প্রধানমন্ত্রী – বারাণসীর এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশের অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ও পণ্যকে সমর্থন করার উপর জোর দিলেন। তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষিতে ভারতের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে হলে স্বদেশী আন্দোলনের গুরুত্ব আরও বাড়াতে হবে। এই আহ্বান এমন সময়ে এল, যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রায় ৭০টি দেশের পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যদিও মোদী সরাসরি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাম নেননি, তাঁর বার্তা ছিল অত্যন্ত স্পষ্ট।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হতে চলেছে, তাই আমাদের নিজেদের অর্থনৈতিক স্বার্থের প্রতি সজাগ থাকতে হবে। কৃষকদের স্বার্থ, ক্ষুদ্র শিল্প এবং যুবসমাজের কর্মসংস্থান আমাদের কাছে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।”
সম্প্রতি মর্গান স্ট্যানলির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৮ সালের মধ্যে ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হবে এবং ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশের জিডিপি ১০.৬ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে পারে। মোদী জানান, দেশের অর্থনীতি দৃঢ় গতিতে এগিয়ে চলেছে। বর্তমানে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, রপ্তানি রেকর্ড উচ্চতায় এবং গ্রামীণ অর্থনীতিও ক্রমশ উন্নত হচ্ছে।
অর্থ মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই মাসে জিএসটি সংগ্রহ ৭.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১,৯৫,৭৩৫ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। এটি টানা সপ্তম মাস, যেখানে জিএসটি সংগ্রহ ১.৮ লক্ষ কোটি টাকার উপরে রয়েছে। এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত সংগ্রহ বেড়েছে ১০.৭ শতাংশ।
মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসায় স্বস্তি পেয়েছেন সাধারণ মানুষ। জুন মাসে ভোক্তা মূল্য সূচক (সিপিআই) মুদ্রাস্ফীতি ২.১০ শতাংশে নেমে এসেছে, যা ২০১৯ সালের জানুয়ারির পর সর্বনিম্ন। খাদ্যপণ্যের দাম কমার ফলে এই হ্রাস ঘটেছে। নাবার্ডের সমীক্ষা বলছে, ৭৬.৬ শতাংশ গ্রামীণ পরিবারের ভোগব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে, যা গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নতির ইঙ্গিত দিচ্ছে।
চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে (এপ্রিল-জুন) ভারতের রপ্তানি হয়েছে ২১০.৩১ বিলিয়ন ডলার, যা ৫.৯৪ শতাংশের বৃদ্ধি। আমদানি বেড়েছে ৪.৩৮ শতাংশ, ফলে বাণিজ্য ঘাটতি ৯.৪ শতাংশ কমেছে। রপ্তানি বৃদ্ধির পেছনে সরকারের ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ সহ একাধিক নীতির ভূমিকা উল্লেখযোগ্য।
