বিএসএফের গুলিতে মৃত যুবকের বাড়িতে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী। গীতালদহে বিএসএফের গুলিতে মৃত যুবকের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের লোকেদের সাথে কথা বললেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ সহ তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। রবিবার বেলা বারোটা নাগাদ মন্ত্রী সীমান্ত ঐ গ্রামে গেলে তার সঙ্গে ছিলেন এলাকার বিধায়ক জগদীশ চন্দ্র বর্মা বসুনিয়া, তৃণমূলের জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক জেলা চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মন, জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ নুর আলম হোসেন , স্থানীয় তৃণমূল নেতা আনারুল হক বাবু, অভিজিৎ রায় প্রমূখ।
এদিন মন্ত্রী উদয়ন গুহ ,বিধায়ক জগদীশ বসুনিয়া তৃণমূলের জেলা সভাপতি অভিজিৎ দেব ভৌমিক ছাড়াও চেয়ারম্যান সহ সকলেই নিহত প্রেম বর্মনের পরিবারের পাশে থাকার বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি বিএসএফ ও কেন্দ্রীয় সরকারকে নানানভাবে তুলোধোনা করেন। তৃণমূলের প্রতিনিধি দল এদিন ওই পরিবারের লোকেদের সাথে গিয়ে দেখা করার পাশাপাশি ঘটনাস্থল ভারবান্দা এলাকা পরিদর্শন করেন। কিভাবে এই ঘটনা ঘটেছে সেটাও পুলিশের কাছে জেনে নেন। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব মন্ত্রী ও বিধায়ককে জানান বিএসএফ নিজেদের সীমানাও অতিক্রম করে গ্রামের মধ্যে এসে প্রেম বর্মনকে গুলি করে খুন করেছে।
তৃণমূলের পক্ষ থেকে এদিন ওই পরিবারকে নানাভাবে সাহায্য করা হয়। এদিন মন্ত্রীয় সহ তৃণমূল নেতৃত্ব নিহত প্রেম বর্মনের বাড়িতে গেলে মৃত যুবকের মা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তাদের সামনে। শুধু তাই নয় বারেবারে মূর্ছা যাচ্ছিলেন তিনি। সাথে সাথে মন্ত্রী ও পরিবারের লোকদের মুখে জল ছিটিয়ে চামচ দিয়ে জ্ঞান ফেলানোর ব্যবস্থা করার কথা বলেন। এদিকে ঘটনার পর মৃত প্রেম বর্মনের পরিবারের পক্ষ থেকে কাকা সুনীল বর্মন পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান বিএসএফের বিরুদ্ধে।
এদিন মন্ত্রী উদয়ন গুহ জানান বিএসএফ বানানো হয়েছিল পাকিস্তান সীমান্ত পাহারা দেওয়ার উদ্দেশ্যে। অথচ এখন বিএসএফকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে রাজনৈতিক অভিসন্ধি চরিতার্থ করার জন্য কাজে লাগাচ্ছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। তিনি আরো জানান, যদি ছেলেটি অভিযুক্ত হয় তাহলে বিএসএফ চাইলেই তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ প্রশাসনের হাতে তুলে দিতে পারতো কিন্তু সেটা না করে তারা প্রেম বর্মনকে নির্মমভাবে খুন করেছে।
একই সাথে মন্ত্রী জানান যদি নামটি প্রেম বর্মন না হয়ে অন্য কোন সম্প্রদায়ের হত তাহলে এতক্ষণে বিজেপি ও বিএসএফ সকলেই ছেলেটিকে চোরা চালানকারী ও অনুপ্রবেশকারী বলে চালিয়ে দিত। এই বিএসএফরা অন্যান্য রাজ্য থেকে আসে যেখানে বিজেপি শাসিত রাজ্য। সেখান থেকে এ রাজ্যে আসার সময় তাদেরকে নানা ভাবে বলে দেওয়া হচ্ছে কিভাবে তৃণমূলীদেরকে আক্রমণ করতে হবে।
একই সাথে তিনি কোচবিহার জেলার বিজেপি বিধায়কদের চ্যালেঞ্জ দেন সাহস থাকলে একবার এসে নিহত প্রেম বর্মনের পরিবারের সদস্যদের মুখোমুখি দাঁড়ান তাহলেই বুঝবেন কতটা কষ্ট কতটা যন্ত্রণা। মন্ত্রী বলেন, যদি প্রেম বর্মন যদি বিএসএফকে আক্রমণ করত তাহলে যেখানে ঘটনা ঘটেছে সেখানে জমিতে কোনরকম চিহ্ন নেই। জমিতে তামাক গাছ গুলো কোথাও নষ্ট হয়নি। সম্পূর্ণ পরিকল্পনামাফিক এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
বিধায়ক জগদীশ চন্দ্র বর্মা বসুনিয়া জানান, সিতাই বিধানসভার বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় গত কয়েক মাসে ইতিমধ্যে পাঁচ থেকে ছয় জন বিএসএফের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে।বিএসএফের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন যেমন রয়েছে তেমনি আগামী বিধানসভার অধিবেশনে বিএসএফের এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তোলা হবে।
এদিকে বিজেপির পক্ষ থেকে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর বক্তব্যকে কটাক্ষ করা হয়েছে। বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি সুকুমার রায় বলেন, যারা দেশকে নানা ভাবে রক্ষা করে চলছে তাদের বিরুদ্ধে নানাভাবে আক্রমণ করছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। সে আক্রমণের সীমা অতিক্রম করছে মন্ত্রী উদয়ন গুহ।