বিশ্বের পর্যটন মানচিত্রে স্থান করতে চলেছে উত্তরের বাঁশের শিল্প ও কারুকার্য। মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প ভোরের আলোয় জুড়ছে আরও এক নয়া পালক। বিশ্বের পর্যটন মানচিত্রে স্থান করতে চলেছে উত্তরের বাঁশের শিল্প ও কারুকার্য। রাজ্য পর্যটন দপ্তর ও ফরেস্ট ডিপার্টমেন্ট করপোরেশনের যৌথ উদ্যোগে ৪৫লক্ষ টাকা অর্থ বরাদ্দে তৈরী হতে চলেছে ভোরের আলোয় ব্যাম্বু ইকো পার্ক। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের প্রকল্প ভোরের আলোয় তিস্তা কাঞ্চনঝঙ্গার সমন্বয়ে মনমুগ্ধকর পরিবেশকে সঙ্গী করেই আস্ত বাঁশ গ্রামে ঘুরে আসতে পারবেন পর্যটকেরা। গা ছমছমে বাঁশ বাগানের অনুভূতি থেকে বাঁশের বাঁশি, টুপি,চুলের কাটা এমন হরেক জিনিস নেড়েচেড়ে দেখতে পারবেন পর্যটকেরা।
মঙ্গলবার শিলিগুড়িতে সংবাদমাধ্যমের সম্মুখে পর্যটন দপ্তরের ডেপুটি ডিরেক্টর জ্যোতি ঘোষ বলেন রাজ্য সরকারের ভোরের আলো পর্যটন হাব হিসেবে বিশ্ব পর্যটন মানচিত্রে নিজ ছাপ রেখেছে। এবারে ভোরের আলোকে কেন্দ্র করেই উত্তরবঙ্গ ও উত্তরপূর্বের গ্রামীন পর্যটনকে ইকো ট্যুরিজম হিসেবে তুলে ধরতে বিভিন্ন প্রজাতির বাঁশ ও বাঁশজাত শিল্পকে পর্যটকদের সামনে আনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই ৪৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দে ব্যাম্বু সিটম প্রকল্পের কাজও শুরু করা হয়েছে। আগামী ২২এ জুনের মধ্যেই এই ব্যাম্বু পার্কের কাজ সম্পন্ন করে তা পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়ার টার্গেট নিয়ে এগোচ্ছে পর্যটন দপ্তর।
যেখানে শুধুমাত্র এরাজ্যের নয় উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন প্রজাতির বাঁশের সঙ্গে পর্যটকদের পরিচয় ঘটবে। লাকি ব্যাম্বুর মত টেবিলের কোনে স্থান পাওয়া গুল্ম প্রজাতির বাঁশ থেকে বৃহৎ বাঁশ ঝাড় অর্থাৎ আবহাওয়া, মাটির রকমফেরে বাঁশের বহুল প্রজাতিগত তারতম্য, তাদের বিজ্ঞানসম্মত নাম এবং কার্যকারিতা সংক্রান্ত বিষয়গুলি জানতে পারবেন পর্যটকেরা। হর্টি কালচার ও ফরেস্ট ডেভেলপমেন্ট করপোরেশনের সঙ্গে জিপিডব্লিউর মদতে এই কাজ করবে পর্যটন দপ্তর।
উত্তরবঙ্গের বাশেঁর তৈরি যাবতীয় আসবাবপত্র থেকে গ্রামীন ছোঁয়া রেখেই পুরো দুই একর এলাকা জুড়ে বাঁশ বাগানের রোমাঞ্চকর পরিবেশের মধ্য দিয়ে বাঁশের বাঁশি, চুলের কাটা, টুপি, থালা, বাটি গ্লাসের মতো হস্তশিল্প এবং উত্তরের সেইসব কুটির শিল্পীদের সঙ্গে সরাসরি পরিচয় ঘটবে পর্যটকদের। এতে উত্তরের বাঁশের কাজে নিযুক্ত শিল্পীদের আয়বৃদ্ধির পাশাপাশি তাদের হাতের কাজের কদর ছড়িয়ে পড়বে পর্যটন মানচিত্রে। হাতের শিল্প সামগ্রীর দেশ বিদেশের দর বাড়বে ও রপ্তানির দরজা খুলে যাবে। গাজলডোবা ভোরের আলোর প্রকল্পের এক অধিকর্তা জানান ইকো কটেজগুলির পেছনে বড় পরিসরের একটি জায়গার এটি তৈরি করা হচ্ছে। দুপাশে নানা প্রজাতির সারি সারি বাঁশ বাগানের পাশাপাশি মাথার ওপরেও বাঁশ গাছের ছাউনি থাকছে।
আর ও পড়ুন হনুমানের আতঙ্কে ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যু হল এক বৃদ্ধার
সবমিলিয়ে প্রকৃতি প্রেমীদের জন্য এ এক রোমাঞ্চকর অনুভূতি। ডেপুটি ডিটেক্টর বলেন নার্সারী সহ অন্যান্য কাজে এলাকার স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে নিযুক্ত করা হবে। এই কাজে পর্যটন দপ্তরের সঙ্গে বড় ভূমিকায় থাকছে গাজলডোবা ডেভেলপমেন্ট অথোরিটি, ফরেস্ট ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন সহ হর্টি কালচারও। ভোরের আলোর বাঁশের ইকো পার্ক রাজ্য পর্যটনের অগ্রগতির পাশাপাশি জীব বৈচিত্রের রক্ষার ক্ষেত্রে একটি বড় ভূমিকা নেবে। এলাকার স্বনির্ভর গোষ্ঠী, শিল্পী ও স্থানীয়দের এই প্রকল্পে নিযুক্তিকরনের পরিকল্পনা নিয়েই কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে ভোরের আলোয় ফুড কোড, ওয়েলনেস সেন্টার অর্থাৎ স্নিগ্ধ পরিবেশে যোগব্যায়াম সাধনা, মেডিটেশনের এক নিরবিচ্ছিন্ন জায়গা এবং সর্বপরি অপেক্ষা শেষে একটি এডভেঞ্চার পার্ক তৈরি হবে। কাঞ্চনঝঙ্ঘাকে সাক্ষী রেখে ওয়াল ক্লাইম্বিং, ওয়াকিং ট্রেইলে সহ বিনোদনের ব্যবস্থা থাকছে।