বেঙ্গল সাফারির মুকুটে জুড়ছে আরও এক নয়া পালক। মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের শালুগাড়া বন্যপ্রাণ বেঙ্গল সাফারি পার্কে এবারে চালু হতে চলেছে দেশের মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রজাপতি পার্ক ও প্রজনন কেন্দ্র।আগামী ২০শে মে সম্ভবত এই নয়া ইনিংস শুরু করতে চলেছে সাফারি পার্ক বলেই জানাচ্ছেন বেঙ্গল সাফারির ডিরেক্টর দাওয়া সাংমু শেরপা।সাফারির প্রশাসনিক ব্লগ লাগোয়া তৃণভোজী জোনের বিস্তৃন এলাকা জুড়ে তৈরি করা হয়েছে উন্মুক্ত এনক্লোজার। প্রায় ৫-৬মাস যাবৎ প্রজাপতি পার্ক ও প্রজনন কেন্দ্র তৈরীর প্রস্তুতি চলছে। প্রজাপতি বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্যের ক্ষেত্রে উল্লেখ্যযোগ্য ভূমিকা রয়েছে।
প্রাকৃতিক উপায়ে শিলিগুড়ি বেঙ্গল সাফারি পার্কে খোলা আকাশে নীচেই শুধুমাত্র প্রজাপতি সংরক্ষন ও প্রজনন কেন্দ্রও গড়ে তোলা হবে। সাফারির ডিরেক্টর জানান হরেক রকমের দেশি ও বিদেশী প্রজাতির প্রজাপতিদের হোস্ট হিসেবে রঙ বেরঙের দেশ দুনিয়ায় বাহারি ফুল গাছ লাগানো হয়েছে। পর্যটকদের কাছে এটি প্রজাপতি পার্ক হলেও ডিম থেকে ক্যাটারপিলার এবং তা থেকে পিউপাতে পরিণত হওয়ায় জীবন চক্রকে উপযোগী পরিবেশ তৈরীই সাফারি কর্তৃপক্ষের লক্ষ্য। তাই নির্দিষ্ট পরিকাঠামো সম্মত মশারির মতো বিশাল জালের মধ্যে নানা জাতের ফল ও ফুলের গাছ রয়েছে। তার মাঝে উড়ে বেড়াবে প্রজাপতিরা। প্রজাতি ডিম পাড়ে পাতায় সে পাতাও আবার বিশেষত্ব রয়েছে।
সে অনুযায়ী তাদের পছন্দ সই প্রজাতির ফুল ও ফলের গাছ লাগানো হয়েছে। ডিম ফুটে শুঁয়োপোকা ও প্রকৃতির কোলে ফিরে যাওয়ার সব ব্যবস্থাই রয়েছে পাকাপাকি। সাফারির ডিরেক্টর দাওয়া সাংমু শেরপা জানান গাছ এবং তাদের উপযোগি খাদ্ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। রাজ্য থেকে বনবিভাগের প্রজাপতি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মতই পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে। এরপরই কলকাতা থেকে প্রজাপতি বিশেষজ্ঞ ও গবেষকেরা এসে সাফারির কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেবেন। তিনি বলেন সাফারিতে প্রজাপতি অ্যাসিস্ট্যান্ট রিসার্চর রয়েছে।
সাফারি কর্তৃপক্ষের দাবি মহানন্দ অভয়ারণ্য এর আওতায় সাফারির বনাঞ্চলে এমনিতেই বিভিন্ন প্রজাতির দেশি-বিদেশি প্রজাপ্রতির দেখা মেলে। পরিকাঠামো যেভাবে তৈরি করা হয়েছে এবার রংবেরঙের দেশী বিদেশী প্রজাতির ফ্লায়িং এঞ্জেলরা নিজেরাই আকৃষ্ট হয়ে এই এলাকাই আসবে। ব্যাম্বো ট্রিব্রাউন, ট্যারাকাস ন্যারা,মানকি পাজল ও চেস্টনাট এনজেল নামে নানা প্রজাতির রংবাহারি প্রজাপতি রয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন বনাচ্ছলে। ফলত পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠবে এই প্রজাপতি পার্ক বলেই আশাবাদী সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ।
ডিরেক্টর বলেন তবে শুধুমাত্র পর্যটকদের বিনোদন যোগানোই উদ্দেশ নয় পাশাপাশি নানা ভিন দেশি প্রজাপতিদের সংরক্ষণ ও সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক পরিবেশে তাদের প্রজনন বৃদ্ধির ওপর কৃত্রিম জোড় দিয়ে সংখ্যা বৃদ্ধি করার লক্ষ্য নিয়েই এগোচ্ছে বিশেষজ্ঞরা। স্কুল কলেজের পড়ুয়ারা বিভিন্ন প্রজাতির প্রজাপতি চেনা, তাদের জীবনচক্র, খাদ্যাভ্যাস, কতদিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে একটি প্রজাপতি শিক্ষামূলকভাবে এ সবটাই আহরোহন করতে পারবে তারা। অন্যদিকে সাফারিতে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে কেনরে দর্শনের সুযোগও। তৃণভোজী চত্বরে ফাঁকা থাকা লেজার ক্যাটের এনক্লোজার রয়েছে গাজলডোবা ও ফাঁপরি থেকে উদ্ধার হওয়া একটি মহিলা ও পুরুষ ক্যাঙারু। তবে ক্যাপশন এর জন্য কোন অতিরিক্ত টিকিট মূল্য ধার্য্য করা হয়নি সাফারির তরফে।
সম্প্রতি পাচারের ছক ভেঙে তিনটি ক্যাঙারুর উদ্ধার হলেও কিছুদিনের মধ্যে একটি ক্যাঙ্গারুর শারীরিক অসুস্থতার কারণে মৃত্যু ঘটে। বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে পাকাপাকিভাবে বেঙ্গল সাফারি হয়েছে এদের রাখোনি রয়েছে বিস্তর জটিলতা। কারো উত্তর আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খাইয়ে তোলাটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। একইসঙ্গে সাফারিতে পশু চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষনে রয়েছে বেশ কয়েক দিন আগে উদ্ধার হওয়া তিনটি ভিনদেশী বাঁদর। ডিরেক্টর জানান বাঁদর তিনটিই সুস্থ্য রয়েছে আরো কিছুদিন পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। পরবর্তীতে পর্যটকদের সামনে আনা হতে পারে তাদের