বিহারে নকল ভোটার ইস্যুতে তৃণমূলের বিস্ফোরক অভিযোগ

বিহারে নকল ভোটার ইস্যুতে তৃণমূলের বিস্ফোরক অভিযোগ

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram



কলকাতা – বিহারে গণতন্ত্রের অস্তিত্ব সংকটের মুখে পড়েছে বলে দাবি করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। আজ তৃণমূল ভবনে অনুষ্ঠিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে তৃণমূলের মুখপাত্র ও মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য নির্বাচন কমিশনের নথি সামনে তুলে ধরে অভিযোগ করেন, এসআইআর (SIR) সংক্রান্ত গুরুতর অনিয়ম গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বিপদের মুখে ফেলেছে। তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের আরেক মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তৃণমূলের অফিসিয়াল সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মেও এই বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট করা হয়েছে।

তৃণমূল জানায়, গত ৭ মার্চ জাতীয় নির্বাচন কমিশন এক প্রেস বিবৃতিতে জানিয়েছিল যে দশকের পর দশক ধরে চলা নকল এপিক নম্বরের সমস্যা তিন মাসের মধ্যে অর্থাৎ ৭ জুনের মধ্যে সমাধান করা হবে। কিন্তু ২৭ জুলাই প্রকাশিত কমিশনের আরেকটি বিজ্ঞপ্তিতে কমিশন নিজেই স্বীকার করেছে যে বিহারের ভোটার তালিকার এসআইআর প্রক্রিয়ায় প্রায় ৭ লক্ষ ভোটারের নাম একাধিক জায়গায় পাওয়া গেছে।

সবচেয়ে চমকপ্রদ তথ্য সামনে এসেছে বিহারের ৩৯টি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে। তৃণমূলের দাবি, শুধুমাত্র এই কেন্দ্রগুলিতেই ১,৮৭,৬৪৩ জন ভোটারের নাম দু’বার রয়েছে। নাম, আত্মীয়ের নাম এমনকি অন্যান্য তথ্যও হুবহু এক। তৃণমূলের প্রশ্ন, যখন এখনও এত বিপুল সংখ্যক নকল ভোটার রয়েছে, তখন এসআইআরের আসল অর্থ কী? সারা দেশে মোট কত নকল ভোটার আছে এবং কোন রাজ্যগুলিতে তাদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি— সেই প্রশ্নও উত্থাপন করেছে তৃণমূল।

তৃণমূলের বক্তব্য, শুধুমাত্র বিহারেই নয়, যদি একটি রাজ্যে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়, তাহলে সারা দেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়েই প্রশ্ন ওঠে। তাদের দাবি, বিজেপি দুর্নীতিগ্রস্ত নির্বাচন কমিশনের সহযোগিতায় স্বাধীন ও সুষ্ঠু নির্বাচন প্রক্রিয়াকে নষ্ট করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তারা আরও জানায়, ১৬,৩৭৫টি ঘটনায় ভোটারের নাম, আত্মীয়ের নাম, বয়স, ঠিকানা হুবহু মিলে গেছে, অথচ এই ধরনের নকল তথ্য সহজেই শনাক্ত করা সম্ভব ছিল। তৃণমূলের দাবি, এই সমস্ত সন্দেহজনক ভোটের সংখ্যা প্রায় ৩.৭৬ লক্ষ, যা সরাসরি নির্বাচনের ফলে প্রভাব ফেলতে পারে।

তৃণমূল অভিযোগ করে যে বিজেপি গত লোকসভা নির্বাচনে এই বিতর্কিত ভোটার তালিকার ভিত্তিতেই লড়াই করেছে এবং জিতেছে। তখন রোহিঙ্গা বা বাংলাদেশি ভোটারদের নিয়ে কোনও প্রশ্ন তোলা হয়নি। এখন বাংলার বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই ইস্যু কেন সামনে আনা হচ্ছে, সেই প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল। তারা এটিকে দ্বিচারিতা বলে আখ্যা দিয়েছে।

এছাড়া, বিজেপি সাংসদ ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারের স্ত্রী কোয়েল মজুমদারের নাম বালুরঘাট ও জলপাইগুড়ি দুই জায়গাতেই ভোটার তালিকায় রয়েছে বলেও অভিযোগ করেছে তৃণমূল। তারা প্রশ্ন তুলেছে, কোয়েল মজুমদার নতুনভাবে নাম তুলতে ফর্ম ৬ ব্যবহার করলেও আগের সচিত্র পরিচয়পত্র ফর্ম ৮-এর মাধ্যমে বাতিল করেননি কেন। সব মিলিয়ে, তৃণমূলের দাবি, এই অনিয়ম ও নকল ভোটারের ঘটনা গণতন্ত্রের জন্য এক গুরুতর হুমকি এবং নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে গভীর প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top