বিহার পুলিশ পরিচয় দিয়ে বাংলা সীমান্তে ঢুকে তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ। সরকারি খাস জমিতে বসে থাকা বাসিন্দাদের বাড়িঘর ভেঙ্গে ফেলার অভিযোগ। হরিশ্চন্দ্রপুর থানার সহরাবহরা এলাকার ঘটনা। পেছনে তৃণমূল কর্মীদের জমি থাকায় উচ্ছেদ অভিযান বলে অভিযোগ। বাংলার প্রশাসনকে না জানিয়ে কিভাবে উচ্ছেদ অভিযান উঠছে প্রশ্ন। আর জাগীরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায় হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লক এলাকার সহরাবহরা মৌজা সাদলীচক গ্রাম-পঞ্চায়েতের অন্তর্গত রাজ্য সড়কের ধারে প্রায় কুড়িটি পরিবার ৭০ বছর ধরে বসবাস করছে। এদের নিজস্ব কোন জমি-জমা নেই। তাই বাধ্য হয়ে সরকারি জমিতে রাস্তার ধারে কুড়ে ঘর বানিয়ে জীবন যাপন করছিল। কিন্তু তাদের বাড়ি গুলির পিছনে থাকা এলাকার তৃণমূল নেতা গণেশ প্রামানিক মাঝে-মাঝেই হুমকি দিত এদেরকে উঠে যাওয়ার জন্য।
কারণ এই বাড়িগুলির পিছনে ছিল গণেশ প্রামাণিকের জমি। এই নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই ঝামেলা লেগে রয়েছে। গণেশের বিহারে যাওয়া আসা ছিল।সেই সূত্রেই বেশ কিছু পুলিশকর্মীর সঙ্গে তার আলাপ হয়ে যায়। তাদেরকেই কাজে লাগিয়ে গতকাল গভীর রাত্রে ওই দরিদ্র পরিবার গুলির উপর আক্রমণ চালায়। জেসিবি লাগিয়ে মুহুর্তের মধ্যে ভেঙে ফেলা হয় কুঁড়েঘর গুলি।
অভিযোগ এই সময় ওই পরিবার গুলিকে ব্যাপক লাঠিপেটা করে বিহারের পুলিশ। এমনকি বাচ্চা এবং মহিলাদেরও বাদ দেওয়া হয়নি। ওই পরিবারগুলির অভিযোগ পুলিশের পোশাক পড়ে অনেকেই এসেছিল। সবাই হিন্দিতে কথা বলছিল। এর মধ্যে অনেকেই হাতে বন্দুক ছিল।
পাশাপাশি এদিকে এ ঘটনার পেছনে এই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল উঠেছে। অভিযোগ হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লকের সাদলিচক গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ইন্দ্রজিৎ সরকার পরোক্ষ ভাবে এই কাজে তৃণমূল কর্মী গণেশ পরামানিক কে সাহায্য করেছেন। যদিও তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন প্রধান ইন্দ্রজিৎ সরকার।
আর ও পড়ুন আলোরানীর নাগরিকত্ব নিয়ে উঠলো প্রশ্ন
এদিকে এ প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক জম্বু রহমান জানান ওই পরিবারগুলি দীর্ঘদিন ধরেই হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকাতে বাংলার সীমানাতেই বসবাস করছেন। বিহারের পুলিশ এই ভাবে এসে আক্রমণ চালাবে এটা কখনোই মেনে নেওয়া যায় না।
অন্যদিকে, এ প্রসঙ্গে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন উত্তর মালদার বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু। তিনি জানান গরিব মানুষ গুলোর উপর তৃণমূল নেতাদের মদদেই এই আক্রমণ। রাস্তার পেছনের জমি তৃণমূল নেতারা কিনে নিয়েছেন। এখন জমির সামনে থেকে এই কুঁড়ে ঘর গুলি সরিয়ে দিতে হবে। তাই বিভিন্ন অজুহাতে বিহারের পুলিশের কিছু কর্মীকে ভাড়া করে এই কাজ চালিয়েছে এলাকার তৃণমূল নেতারা।