বিহার – বিহার বিধানসভা নির্বাচনে এনডিএ-র বিপুল জয়ের পর নতুন সরকার গঠনের চূড়ান্ত প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। আগামী ২০ নভেম্বর পাটনার ঐতিহাসিক গান্ধী ময়দানে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হবে। রাজনৈতিক মহলের প্রধান প্রশ্ন—নীতিশ কুমার কি ফের মুখ্যমন্ত্রীর পদে ফিরছেন? দশমবার শপথ নেওয়ার সম্ভাবনা ঘিরে জোর জল্পনা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপস্থিতিরও ইঙ্গিত মিলেছে, কারণ নির্বাচনী প্রচারে তিনি নিজেই বলেছিলেন—“নতুন এনডিএ সরকারের শপথে আমি নিজে থাকব।”
এদিকে সোমবার দুপুরে নীতিশ কুমার শেষ মন্ত্রিসভা বৈঠকে বসবেন। সেখানে মন্ত্রিসভা বিলুপ্তির প্রস্তাব পাশ করিয়ে তিনি গভর্নর আরিফ মহম্মদ খানের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেবেন। জেডিইউ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিধানসভা ভঙ্গ ও নতুন সরকার গঠনের পথ খুলতে নীতিশকেই গভর্নরের সঙ্গে আলোচনার জন্য ‘অধিকৃত’ করা হচ্ছে।
নির্বাচনে এনডিএ-র দাপট ছিল অসামান্য। ২৪৩ আসনের মধ্যে তারা পেয়েছে ২০২টি আসন—বিজেপি ৮৯, জেডিইউ ৮৫, এলজেপি (আরভি) ১৯ এবং হাম-আরএলএম মিলিয়ে ৯ আসন। মুখ্য নির্বাচনী অফিসার বিনোদ সিংহ গুঞ্জিয়াল নবনির্বাচিত বিধায়কদের তালিকা গভর্নরের হাতে তুলে দিয়েছেন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া।
জেডিইউ-র দাবি, এবার মন্ত্রিসভায় তাদের প্রতিনিধিত্ব বাড়াতে হবে। ২০২০ সালে যেখানে দলের বিধায়ক সংখ্যা ছিল ৫০-এর কম, এবার তা বেড়ে ৮৫ হয়েছে। দলের এক বর্ষীয়ান নেতা জানান—“আমরা আরও মন্ত্রক চাইছি। তবে নতুন অংশীদারদের সামলানোও কঠিন হবে।” অন্যদিকে এলজেপি (আরভি)-র দৃষ্টি কি উপমুখ্যমন্ত্রীর পদে? চিরাগ পাসওয়ান সরাসরি কিছু না বললেও বড় দায়িত্বের দাবি তাঁদের তরফে উঠছে। বিজেপির দুই প্রাক্তন ডেপুটি সিএম—সম্রাট চৌধুরী ও বিজয় কুমার সিনহা নতুন মন্ত্রিসভায় থাকবেন কি না, তা নিয়েও আলোচনা জোরদার।
হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চা (হাম) প্রফুল্ল মাঞ্জিকে বিধানসভা দলনেতা হিসেবে নির্বাচন করেছে। তাদের দাবি স্পষ্ট—“নীতিশ কুমারই মুখ্যমন্ত্রী, আমরা তাঁকেই সমর্থন করি।” দিল্লিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের বাসভবনে হাম প্রধান জিতনরাম মাঝি, আরএলএম নেতা উপেন্দ্র কুশওয়াহা এবং বিজেপির ভিনোদ তাওড়ের মধ্যে বৈঠক হয়েছে। আলোচনার মূল বিষয়—মন্ত্রিত্ব দাবি ও সরকারে ভূমিকার রূপরেখা।
অন্যদিকে মহাগঠবন্ধনে শুরু হয়েছে অস্থিরতা। মাত্র ৩৫টি আসন পাওয়ার পর আরজেডিতে দোষারোপের রাজনীতি তীব্র হয়েছে। লালুপ্রসাদ যাদবের মেয়ে রোহিনী আচার্য রাজনীতি ছাড়ার কথা ঘোষণা করে সামাজিক মাধ্যমে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, “অপমান, কটূক্তি, এমনকি কিডনি নিয়ে কুৎসা” তাঁকে সহ্য করতে হয়েছে এবং এর জন্য তেজস্বী যাদব ও তাঁর ঘনিষ্ঠদেরই দায়ী করেছেন।



















