বীরভূম বিজেপি প্রাক্তন জেলা সভাপতি দুধকুমার মন্ডল এখন দলে ব্রাত্য

বীরভূম বিজেপি প্রাক্তন জেলা সভাপতি দুধকুমার মন্ডল এখন দলে ব্রাত্য

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram

বীরভূম বিজেপি প্রাক্তন জেলা সভাপতি দুধকুমার মন্ডল এখন দলে ব্রাত্য। পঞ্চায়েত ভোট পাখির চোখ করে বিজেপি নেতৃত্ব যখন মিঠুন চক্রবর্তীকে জেলায় জেলায় মুখ হিসেবে নামিয়ে দিয়েছে, তখন বীরভূমে বিজেপির অন্দরমহলে দলীয় কোন্দল মাথা চাড়া দিয়ে উঠল। মাত্র কয়েক দিন আগে পশ্চিমবঙ্গের নতুন পর্যবেক্ষক সুনীল মণ্ডল বিলাসবহুল চিন্তন শিবিরে উল্লেখ করেছিলেন নতুন-পুরনো দলবদল নিয়ে কোন রকম বিভাজন করলে হবে না,

 

রাজ্য থেকে তৃণমূল কংগ্রেসকে ক্ষমতাচ্যুত করতে হলে সকলকে এক সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করতে হবে, কিন্তু সুনিল বনসলের বার্তা মনে হয় বীরভূম জেলা বিজেপি নেতৃত্বের কাছে এসে পৌঁছায়নি। একদিকে দলের মধ্যে ঐক্য তৈরি করতে এহেন নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করছে নয়া দিল্লি। সম্প্রতির বাংলায় পা রেখেছিলেন কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকরা। অন্যদিকে দলের অন্দরে কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন বিজেপি পুরনো নেতারা।

 

এবার দলের উচ্চ নেতৃত্বের উপর বিস্ফোরক বীরভূমের বিজেপির প্রাক্তন জেলা সভাপতি দুধকুমার মন্ডল। দুধকুমার আগেই খুইয়েছেন কার্যকরী সমিতির সদস্য পদ, এবার দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে দুধকুমার মণ্ডল বলেন, দলীয় কার্যক্রমে তাঁকে যোগ দিতে নিষেধ করা হয়েছে। রামপুরহাটের একটি হোটেলে দুঃস্থদের মধ্যে বস্ত্র বিতরণ করেন বিজেপির এই নেতা। কিন্তু সেই অনুষ্ঠানে কোনও দলীয় পতাকা ছিল না, সেখানে নজরে এসেছে নরেন্দ্র মোদী শুভেন্দু অধিকারী এবং দুধকুমারের ছবি।

 

এদিন তাঁর কথাকে ঘিরে নতুন করে জল্পনা শুরু হয়েছে। এদিন দুধকুমার তার বক্তব্যে বলেন, ব্যক্তিগতভাবে রাজ্য নেতারা আমাকে দলীয় প্রোগ্রামে যেতে এবং কার্যক্রমে অংশ নিতে নিষেধ করেছেন। দল আমাকে কোনও দায়িত্ব দেয়নি পঞ্চায়েত নির্বাচনে মাঠে নামার জন্য বা দলের হয়ে কিছু করার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেনি। আমাকে যদি দল মাঠে নামতে বলে পশ্চিমবঙ্গে, আমি আমার জেলার কথা বলছি, কীভাবে বীরভূম জেলাকে তৈরি করতে হয়, অনুর্বর মাটিকে কীভাবে উর্বর ও শষ্যশ্যামলা করতে হয় দলের তরফ থেকে তা দেখিয়ে দেব’।

 

বর্তমানে বীরভূম বিজেপির সাংগঠনিক কাজে একজন ব্রাত্য হয়ে দাঁড়িয়েছেন ময়ূরেশ্বরের বিধায়ক। দলের কিছু পদক্ষেপ নিয়ে তিনি জানিয়েছেন, ‘বাংলার মানুষ বিজেপিকেই চাইছে। ২০২১-এও বিজেপির পাশে এসে দাঁড়িয়েছে তাঁরা। কিন্তু দলের কিছু পদক্ষেপ মানুষের মনকে আকৃষ্ট করেনি, আর তাতেই বাংলায় বিজেপি খানিকটা আঘাতপ্রাপ্ত হচ্ছে’। যদিও এটা নতুন নয়, এর আগেও দুধকুমারকে নিয়ে অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে দলকে।

 

ফের আবার দলের বিরুদ্ধেই কথা বলেছেন তিনি। উল্লেখ্য গত জুনে রাজ্য বিজেপির কার্যকরী সমিতির সদস্য পদে থাকাকালীন সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছিলেন দুধকুমার। তাঁর অভিযোগ ছিল, তাঁর সঙ্গে আলোচনা না করেই বীরভূমে বিজেপির জেলা কমিটি থেকে ব্লক কমিটি সব তৈরি করা হয়েছে। সেই সময় তাঁকে সমর্থন জানিয়েছিলেন অনুপম হাজরা টুইট করে লিখেছিলেন, ‘দুধকুমারদার মত মানুষ সংগঠন থেকে হারিয়ে গেলে, তা চিন্তার এবং উদ্বেগের বিষয়’।

 

এবারও তাঁকে একইভাবে সমর্থন জানিয়েছেন অনুপমবাবু। তাঁর বক্তব্য, ‘উনিই একসময় বীরভূমে বিজেপিকে তৈরি করেছিলেন। যদি আবার তিনি কাজে ফিরতে চান, তাহলে রাজ্য স্তরে আবার আবেদন করতে পারেন। কোথায় আবেদন করতে হবে, তা তাঁর জানা রয়েছে’। একদিকে পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে তোড়জোড় শুরু হয়ে গিয়েছে বিরোধী দলে।

 

আর তার আগে দলের বিরুদ্ধে নেতার এমন মন্তব্য নতুন করে জল্পনা তৈরি করেছে। ঘটনার কটাক্ষে বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র মলয় মুখোপাধ্যায়ের বলেন, বিজেপি নিজেদের গোষ্ঠী কোন্দল সামলাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে, তার ওপর এদের নেতারা বড় বড় ডায়লগ দিয়ে মানুষের মন জয় করার চেষ্টা করছে। কিন্তু ডায়লগ মানুষ শুনতে ভালোবাসে। বাংলার মানুষের মনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছিল আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে বলে জানান মলয় বাবু।

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top