বৃষ্টি উপেক্ষা করে ঘরে ঘরে ধনদেবী কোজাগরী লক্ষ্মীর আরাধনার প্রস্তুতি। চলতি মাসের আগামী রবিবার ধন ও ঐশ্বর্যের অধিষ্ঠাত্ৰী দেবী শ্ৰী শ্ৰী লক্ষ্মী দেবীর পুজোর প্রস্তুতি ঘরে ঘরে চলছে। প্ৰতি বছরই দুর্গাপুজোর পরপরই লক্ষ্মীদেবীর পুজো হয়ে থাকে। চলতি মাসের আগামী রবিবার কোজাগরী লক্ষ্মী পূর্ণিমায় লক্ষ্মী পুজো। রবিবার ধন ও ঐশ্বর্যের অধিষ্ঠাত্ৰী লক্ষ্মী দেবীর পুজো। ঐদিন লক্ষ্মী পূর্ণিমার শুভলগ্নে প্ৰায় প্ৰতি গৃহস্থের বাড়িতেই চলছে সম্পদ ও ধনদায়িনীর পুজোর আয়োজন। সবে পুজো শেষ হয়েছে। মাসও শেষের পথে।
আবার তার মধ্যে বাদ সেধেছে গত দুদিন ধরে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা জুড়ে চলতে থাকা ভারী বৃষ্টি, তবে সেই বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে মাথায় ছাতা নিয়ে কোজাগরী লক্ষ্মী দেবীর আরাধনার জন্য বাজারে বেরিয়েছেন আপামর বাঙালি। জিনিসের দাম বাজারে চড়া হলেও অনেকে প্রায় বেশি দাম দিয়ে পুজোর উপকরণ কিনে বৃষ্টিকে উপেক্ষা করেই দেবী কোজাগরী লক্ষ্মীর প্রস্তুতি শুরু করেছেন।
পাশাপাশি বাজারের উপকরণের মূল্য আকাশছোঁয়া যার ফলে বিক্রিতে ভাটা পড়েছে অনেক ক্ষেত্রেই তাই সেই কারণে ফুল ফল ও অন্যান্য উপকরণের দোকানিদের মাথায় হাত পরেছে। গত দুইবছর চলতে থাকা করোনা পরিস্থিতি ও সবে শেষ হওয়া বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গোৎসব শেষ হওয়ার জন্য নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর হাত প্ৰায় ফাঁকাই। নুন আনতে পান্তা ফুরোয় এমন সব নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের পকেটে টান পড়াটা খুবই স্বাভাবিক।
বাজারে আগুন, তবুও এই দুর্মূল্যের দিনেও প্ৰতিটি পরিবার নিজেদের ক্ষমতা অনু্যায়ী আয়োজন করেছেন লক্ষ্মী পুজোর। এদিন সকাল থেকেই বিভিন্ন বাজারে পুজোর উপকরণ ফল, ফুল, ধূপ, দীপ কিনতে খদ্দেররা ভিড় জমান। বাজারে লক্ষ্মীর মৃন্ময়ী মূর্তি, ছবি ও রকমারি ফুল, বেলপাতা ও অন্যান্য সামগ্ৰীর পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্ৰেতারা। এক একটা ছোট গাঁদা ফুলের মালা বিকোচ্ছে ৪০-৬০ টাকায়। ছোট আকারের মাটির মূর্তি দর ৬০ থেকে ১০০ টাকা।
বড় মূর্তির দর তো নিম্ন ও মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে। তবু কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো বলে কথা। সাধ্যানুসারে প্ৰত্যেকেই লক্ষ্মী আরাধনায় যৎসামান্য উপকরণাদি ক্ৰয় করেছেন। এদিন প্ৰতি গৃহস্থের বাড়িতে গৃহবধু, মেয়েরা উপবাস থেকে মায়ের পুজোর আয়োজন করেন। আলপনা দিয়ে সাজানো হয় ঘরের মেঝ ও উঠোন। অধিকাংশ বাড়িতে চলে অন্নভোগের আয়োজনও। বারোয়ারি দুর্গাপুজোর মণ্ডপগুলিতে আয়োজন করা হয় লক্ষ্মীপুজোর।
এছাড়াও রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে গৃহস্থের বাড়িতে ও মন্দিরে চলে লক্ষ্মী পুজোর আয়োজন। ইতিমধ্যে বিভিন্ন কুমোরটুলি গুলিতে দেবীর লক্ষ্মী প্রতিমার তৈরি শেষ প্রস্তুতি চলছে তুঙ্গে। রবিবার সন্ধ্যায় পুজো ঘিরে আলোকময় হয়ে উঠবে প্ৰতি ঘরের অঙ্গন। ঘরে ঘরে আজ মহিলাদের মুখে উচ্চারিত হচ্ছে একই মন্ত্ৰ,‘এসো মা লক্ষ্মী বসো ঘরে,আমারই ঘরে থাকো আলো করে’। তবে বলাই বাহুল্য উমা কৈলাসে ফিরেছে ঠিকই তার মাঝে ভারী বৃষ্টিপাত উপেক্ষা করে দেবী লক্ষীর আরাধনায় মেতে উঠেছেন আপামর বাঙালি।