্মাণের সামনে ও পেছনে কোথায় নির্ধারিত রাস্তা থেকে চার ও পাঁচ মিটারের ব্যবধান রাখা হয়নি।ওই বিল্ডিংয়ের কোথাও পার্কিংয়ের জায়গা, সোয়ারেজ নিকাশি নালার ওয়াটার ট্যাঙ্ক এমনকি গার্ডের থাকার ব্যবস্থা পর্যন্ত নেই। তিনি অভিযোগ তুলে বলেন বিগত কয়েক মাস ধরে বিধান রোডের মত ব্যস্ততম রাস্তায় হাই ড্রেনের ওপর পিলার করে কাজ চলছে। ওই বহুতল সম্পূর্ণ আইন বিরুদ্ধ। বেআইনীভাবে রাতের অন্ধকারে ১২টার পর নির্মাণ কাজ চলছে সেখানে। ঢোকার রাস্তা আটকে দূর্গম করে রাখা হয়েছে। ওই নির্মীয়মান থেকে শ্রমিকদের বাইরে বেরোনো নিষিদ্ধ।

 

অনুমোদনহীন ভাবে কোন সাহসে প্রোমোটার কাজটা চালিয়ে যাচ্ছে তা পুরো নিগমের দেখা উচিত। কিছু প্রভাবশালীরাই প্রোমোটারদের সাহস যোগাচ্ছে বলেও মেয়রের কাছে অভিযোগ তোলেন তিনি।অন্য বহুতল থেকে ভিডিও করে মেয়রকে পাঠিয়েছি বলে সভাকক্ষেই জানান তিনি। ওই নির্মীয়মানের সাবলিস বাতিল করে ওই বহুতলকে মানুষের পার্কিংয়ের জন্য পুরোনিগমকে গড়ে তোলার জন্য কাউন্সিলর বোর্ড সভায় আবেদন জানান। বেআইনি নির্মাণের বিষয়টি সামনে আসতেই মেয়র ওই বেআইনি বাণিজ্যিক নির্মাণকাজ স্থগিতের নির্দেশ দেন।

আর ও পড়ুন    ভিটেমাটিতে ফিরে এলো সাতটি পরিবার

গৌতম দেব ঘোষণা করে বলেন আগামীকাল থেকে নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকবে। বিল্ডিং সেলের পুর নিগমের ইঞ্জিনিয়ারেদের একটি পর্যবেক্ষণ কমিটি সার্ভে করবে। পনেরো থেকে এক মাসের মধ্যে তার নকশা অবস্থান পর্যবেক্ষণ করা হবে। এসজেডিএও বিষয়টি দেখবে। মেয়র বলেন শিলিগুড়ি শহরের তিন থেকে চারটি জায়গা আদালত ভবন, পিসি মিওল বাসস্ট্যান্ড, হায়দায় পাড়া বাজারের ত্রুটিপূর্ণ বিল্ডিং পরিকল্পনার জেরে শহরে যানজটে নাকাল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ৩৪ বছরের অপদার্থতা বয়ে বেড়াতে হচ্ছে। শিলিগুড়ি বামেদের মুন্সি নুরুল ইসলাম সভাকক্ষে দাঁড়িয়ে বলেন অশোক বাবু এবং আমি নিজে স্বীকার করেছি এটি ঐতিহাসিক ভুল সিদ্ধান্ত ছিল।

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top