দিল্লি – ভারতের সুপ্রিম কোর্ট সম্প্রতি একটি গুরুত্বপূর্ণ রায়ে বিহারের ভোটার তালিকা সংশোধনের প্রক্রিয়ায় নতুন দিশা দেখিয়েছে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে এখন থেকে আধার কার্ডকেও প্রামাণ্য নথি হিসেবে গ্রহণ করা যাবে। এতদিন পর্যন্ত ভোটার তালিকায় নাম যুক্ত করতে মোট ১১টি নথি ব্যবহার করা যেত, এবার আধার কার্ড যুক্ত হওয়ায় সেই তালিকা দাঁড়াল ১২টিতে।
তবে আদালত স্পষ্ট জানিয়েছে, আধার কার্ডকে নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে গণ্য করা যাবে না। শুধুমাত্র ১৯৫০ সালের জনপ্রতিনিধিত্ব আইন (Representation of the People Act, 1950) অনুযায়ী বিশেষ নিবিড় সংশোধন প্রক্রিয়ায় এটিকে একটি পরিচয়পত্র হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। সুপ্রিম কোর্ট এই নির্দেশ নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছে এবং আদালতের এই রায় আপাতত শুধুমাত্র বিহার রাজ্যের জন্যই প্রযোজ্য।
রায়ে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ভোটার নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় যুক্ত বিভিন্ন সরকারি ও আধা-সরকারি সংস্থা আধার কার্ডের সত্যতা যাচাই করতে পারবে। অর্থাৎ, ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত বা সংশোধনের সময় আধারের তথ্য সঠিক কিনা তা যাচাই করার ক্ষমতা তাদের থাকবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সিদ্ধান্তের ফলে ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তির প্রক্রিয়া অনেকটাই সহজ এবং দ্রুততর হতে পারে। বিশেষ করে বিহারে দীর্ঘদিন ধরে ভোটার তালিকা সংশোধনের জটিলতা নিয়ে যে সমস্যাগুলো ছিল, তা আংশিকভাবে কমতে পারে। তবে, এই সিদ্ধান্তের কার্যকারিতা ও প্রভাব নিয়ে এখনও নানা প্রশ্ন ও বিতর্ক রয়েছে।
অনেকের মতে, আধার তথ্য যাচাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভুয়ো নাম কমানো সম্ভব হলেও নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে আধার ব্যবহার না করার আদালতের মন্তব্য গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। অন্যদিকে, গোপনীয়তা ও তথ্য সুরক্ষা নিয়ে কিছু মহলে উদ্বেগ রয়ে গেছে।
সব মিলিয়ে বলা যায়, সুপ্রিম কোর্টের এই রায় বিহারের ভোটার তালিকা সংশোধনে এক নতুন দিশা এনে দিলেও, এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব এখনই স্পষ্ট নয়।
