বেলুড় মঠে অনুষ্ঠিত হল জগদ্ধাত্রী পুজো। চিরাচরিত রীতি ও ঐতিহ্য মেনে মহারাজ ও ব্রহ্মচারীদের উপস্থিতিতে বেলুড় মঠে অনুষ্ঠিত হল জগদ্ধাত্রী পুজো। পুজো শুরু হয় সকাল ৬টা থেকে। করোনার জন্য ভক্তদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
তবে রীতি মেনেই বেলুড় মঠ রামকৃষ্ণ মিশন সারদাপীঠে জগদ্ধাত্রী পুজো অনুষ্ঠিত হল। ১৯৪১ সালে থেকে বৈদিক ও তন্ত্রমতের মিশ্রণে বেলুড় মঠ রামকৃষ্ণ মিশন সারদাপীঠে হয়ে আসছে শ্রীশ্রীমা জগদ্ধাত্রীর আরাধনা। গত বছরের মতো এ বছরেও কোভিডের প্রভাব থাকায় সাধারণ ভক্ত এবং দর্শনার্থীদের পুজোয় প্রবেশ বন্ধ রাখা হয়েছে। তাই হবে না ভোগ ও প্রসাদ বিতরণও।
মঠের মহারাজ এবং ব্রহ্মচারীদের উপস্থিতিতে শুক্রবার ভোর ৬টা থেকেই মায়ের পুজো শুরু হয়েছে। বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত মতে পুজো হচ্ছে। এদিন তিন প্রহরের পূজায় সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমী বিহিত পূজা সম্পন্ন হয়। ইউটিউব এবং বেলুড় মঠের ওয়েবসাইটে পুজো সরাসরি সম্প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সায়ংকালে প্রতিমার অধিবাস ও আমন্ত্রণ পুজোর মাধ্যমে এর সূচনা হয়।
এরপর শুক্রবার সকাল ৬টায় পূর্বাহ্ণ পুজো হয়। এরপর সকাল ১১টায় মধ্যাহ্ন পুজো হয়। দুপুর ২টায় অপরাহ্ন পুজো হয়। বিকেলে হোম ও সন্ধ্যায় আরতির আয়োজন করা হয়। শুক্রবার বেলুড় মঠ সারদাপীঠের শ্রীশ্রীজগদ্ধাত্রী পুজো দর্শন এবং প্রণাম করতে আসেন বেলুড় মঠ রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী স্মরণানন্দজি মহারাজ।
শুক্রবার সারাদিনব্যাপী পুজোর পর শনিবার সকালে পূজা, দর্পণ বিসর্জন এবং সন্ধ্যায় প্রতিমা নিরঞ্জন হবে। রামকৃষ্ণ মিশনের সমস্ত কেন্দ্রেই এই পুজো হচ্ছে। রামকৃষ্ণ মিশন সারদাপীঠ হল রামকৃষ্ণ মঠ বেলুড় মঠের একটি শাখাকেন্দ্র। এই সারদাপীঠ বেলুড় মঠের একদম কাছে অবস্থিত। যেহেতু বেলুড় মঠে দূর্গাপুজো হয়। তাই তার শাখাপীঠে আলাদা করে দূর্গাপুজো হয় না। তাই তার বিকল্প হিসাবে এখানে জগদ্ধাত্রী পুজো শুরু হয়। দূর্গাপুজো পৌরাণিক ও তান্ত্রিক মতের মিশ্রণে হয়। কিন্তু এখানে এই জগদ্ধাত্রী পুজো হয় তান্ত্রিক মতে। এখানে জগদ্ধাত্রী মায়ের সঙ্গে নীলকণ্ঠ মহাদেব আছেন। যেহেতু তান্ত্রিকমতে পুজো। তাই এটি শক্তির আরাধনা। শিব মানে শান্তি, মঙ্গল।
আর ও পড়ুন বাড়িতে ঢুকে পড়া যুবককে চোর সন্দেহে আটকে রাখল এলাকাবাসী
তাই শক্তির আরাধনায় শিব না থাকলে সেটা অবিদ্যা শক্তি হয়। তাই এখানে মা জগদ্ধাত্রীর কাছে আছেন নীলকণ্ঠ মহাদেব। সারদাপীঠের জগদ্ধাত্রী পুজো সম্পর্কে স্বামী মহাপ্রজ্ঞানন্দ মহারাজ জানান, রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনে তন্ত্র এবং বৈদিক এই দুই মতের মিশ্রণ রয়েছে। এর পাশাপাশি সুদীর্ঘ সময় ধরে মঠ ও মিশনে পুজোর পরম্পরা রয়েছে।
এই দুইয়ের সংমিশ্রণে এখানে মায়ের আরাধনা হয়ে থাকে। ১৯৪১ সাল থেকে জগদ্ধাত্রী পুজোয় মায়ের আরাধনা চলে আসছে। কোভিড পরিস্থিতির জন্য বিগত বছরের মতো এ বছরেও কিছু অসুবিধা রয়েছে। সেই জন্য কোভিড বিধি মেনেই এবারে এখানে দর্শনার্থীদের আসা সীমাবদ্ধ করা হয়েছে।