পরিযায়ী অতিথিদের নিরাপত্তা সঙ্গে বিন্দুমাত্র সমঝোতা নয়! ব্যারেজে হুল্লোড় করতে আসা বহিরাগতদের সাফ সে বার্তা দিচ্ছে গ্রামবাসীরাই। শনিবার শিলিগুড়ি ফুলবাড়ি ব্যারেজ সংলগ্ন এলাকার স্থানীয় মানুষ, মৎস জীবী ও স্থানীয় প্রশাসনকে নিয়ে পরিযায়ীদের বাঁচাতে আলোচনা ও সতর্কতামূলক পোস্টার সাটিয়ে সচেতন করা হয়।
উত্তরের মনোরম আবহাওয়ার টানে দূর আকাশ থেকে শীতকালীন সময়ে নিরালায় সময় কাটাতে ও নিজেদের প্রজনন শৈলী সারতে শিলিগুড়ি অদূরে ফুলবাড়ী ব্যারেজে বিরলতম প্রজাতীর পরিযায়ীরা আস্তানা গড়ে।পক্ষী প্রেমীদের পরিসংখ্যান অনুযায়ী শিলিগুড়ি অদূরে ফুলবাড়ী ব্যারেজে বিগত বছরে পৃথিবীর বিরলতম প্রজাতীর পরিযায়ী পাখির আগমনের সংখ্যা অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিশ্বের মধ্যে বিরলতম ইয়েলো বিস্টেড বানটিং পাখিটির তুলনামূলক ভাবে অধিক উপস্থিতি লক্ষ্য করেছেন পরিবেশ বিদেরা। বিশ্বের মধ্যে ২০০০টি রয়েছে ইয়েলো বানটিং। যার মধ্যে ফুলবাড়ীর ব্যারেজে ১০০টির মতো লক্ষ্য করা যায় কোভিডেরকালীন মরশুমে বলে জানাচ্ছেন পাখি প্রেমী দেবজ্যোতি চক্রবর্তী।
কোভিডের জেরে মনুষ্যকূল হাঁপিয়ে উঠলেও মানব দংশনের আঘাত ঝেড়ে অনেকটাই সেরে উঠেছে ভূগোলক। পাহাড় কন্যার পদতলে থাকা শিলিগুড়ির জলবায়ুর ক্ষেত্রেও একটা সুখকর পরিবর্তন লক্ষ্য করা গিয়েছে। আর এর জেরেই এবারে কিছুটা আগেভাগে এসেছে পরিযায়ী পাখিরা। এদিন পাখি প্রেমী সংগঠনের তরফে পরিযায়ী পাখিদের নিরাপত্তা নিয়ে স্থানীয় ও প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করা হয়।
পার্ক জুড়ে সচেতনতা মূলক প্রচারে বহিরাগতরা যাতে উচ্চ স্বরে মাইক, প্লাস্টিক ও থার্মোকলের ব্যবহার না করেন তার আবেদন জানানো হয়। ফুলবাড়ী ব্যারেজ সংলগ্ন এলাকায় বিগত কয়েক বছর যাবৎ পরিযায়ী পাখিদের তাদের পছন্দের নিরালা নির্জনতা উপহার দিয়ে চোরাশিকারিদের হাত থেকে পরিযায়ী পাখিদের নিরাপত্তা দিতে কাজ করে চলছে অপটোপিক।
কয়েক বছরে হুল্লোড় ও বহিরাগত পিকনিক সম্পূর্ণ বন্ধ করা হয়েছে। আর এতে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব নিয়েছে এলাকার বাসিন্দারাই। এদিনও এবারে শীতের সূচনা লগ্নেই এলাকার স্থানীয় ও প্রশাসনিক আধিকারিকদের উপস্থিতিতে সকলকে বলা হয় তারস্বরে মাইক প্লাস্টিক থার্মোকলের ব্যবহার এই এলাকায় বন্ধ করা হয়েছে।
আর ও পড়ুন রাতের অন্ধকারে ক্যানিংয়ে শুটআউট, জখম তৃণমূল নেতা
এদিনের আলোচনা সভায় এলাকার বিডিও সনজু রায়, দার্জিলিং জেলা পুলিশের ডিএসপি অচিন্ত্য গুপ্ত ও মৎস্যজীবীদের সতর্ক করা হয়। যাতে কোনোভাবেই পরিযায়ী পাখিদের কাছাকাছি গিয়ে বিব্রত করা না হয়। মৎসজীবীদের সচেতন করা হয় পরিযায়ী পাখিদের আস্তানা থেকে নির্দিষ্ট কয়েক মিটারের দূরত্ব রেখে যাতে তারা কাজ করেন।
এদিকে অপটোপিকের লাগাতার কয়েক বছরের চেষ্টায় হয়েছেও বেশ আমূল পরিবর্তন আনা সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে যথেষ্ট সচেতন স্থানীয়রাই। বিগত বছরে ৬২টি প্রজাতির ৫০০০-৬০০০পরিযায়ী পাখির আগমন ঘটেছিল।