বিষ্ণুপুরের ঐতিহ্যবাহী রথযাত্রা । বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর মল্ল রাজাদের স্মৃতিবিজড়িত কত যে অনুষ্ঠান ছিল তা হয়তো আজকের বিষ্ণুপুর বাসি পুরোটাই ধরে রাখতে পারেনি। সেই সময়কার বিষ্ণুপুরে তিনটি ভাগে বিভক্ত ছিল ৮পাড়া রথ, ১১ পাড়ার রথ ও ২২ পাড়ার রথ এক পাড়ার সাথে অন্য পাড়ার দলাদলি, মধ্যেখানে টিনের প্রাচীর দিয়ে আলাদা করা হতো। প্রত্যেক পাড়ার নিজ নিজ রাস্তা দিয়ে ঠাকুর পেরোবে। এখন অবশ্য এর সাথে আরেকটি নতুন সংযোজন হয়েছে তা চৌধুরী বাড়ির রথ বাহাদুরগঞ্জে তাদের ও শোভাযাত্রা বের হয়।
তবে বিষ্ণুপুরের উল্টোরথের অনুষ্ঠান ছিল অনেকাংশেই বেশি এ বছর সোজা রথের আয়োজন করলেন পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে। সোজা রথের দিন সকাল আটটা নাগাদ বিষ্ণুপুর শহরের প্রশাসনিক ভবনের পাশে যে শহরের মুক্ত মঞ্চটি রয়েছে সেখান থেকেই শোভাযাত্রা বের হবে বিষ্ণুপুরের আরাধ্য দেবতা রাধা লাল জিও, মদন গোপাল জিউ ও মদনমোহন জীউ র প্রতিচ্ছবি নিয়ে এই শোভাযাত্রা সারা শহর পরিক্রমা করবে বলে জানিয়েছেন বিষ্ণুপুর থানার আইসি অতনু সাঁতরা। বিগত দুবছর ধরে করোনাকালে মানুষ কোন কিছুই স্বাভাবিকভাবে করে উঠতে পারেনি তাই এ বছরের উন্মাদনা স্বভাবতই মানুষের কাছে অনেকটাই বেশি।
আরও পড়ুন – শুভেন্দু অধিকারী কে গ্রেপ্তারের দাবিতে দাঁতনের তৃণমূল যুব কংগ্রেসের উদ্যোগে মিছিল
তাই মানুষ এর এই উচ্ছাসকে সম্মান জানাতে তারা যেন শৃঙ্খলা বদ্ধ ভাবে আইন কানুনের মধ্যে থেকে এই অনুষ্ঠানটি উপভোগ করতে পারেন তার জন্য প্রশাসনের তরফ থেকে এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে জোরে মাইক বাজানো, প্রচুর মাইক একসঙ্গে না বাজানো, মদ্যপান থেকে বিরত থেকে বিষ্ণুপুরের দেবতাদের ঐতিহ্য ও মর্যাদা কে সঙ্গে নিয়ে সমস্ত বিষ্ণুপুরবাসীকে এই শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণের জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে ।এই বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় নাম সংকীর্তন ছাড়াও বিষ্ণুপুরের সব রকম সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান তুলে ধরা হবে।
এই বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাটি মুক্ত মঞ্চ থেকে বের হয়ে রসিকগঞ্জ, গোপালগঞ্জ,বোলতলা বাহাদুর্গঞ্জ, চকবাজারহয়ে বিষ্ণুপুর থানায় এসে শেষ হবে। এই শোভাযাত্রায় পুলিশ প্রশাসনের আধিকারিক ছাড়াও বিষ্ণুপুরের সাধারণ নাগরিক ,স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মী সকলেই অংশ নেবেন। সকল বিষ্ণুপুর বাসি যেভাবে বিষ্ণুপুরের উল্টোরথে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে দেবতাকে আহ্বান জানান এক্ষেত্রেও সেটাই সবাই আশা করছেন। বিষ্ণুপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান গৌতম গোস্বামী ও বিধায়ক তন্ময় ঘোষ পুলিশ প্রশাসনের এই নব উদ্যোগে সাধুবাদ জানিয়েছেন। কৃষ্ণগঞ্জ কমিটির রবি লোচন দে জানান রথ উপলক্ষে এ বছরের উন্মাদনা অনেকটাই বেশি তাই বিগত দু বছরের সব আনন্দ যেন উপভোগ করা যায় তার জন্য চন্দননগরের লাইট থেকে আরম্ভ করে বিশেষ বিশেষ শিল্পীদের সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।