পূর্ব বর্ধমান – পূর্ব বর্ধমানের একটি বেসরকারি হাসপাতালে জন্ম নিল এক বিরল গঠনের শিশু। একটিমাত্র মাথা, কিন্তু চারটি হাত এবং চারটি পা-সহ জন্মানো এই শিশুর অবস্থা জন্মের পরই আশঙ্কাজনক হয়ে পড়ে এবং শেষমেশ তাকে বাঁচানো যায়নি।
নাদনঘাট থানার শাহাজাদপুর এলাকার এক অন্তঃসত্ত্বা মহিলার আল্ট্রাসোনোগ্রাফি পরীক্ষায় বিষয়টি ধরা পড়ে। শিশুটির জন্ম হয় শনিবার দুপুরে, অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে। অস্ত্রোপচার করেন হাসপাতালের সিনিয়র স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ কৃষ্ণপদ দাশ। তিনি জানান, গর্ভাবস্থা অব্যাহত থাকলে প্রসূতির জীবনও বিপন্ন হতে পারত। তাই ভ্রূণ ‘টার্মিনেট’ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
চিকিৎসকদের মতে, এই ধরনের শিশুর জন্ম বিরল ঘটনা। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ অরুণ সিং জানান, এ ধরনের অবস্থাকে চিকিৎসার পরিভাষায় বলে ‘ক্রেনিওপ্যাগাস’। এমন শিশুরা একটি ব্রেইন ও একটি মাথা নিয়ে জন্মায়, কিন্তু শরীর আংশিক যমজের মতো যুক্ত থাকে। প্রতি ২৫ লক্ষ শিশুর মধ্যে একটির এই অবস্থা হতে পারে।
আরেক শিশু বিশেষজ্ঞ ডাঃ শুভজিৎ ভট্টাচার্য জানান, অতীতে এমন ঘটনা ঘটলেও তা বিরল। একইসঙ্গে জানা গিয়েছে, শিশুটির মাথার পিছনে একটি টিউমারজাতীয় গঠন ছিল যা ঝুঁটির মতো ঝুলছিল।
উল্লেখ্য, এর আগে গত মে মাসে পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে জন্ম নিয়েছিল ‘মারমেইড সিনড্রোম’-এ আক্রান্ত একটি শিশু। কোমরের নিচ থেকে পা দুটি একত্রে যুক্ত থাকায়, তাকে দেখতে মৎস্যকন্যার মতো মনে হচ্ছিল। সেই শিশুটিকেও বাঁচানো যায়নি।
এই ধরনের জন্মবিকৃতি সম্পর্কে চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, নিকট আত্মীয়দের মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্ক, গর্ভাবস্থায় অযথা এক্সরে করা কিংবা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ গ্রহণ—এই সবই ঝুঁকির কারণ হতে পারে।
