কলকাতা – রাজনৈতিক অশান্তির জন্য সারা বছর শিরোনামে থাকা ভাঙরের দুর্গাপুজোয় এবার এসেছে নতুন আমেজ। ভাঙরের ছ’টি বড় পুজোয় এ বছর যুক্ত হয়েছে কলকাতার নাগরিক উৎসবের ছোঁয়া। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের উন্নতির পাশাপাশি বদলেছে পুজোর আবহও। জাঁকজমকহীন হলুদ আলোর প্যান্ডেলে এ বার চন্দননগরের বিখ্যাত লাইটিং, থিম-ভিত্তিক প্যান্ডেল এবং শিল্পকলার নতুন ছন্দে মাতছে ভাঙর। স্বাভাবিকভাবেই বেড়েছে পুজোর বাজেটও।
মঙ্গলপুর সর্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটি এ বছরের থিম হিসেবে বেছে নিয়েছে “অপারেশন সিঁদুর” ও “নারীশক্তি”। কমিটির সম্পাদক সুনীল মণ্ডল জানিয়েছেন, তাদের ইচ্ছা কোনও প্রাক্তন সেনানিকেই পুজোর উদ্বোধন করানো। মণ্ডপসজ্জায় থাকছে পঞ্চদুর্গা, যা এ বছরের অন্যতম আকর্ষণ। মণ্ডপে আরও ফুটে উঠবে নারীশক্তির নানা রূপ ও রূপক, যা দর্শকদের অনন্য অভিজ্ঞতা দেবে।
অন্যদিকে, কাশীপুর মন্দির উন্নয়ন কমিটি থিম হিসেবে নিয়েছে “বাবার অবদান”। মাতৃপক্ষের সঙ্গে মিলিয়ে বাবাদের অবদান এবং গুরুত্বের বার্তা দিতেই তাদের এই অভিনব উদ্যোগ। এদিকে ভাঙরের অফিস পাড়ার “আমরা সবাই ক্লাব” দর্শকদের জন্য নিয়ে আসছে মাদুরাইয়ের ৫৫ ফুট উচ্চতার মীনাক্ষী মন্দিরের প্রতিরূপ।
গত বছর সেরা পুজোর খেতাব পাওয়া কাশীপুর শতধারা প্রমীলা সংঘ এ বার করছে “ঐতিহ্যের অঙ্গন” থিমের পুজো। এখানে মা দুর্গা বিরাজ করবেন রাজকীয় অঙ্গনে, যেখানে তার রূপ হবে রাজশ্রী। লক্ষাধিক টাকা খরচ করে তৈরি হচ্ছে বিশাল রাজদালান, প্রতিমা থাকবে একচালার।
থিম পুজোর পাশাপাশি ভাঙরে রয়েছে সাবেকী পুজোর ঐতিহ্যও। চন্দনেশ্বর দুর্গাপুজো কমিটি এবারও ধরে রেখেছে তাদের “ঐতিহ্য”। তারা পুরনো ও নতুনের এক অনন্য মেলবন্ধন ঘটাতে চাইছে। এই পুজোর প্রতিমা শিল্পী স্বপন পাল। অন্যদিকে কালিকাপুর মায়ের আশ্রমে থাকছে ১২ ফুট উচ্চতার সাবেকী প্রতিমা, যা দর্শকদের ঐতিহ্যের আবেশে ফিরিয়ে নেবে।
সামগ্রিকভাবে বলা যায়, ভাঙরের দুর্গাপুজো এ বছর এক নতুন রূপে হাজির হচ্ছে। আধুনিকতা, প্রাসঙ্গিকতা, শিল্পকলা ও ঐতিহ্যের সমন্বয়ে বদলে যাচ্ছে ভাঙরের পুজোর চেহারা, যা দর্শকদের জন্য এক বিশেষ অভিজ্ঞতা হয়ে উঠবে।
