নদীয়া – দীর্ঘদিন যাবত রাসায়নিক সার কীটনাশক প্রয়োগে চিরাচরিত আনাজ চাষের ক্ষেত্রে বর্তমানে স্বাভাবিক চাষের ক্ষমতা হারিয়েছে মাটি তাই বহু মূল্যের রাসায়নিক কীটনাশক খরচ করলে তবেই মিলছে ফসল রবিশস্য হোক বা আনাজ চাষে যেমন পরিশ্রম তেমন থাকছে ঝুঁকি আর তাই প্রথাগত চাষ থেকে বেরিয়ে এসে অনেকেই আম কাঁঠাল লিচু এ ধরনের ফলের চাষের দিকে ঝুঁকছে। এক্ষেত্রে রাসায়নিক সার কীটনাশক সেই অর্থে ব্যবহার না করলেও উন্নত প্রজাতির শংকর জাতীয় চারাগাছ থেকে অত্যাধিক ফলন যুক্ত ফল গাছ লাগিয়ে অনেকেই সফল হচ্ছেন। এ প্রজন্মের পড়াশোনা করা ছেলেমেয়েরাও বাবা কাকার সাবেকি প্রথার চাষ থেকে মুখ ঘুরালেও উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে এ ধরনের চাষে আগ্রহী হচ্ছে।
কথায় আছে গাছে কাঁঠাল গোঁফে তেল! তবে এক্ষেত্রে চাষের কাঁঠাল ফোটাচ্ছে হাসি। নদীয়ার বাদকুল্লা দু নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের মন্ডপ ঘাট এলাকায় ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া শুভ্র বিশ্বাস বছর দুয়েক আগে নদিয়ারই একটি বাগানে দেখেছিলো, ভিয়েতনামের হাইব্রিড অলটাইম নামক এক কাঁঠাল চাষ। যা কচি অবস্থায় অর্থাৎ এঁচোড় বিক্রি অত্যন্ত লাভজনক। সব থেকে বড় কথা লাগানোর এক বছর পর থেকেই গাছে কাঁঠাল আসতে শুরু করে। তবে গাছের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখেই প্রথম বছরের কাঁঠালের ফুল অর্থাৎ মুচি ভেঙে দেওয়া হয়। দ্বিতীয় বছর থেকে বিক্রি করা যায়। দু’বছর আগে ওই বাগান থেকেই ১০৪ টি কলম বাধা চারা গাছের ডাল কিনে নিয়ে এসে নিজেদের প্রায় একদিকে পটলের জমিতে লাগায় শুভ্র। এ বছর প্রতিটা গাছে গড়ে প্রায় কুড়ি পঁচিশ কেজি করে কাঁঠাল ধরে সংখ্যাতে প্রায় ৩-৪ হাজার পিস।
যা বিক্রি হবে প্রায় ৪০০০০ টাকার কাছাকাছি বলে অনুমান। তবে এ ধরনের চাষীদের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী প্রায় 15 বছর ধরে লাগাতার চলে একই গাছের ফল সংগ্রহ বর্ষার পর থেকেই মুচি অর্থাৎ ফুল আসা শুরু হয় সে সময় এঁচোড় বিক্রি হয় সর্বাধিক প্রায় ৩০-৪০ টাকা প্রতি কেজি আর সবচেয়ে কম অর্থাৎ বর্ষার প্রাক্কালে বর্তমানে ১৫ টাকা কেজি। তবে একদিকে ফল বড় হতে থাকে অন্যদিকে নতুন ফুল ধরতে থাকে তাই সারা বছর ধরেই থাকে এঁচোড়। পাকা কাঁঠালের স্বাদ ভালো হলেও পোকামাকড় কিংবা জীবজন্তুদের আক্রমণ ঠেকানোর ঝামেলা থাকে তাই কাঁচাতে বিক্রিই বুদ্ধিমানের কাজ। তবে এ প্রজন্মের কৃষক হিসেবে শুভ্র যথেষ্টই খুশি, অন্য কৃষকদের অনুপ্রেরণাও। তবে আক্ষেপ একটাই এ বিষয়ে পড়াশোনা করলেই বোধ হয় আরো ভালো হতো কিন্তু ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াশোনার পরে আবারো পড়াশোনা করার ইচ্ছা রয়েছে চাষাবাদ নিয়ে। তবে সাধারণ চাকরির থেকে যে ব্যতিক্রমী চাষ ভালো তা অনুভব করেছে সে।
