বিজেপি নেত্রীর বাড়িতে সিবিআই হানার অভিযোগ। অভিযোগ অস্বীকার নেত্রীর। ঘটনায় চাপান উতর শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ি ব্লকে সিবিআই এর দুই সদস্যের দল আসে। এরপর তারা দিনভর একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক সহ বিভিন্ন যায়গায় হানা দেয়। বিভিন্ন যায়গায় তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু তথ্য যোগার করেছে বলে জানা গেছে। শেষে সন্ধ্যাবেলায় তারা ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে একটি কালো ব্যাগ নিয়ে চলে যায়।
জানা গেছে এদিন সিবিআই এর দলটি ব্যাঙ্কের পাশাপাশি ময়নাগুড়ি রেজিষ্ট্রি অফিসেও যায়। সেখান থেকেও তারা তথ্য সংগ্রহ করে। এরপর তারা ময়নাগুড়ির বাসিন্দা মোহিত রায় ও তার স্ত্রী বিজেপি নেত্রী সুজাতা রায়কেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। যদিও বিষয়টি অস্বীকার করেছেন বিজেপি নেত্রী। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে জেলা তৃণমূল আসরে নেমেছে। তাদের অভিযোগ এই দম্পতি একসময় চিট ফান্ডের মালিক ছিল। চিট ফান্ড দুর্নীতিতে বহু কোটি টাকা অসৎ উপায়ে উপার্জন করেছে। বেআইনি ভাবে উপার্জিত টাকা ব্যাবহার করে জমি কেনাবেচা হয়েছে বলে অভিযোগ তৃনমূলের।
সুত্রের খবরে জানা গেছে বুধবার কলকাতা থেকে সিবিআই দুই সদস্যের দলটি উত্তরবঙ্গে আসে। কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারের বিভিন্ন যায়গা ঘুরে সিবিআই আধিকারিকরা বৃহস্পতিবার বেলার দিকে ময়নাগুড়ি আসেন। প্রথমে তারা মোহিত রায়ের বাড়িতে যান। পরে সেখান থেকে ময়নাগুড়ির একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে যান তদন্তকারী অফিসারেরা। এরপর বিকেলে আধিকারিকেরা ব্যাঙ্ক থেকে বেড়িয়ে রেজেষ্ট্রি অফিসে যান। সেখানে গিয়ে অফিসের কর্মী ও আধিকারিকদের সাথে কথা বলে ফের তারা ব্যাঙ্কে চলে আসেন। এরপর সন্ধ্যা নাগাদ একটি কালো ব্যাগ নিয়ে ব্যাঙ্ক থেকে বেড়িয়ে যেতে দেখা যায় সিবিআই এর দলটিকে। তবে এদিন কি বিষয়ে তদন্ত তা নিয়ে প্রশ্ন করলে কোনও উত্তর দেননি সিবিআই আধিকারিকেরা।
পাশাপাশি ব্যাঙ্কের তরফেও কিছু বিবৃতি পাওয়া যায়নি। এই খবর চাউর হতেই আসরে নেমেছে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা।ঘটনায় যুব তৃণমূল জেলা সভাপতি সৈকত চ্যাটার্জী বলেন, সিবিআই এর বোধহয় শুভ বুদ্ধির উদয় হয়েছে। তাই তারা বিজেপি নেত্রীর বাড়িতে হানা দিয়েছে। আমার প্রশ্ন সিবিআই এদের গ্রেফতার করলোনা কেনো। বিজেপি নেত্রী সুজাতা রায় এবং তার স্বামী মোহিত রায় এরা চিট ফান্ড চালাতেন। পাশাপাশি এরা শিক্ষা দুর্নীতির সাথেও জড়িত। এরা অসৎ উপায়ে বহু কোটি টাকা উপার্জন করেছে।
সিবিআই এর এদের গ্রেফতার করা উচিৎ ছিল। আসলে এগুলো সব আই ওয়াশ। সিবিআই বিজেপিকে কিছু করবেনা। অথচ গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মন্ডেলের বিরুদ্ধে একটাও অভিযোগ কোনও থানায় নেই। তারপরও তাকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে সিবিআই। আসলে সিবিআই আর ইডি এরা বিজেপির উইং। যার বিরুদ্ধে অভিযোগ সেই বিজেপি নেত্রী সুজাতা রায় তার বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার বাড়িতে আদৌ সিবিআই আসেনি। আমাকে বা আমার স্বামীকে সিবিআই জেরাও করেনি। আসলে আমি বিজেপি করি। আমাকে দমিয়ে দেওয়ার জন্য এইসব রটিয়ে বেড়াচ্ছে তৃনমূল।
অপরদিকে বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা কমিটির সাধারন সম্পাদক চন্দন বর্মন টেলিফোনে জানান বিজেপি তৃনমূল আমরা বুঝিনা। যেই অভিযোগ উঠেছে তা যদি প্রমানিত হয় তবে তাকে সাজা পেতেই হবে। তবে ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলে যতই চাপান উতর হোক ওয়াকিবহাল মহলের ধারনা নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার ঘটনা উত্তরবঙ্গের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে আছে। বিজেপি নেত্রীকে দিয়ে তদন্ত শুরু করলো।