বিহার – বিহারের ভোটার তালিকা যাচাই নিয়ে চলমান ‘বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা’ (Special Intensive Revision–SIR) রাজ্য রাজনীতিতে প্রবল আলোড়ন তুলেছে। নির্বাচন কমিশনের তরফে এই সমীক্ষার মাধ্যমে মৃত, স্থানান্তরিত ও ভুয়ো ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই প্রথম ধাপে ৫২ লক্ষেরও বেশি ভোটারের নাম তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। কমিশন জানিয়েছে, এই প্রক্রিয়া শেষ হবে আগামী ১ অগস্ট বিহারের প্রাথমিক ভোটার তালিকা প্রকাশের মাধ্যমে।
এই ‘সাফাই অভিযান’ নিয়ে রাজনৈতিক তরজাও চরমে পৌঁছেছে। বিজেপি এই উদ্যোগকে স্বচ্ছ নির্বাচন নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা বলে প্রশংসা করলেও, কংগ্রেস একে আখ্যা দিয়েছে ‘গণতন্ত্রের জবাই’ হিসেবে। অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেস পুরো বিষয়টিকে ‘ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্র’ বলে দাবি করেছে। বিরোধীদের অভিযোগ, এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ গরিব, প্রান্তিক ও পরিযায়ী শ্রমিকদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা চলছে।
ভোটার হিসেবে নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য নির্বাচন কমিশন ১১টি নির্দিষ্ট নথিকে বাধ্যতামূলক করেছে। এর মধ্যে রয়েছে সরকারি পরিচয়পত্র, জন্ম শংসাপত্র, শিক্ষা শংসাপত্র, পাসপোর্ট, স্থায়ী বাসিন্দার শংসাপত্র ও জমির দলিল। তবে বিতর্ক তৈরি হয়েছে এই কারণে যে, সাধারণত প্রচলিত পরিচয়পত্র যেমন আধার, ভোটার আইডি (EPIC), কিংবা রেশন কার্ড এই প্রক্রিয়ায় বৈধ হিসেবে গণ্য হচ্ছে না। বিষয়টি ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছে।
বিরোধীদের মতে, সময়সীমা সংক্রান্ত অস্পষ্টতা, পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রমাণপত্রের জটিলতা এবং এনআরসি বা পারিবারিক রেজিস্টারের মতো নথি চাওয়ার অযৌক্তিকতা সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করছে। কমিশনের এই উদ্যোগ সত্যিই স্বচ্ছতা আনবে, নাকি নির্বাচনী গণতন্ত্রকে সংকুচিত করবে—তা নিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র রাজনৈতিক বিতর্ক।
