বিদেশ – মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, অতীতে ভারত যুক্তরাষ্ট্রের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপ করলেও এখন তারা যুক্তরাষ্ট্রকে শুল্কমুক্ত বাণিজ্যের প্রস্তাব দিয়েছে। ট্রাম্পের দাবি, যদি তিনি ট্যারিফ আরোপ না করতেন, তাহলে ভারত এমন প্রস্তাব দিত না। মঙ্গলবার দ্য স্কট জেনিংস শো-তে আলাপচারিতায় ট্রাম্প জানান, ভারত, চীন এবং ব্রাজিলের মতো দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর উচ্চ শুল্ক বসিয়ে এসেছে। তার ভাষায়, ভারত বিশ্বের সবচেয়ে বেশি শুল্ক আরোপকারী দেশ ছিল, কিন্তু বর্তমানে তারা যুক্তরাষ্ট্রকে ‘জিরো’ ট্যারিফের প্রস্তাব দিয়েছে।
গত মাসে ট্রাম্প প্রশাসন ভারতীয় পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক এবং রাশিয়া থেকে তেল আমদানি অব্যাহত রাখার জন্য অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা করেছিল। এর ফলে ২৭ আগস্ট থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় পণ্যের ওপর মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হয়েছে। ট্রাম্প দাবি করেন, শুল্ক আরোপের প্রক্রিয়া ও এর প্রভাব সম্পর্কে তার বোঝাপড়া বিশ্বের যেকোনো নেতার চেয়ে উন্নত। তিনি বলেন, “আমি ট্যারিফ বিশ্বের যে কারো চেয়ে ভালো বুঝি। আমি শুল্ক বসানোর পর ভারত তাদের শুল্ক কমাচ্ছে। ভারত, যা একসময় সবচেয়ে বেশি শুল্ক আরোপকারী দেশ ছিল, এখন আমার কাছে ‘জিরো’ শুল্কের প্রস্তাব নিয়ে এসেছে।”
হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের সম্পর্ক এখন ভালো হলেও দীর্ঘদিন ধরে তা ‘একতরফা’ ছিল। তার দাবি, ভারত যুক্তরাষ্ট্রের ওপর অত্যধিক শুল্ক বসানোর কারণে মার্কিন ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভারতের ওপর আরোপিত শুল্ক কমানোর সম্ভাবনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক খুব ভালো, তবে বছরের পর বছর তারা আমাদের ওপর বিশ্বের সর্বোচ্চ শুল্ক বসিয়েছে। এর ফলে ভারতে আমাদের ব্যবসা কার্যত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।”
ট্রাম্প উদাহরণ দিয়ে বলেন, হার্লে-ডেভিডসন মোটরসাইকেলের ওপর ২০০ শতাংশ শুল্কের কারণে মার্কিন কোম্পানিটিকে ভারতে নিজস্ব কারখানা স্থাপন করতে হয়েছে। তার মতে, অতীতে যুক্তরাষ্ট্র ভারতীয় পণ্যের ওপর কোনো শুল্ক বসায়নি, অথচ ভারত তাদের পণ্য অবাধে মার্কিন বাজারে পাঠাত। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তবে ট্রাম্প প্রশাসনের এই নীতি নিয়ে ভারতীয় পক্ষ ভিন্ন অবস্থান নিয়েছে। তারা মার্কিন শুল্ককে ‘অন্যায় ও অসামঞ্জস্যপূর্ণ’ বলে অভিহিত করে জানিয়েছে, নিজেদের জাতীয় স্বার্থ ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। উল্লেখ্য, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দুই দেশের মধ্যে পণ্য বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১৩১.৮ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে ভারত যুক্তরাষ্ট্রে ৮৬.৫ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৪৫.৩ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে।
