কলকাতায় বিজেপির সংগঠনের বেহাল অবস্থা ফুটে উঠলো বৃহস্পতিবার । কলকাতায় বিজেপির বেহাল সংগঠন? দেখা গেল বৃহস্পতিবার। বৃহস্পতিবার দিনভর দেখা গেল বিজেপির প্রার্থী তথা প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালকে এই বুথ থেকে ওই বুথে ছুটতে। সঙ্গে গুটিকয়েক কর্মী। কখনও তিনি তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে বচসায় জড়াচ্ছেন, কখনও বা ভুয়ো ভোটার ধরছেন। কিন্তু তাঁর সঙ্গে মাত্র ২-৩ জন কর্মী ছাড়া আর গোটা এলাকায় বিজেপির কোনও তৎপরতাই চোখে পড়েনি। কিছু জায়গায় বিজেপির ক্যাম্প অফিস ছিল। তবে সক্রিয় ভাবে পদ্ম শিবিরকে দেখাই গেল না একমাত্র প্রার্থীকে ছাড়া। এ বিষয়ে বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক দীপন মজুমদারের দাবি, “ভোটের দিন কয়েকজনকে নিয়ে প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালকে দেখা গেল।
তৃণমূল রাজ্যে সরকারে রয়েছে। বুথ স্তর পর্যন্ত তাদের সংগঠন খুবই মজবুত। সেই অনুযায়ী কলকাতা, হাওড়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বিজেপির সংগঠনের অবস্থা খুবই শোচনীয়। তার ফল আমরা ২১শের নির্বাচনে দেখেছি। প্রিয়াঙ্কাকে একাই দেখা গিয়েছে কারণ, বিজেপির দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাংগঠনিক জেলায় অধিকাংশ কর্মী তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলে। সেই কারণে তারা সম্ভবত সক্রিয় ভাবে অংশ নেননি। দক্ষিণ কলকাতা থেকে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ভোটে জিতেছিলেন।
সেই জায়গায় আজ বিজেপির সাংগঠনিক জেলায় পদাধিকারীদের মধ্যে ৪ জন ছাড়া বাকি সবাই মাধ্যমিক কিংবা উচ্চ মাধ্যমিক পাশ। ফলে তাই জন্য তাঁরা সংগঠন চালাতে পারবেন না। কারণ, একটা সংগঠন চালাতে গেলে ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা দরকার হয়। সেটা না থাকলে, মানুষের কাছে নিজের মতাদর্শ তাঁরা ছড়িয়ে দিতে পারবেন না। আর প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল ভবানীপুরের বাসিন্দা নন।
তিনি খুব সম্ভবত আসানসোলে থাকেন। তাঁকে ভবানীপুরে নিয়ে আসা হয়েছে। স্বাভাবিক উনি এসে সংগঠনের কাউকে চেনেননি। এটাও একটা কারণ হয়ে থাকতে পারে। ভোটের রেজাল্টেও এর প্রতিফলন হতে পারে। বিজেপি যদি ভবানীপুরের কোনও বাসিন্দাকে টিকিট দিত, তাহলে মনে হয় না যে এরম পরিস্থিতির সৃষ্টি হত। ভোটের ব্যবধানও কমত।”
তবে সক্রিয় ভাবে পদ্ম শিবিরকে দেখাই গেল না একমাত্র প্রার্থীকে ছাড়া। যদিও রাজ্য বিজেপির মুখ্য মুখপাত্র শমীক ভট্টচার্য বৃহস্পতিবার জানান, ‘নন্দীগ্রামের পরে ভবানীপুরেও জিতব।’ তবে সেই সঙ্গে তিনি জানান, “ভবানীপুরে ভোটদানের হারে প্রমাণ করছে যে, কে মুখ্যমন্ত্রী রইল তাতে সেখানকার মানুষের মাথাব্যাথা নেই।” তুলনায় তৃণমূলকে আরও বেশি সংঘবদ্ধ দেখা গিয়েছে। যদিও ভবানীপুরে আগে থেকেই শক্তিশালী ছিল তৃণমূল।
আর ও পড়ুন নিম্নচাপের জেরে রাজ্যে ফের অগ্নিমূল্য বাজার দর!
এবার নির্বাচনে ভবানীপুরে প্রত্যেকটি ওয়ার্ডের দায়িত্ব একজন করে নেতার হাতে দিয়েছিল। সেই মতো সক্রিয় থাকতে দেখা যায় ঘাসফুল শিবিরকে। উল্টে ফিরহাদ হাকিম সংবাদমাধ্যমের সামনে বলেন, বেশ কিছু বুথে বিজেপি এজেন্ট দিতেই পারেনি।
তবে মাত্র কয়েকমাস আগে চিত্রটা কিন্তু বিজেপির জন্য এরকম ছিল না। বিধানসভা নির্বাচনের সময়ে এই কেন্দ্রে গেরুয়া শিবিরের প্রার্থী ছিলেন রুদ্রনীল ঘোষ। তখন প্রচুর কর্মীকে প্রচার চালাতে দেখা গিয়েছিল। যদিও রাজনৈতিক মহলে কান পাতলেই শোনা যায় কলকাতায় কোনও সময়েই বিজেপির সংগঠন শক্তিশালী ছিল না।