হুগলি – দীর্ঘ দুই বছর ধরে হুগলির বৈঁচিগ্রাম উত্তরপাড়ায় ডিভিসি খাল পারাপারের জন্য নৌকা বন্ধ থাকায় সমস্যায় পড়েছেন শতাধিক কৃষক ও গ্রামবাসী। একদিকে রয়েছে চাষের জমি, অপরদিকে বসতবাড়ি—দু মিনিটের খাল পেরোতে এখন ঘুরে প্রায় দু’ কিলোমিটার রাস্তা পাড়ি দিতে হচ্ছে। সেই কারণে বুধবার বাঁটিকা বৈঁচি গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রধানের ঘরের সামনেই বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দা ও কৃষকরা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, আগে টেন্ডারের মাধ্যমে ডিভিসি কর্তৃপক্ষ ফেরিঘাট চালু রাখলেও বিগত দুই বছর ধরে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে কৃষিকাজে সময় ও খরচ—দু’ই বেড়ে যাচ্ছে। এমনকি পার সংলগ্ন কবরস্থান ও চিকিৎসার মতো জরুরি প্রয়োজনেও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বহু মানুষকে। এখন গবাদিপশু ও মানুষ ঝুঁকি নিয়ে হেঁটেই জল পেরোচ্ছে।
গ্রামবাসী হাফিজ মহম্মদ জানান, ‘‘নৌকা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চাষের কাজে প্রচুর অসুবিধা হচ্ছে। আগেও একাধিক দপ্তরে জানানো হলেও কোনও ফল হয়নি।’’ অপর এক গ্রামবাসী নিতেশ মন্ডল বলেন, ‘‘বাম আমলে চালু হওয়া ফেরিঘাট হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চাষিদের রোজকার যাতায়াত দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।’’
পঞ্চায়েত প্রধান মালা বেগম জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার ডিভিসিকে জানানো হয়েছে। সদ্য এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিল থেকেই একটি নৌকা কেনা হবে এবং ফেরি পরিষেবা চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
এদিকে, বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। তৃণমূল নেতা বিকাশ ভট্টাচার্য অভিযোগ করেছেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কেন্দ্রীয় সরকারাধীন ডিভিসি এই ফেরি বন্ধ করে দিয়েছে। পাল্টা বিজেপি মণ্ডল সভাপতি বিশ্বজিৎ পোদ্দার বলেছেন, “তৃণমূল নেতারা নিজেরা কিছু না করে দোষ চাপাচ্ছেন কেন্দ্রের ঘাড়ে। সমস্যার সমাধান করুন, দোষারোপ নয়।”
ডিভিসির আধিকারিক সোমা রায় জানিয়েছেন, ফেরি পরিষেবা আপাতত বন্ধ রয়েছে কারণ ওপর মহল থেকে কোনও চুক্তি বা নির্দেশ আসেনি। সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন শুধুমাত্র উচ্চ কর্তৃপক্ষ।
