নিজস্ব সংবাদদাতাবীরভূম,৭ই আগস্ট : গত শনিবার সকাল বেলায় সিউড়ির তিন নাম্বার ওয়ার্ডের বাসিন্দা সেখ শামীমের মৃতদেহ উদ্ধার হয় সিউড়ির পাইকপাড়া থেকে। হঠাৎ করে এমন ভাবে শেখ শামীমের মৃতদেহ উদ্ধার ঘিরে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। মৃত শেখ শামীমের পরিবার প্রথম থেকেই দাবি করে, খুন করে তার দেহ এখানে ফেলে এগিয়ে গিয়েছে কেউ।
শুরু হয় পুলিশি তদন্ত। যেখানে মৃতদেহ পড়েছিল তার পাশাপাশি এক ব্যবসায়ীর বাড়ির সিসিটিভির ছবি দেখে সোমবার রাতে সিউড়ি থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করে তিনজনকে। গ্রেফতার হওয়া তিনজন হলেন সোনাতোর পাড়ার বিবি খাতুন, বেবি খাতুনের মা জাহানারা খাতুন এবং বেবি খাতুনের ভাই। কিন্তু এই ঘটনা কেন ঘটানো হয়েছিল, তার বিষয়ে কাল পর্যন্ত কিভাবে কিছু পরিষ্কার হয়নি।
আজ শেখ শামীমের মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় সিউড়ি থানার পুলিশ ওই তিন অভিযুক্তকে নিয়ে পুনর্নির্মাণ করেন। আর পুননির্মাণের সময় বেবী খাতুন জানান, শেখ শামীমকে খুন করা হয়নি সে আত্মহত্যা করেছে। তারপর প্রতিবেশীদের চক্ষু বেড়াতে রাতের অন্ধকারে দেবো পাইকপাড়ায় ফেলে আসা হয়।
কিন্তু প্রশ্ন হল, যদি শেখ শামীম আত্মহত্যায় করে থাকেন, তাহলে এভাবে দেহ লোপাটের উদ্দেশ্য কি! ঘটনার পুনর্নির্মাণে জানা যায়, বিবি খাতুনের সাথে শেখ শামীমের বিবাহিত বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। এ নিয়ে তাদের পরিবারে প্রায় ঝামেলা লেগে থাকতো।
ঘটনার আগের দিন বেবি খাতুন কর্মসূত্রে একটি বেসরকারি স্কুলে যাওয়ার পর শেখ শামীম তার বাড়িতে এসে হাজির হয়। তারপর বেবি খাতুনের বাড়িতেই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে সে। বেবি খাতুন বাড়ি ফিরে এলে সমস্ত ঘটনা জানতে পারেন, তারপর সেদিন পাড়া প্রতিবেশীদের ভয়ে শামীমের দেহ বাড়িতে রেখে দেয়। তারপর রাত্রি হতেই দেহ লোপাট করার জন্য নেমে পড়েন বেবি খাতুনের ভাই ও তার মা। দেহ একটি ঠেলা ট্রলিতে করে বয়ে নিয়ে গিয়ে ফেলে দেওয়া হয় পাইক পাড়ার ওই স্থানে।
উপরিউক্ত পুনর্নির্মাণের সমস্ত ঘটনা বেবি খাতুনের বয়ান অনুযায়ী। যদিও সিউড়ি থানার পুলিশ শামীম শেখের দেহ উদ্ধারের ঘটনায় আরও খুঁটিনাটি খুঁজে বের করতে তদন্ত চালাচ্ছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে বেবি খাতুনের বয়ানই কি আসল সত্য, নাকি এই ঘটনার পিছনে লুকিয়ে রয়েছে আরও অন্য কিছু।