কাজু শিল্পের উপর সরকারি বাড়তি শুল্ক, বিপাকে কাজু ব্যবসায়ীরা । কাজু শিল্পের উপর সরকারি বাড়তি শুল্ক। বিপাকে প্রায় দুই লক্ষাধিক কাজু ব্যবসায়ী ও ব্যবসার সাথে যুক্ত শ্রমিকরা। ব্যাপক আন্দোলনের হুঁশিয়ারি শ্রমিক ও কাজু ব্যবসায়ীদের। কন্টাই কাজু অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে এই আন্দোলনের হুঁশিয়ারি
কাজু শিল্পের ওপর রাজ্য সরকার বাড়তি মার্কেটিং এর ওয়ান পার্সেন্ট ট্যাক্স চাপিয়েছে, যা বিদেশ থেকে কাজু আমদানির ক্ষেত্রে প্রত্যেক লরি পিছু প্রায় 30 থেকে 40 হাজার টাকা বাড়তি রাজ্য সরকারকে গুনতে হচ্ছে। যা এর আগে কোনও দিন রাজ্যে ছিল না বা ভারতবর্ষের কোন স্টেটে এই ব্যবস্থা নেই। ঘানা,তানজানিয়া সাউথ আফ্রিকা সহ বিভিন্ন দেশ থেকে কাজু আমদানি করতে গিয়ে সরকারকে যাবতীয় তারা টেক্স দিচ্ছেন।
তার সত্বেও রাজ্য সরকারের এমন বাড়তি ট্রাক্স চাপানোয় রীতিমতো বিপাকে ব্যবসায়ীরা। একে কাজু শিল্প ইদানিং ধুঁকে ধঁকে চলছে। ব্যবসায় লস খাচ্ছেন এলাকার প্রায় 2000 গাছ ব্যবসায়ী। রাজু শিল্পের উপর নির্ভর এলাকার প্রায় দু-লক্ষাধিক মানুষ। অভিযোগ রাজ্যে কাজুবাদামের ওপর বিশেষ দপ্তর থাকলেও কোনো কাজ হয় না। উল্টে শিল্পকে সহযোগিতা করে ট্যাক্স চাপানো হয়েছে।
সারা পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির মাজনা, তাজপুর, দারুয়া প্রভৃতি এলাকাতে একমাত্র এই বৃহৎ এলাকাজুড়ে কাজু প্রসেসিং সেন্টার গড়ে উঠেছে। ইদানিং কয়েক বছর ধরে কাজল শিল্পের ভীষণ মন্দা যাচ্ছে। সহযোগিতার জন্য রাজ্য সরকার কে বারে বারে আবেদন জানিয়েছেন কাজু ব্যবসায়ীরা। কারণ এই কাজু শিল্পের উপর রাজ্য কেন্দ্র সরকার কোটি কোটি টাকা শুল্ক পেয়ে থাকেন।
আর ও পড়ুন শ্রীলঙ্কায় জরুরি অবস্থা জারি
তাই এই ব্যবসা বন্ধ হলে যেমন সরকারের লস হবে তেমনি রুজি-রোজগার হারিয়ে মারা পড়বেন লক্ষাধিক মানুষ। নেতা মন্ত্রীদের বারেবারে আনাগোনা এবং সহযোগিতার আশ্বাস পেলেও এ যাবৎ কাজু শিল্পের উপর কোনো সহযোগিতা মেলেনি। উল্টে ওয়ান পারসেন্ট মার্কেটিং এর উপর ট্যাক্স ধার্য করেছে রাজ্য সরকার। সম্প্রতি প্রায় শতাধিক গাড়ি আটকে ছিল সরকারের টেক্স কালেকশন এর সংশ্লিষ্ট দপ্তর। কাজু ব্যবসায়ীরা তুমুল বিক্ষোভ দেখিয়েছিল। পরে সেই সব গাড়ি তারা জোরপূর্বক নিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছিল।
সরকারিভাবে তাদের উপর পরবর্তী সময়ে মামলাও করা হয়েছে গাড়ি ছিনতাই করার অভিযোগ তুলে। সরকারপক্ষ ও কাজু ব্যবসায়ীদের তুমুল বাদানুবাদের মধ্যে এলাকার বিধায়ক তথা তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতৃত্ব মধ্যস্থতা করতে শুরু করেছেন। আজ কাজু ব্যবসায়ীরা সংগঠিত হতে একটি সভার আয়োজন করেন কাঁথির সেন্ট্রাল বাস স্ট্যান্ডে। সেখানে প্রায় 2000 কাজু ব্যবসায়ী উপস্থিত ছিলেন।
তাদের বার্ষিক সাধারণ সভা ও হয়েছিল এ দিন। সভাতে আমন্ত্রিত ছিলেন মন্ত্রী,বিধায়ক ও জনপ্রতিনিধিরা। প্রত্যেকের কাছে তাদের অসুবিধার কথা ও দাবি-দাওয়ার কথা তুলে ধরেন। অবশেষে বিধায়ক তথা এলাকার জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব উত্তম বারিক তাদের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছেন।
সরকারের সাথে কথা বলে ব্যবসায়ীদের এই ওয়ান পার্সেন্ট ট্যাক্সে যাতে সুবিধা দেওয়া যায় সেই ব্যবস্থা করবেন শীঘ্রই এমনটাই আশ্বাস দেন বিধায়ক। অন্যথায় কাজু ব্যবসায়ীরা তাদের কন্টাই কাজু অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে অনির্দিষ্টকালের জন্য কাজু প্রসেসিং বন্ধ রেখে তারা ধর্মঘটের ডাক দিবেন এমনটাই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।