ভারতে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হতে চলেছে ডিজিটাল মুদ্রা

ভারতে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হতে চলেছে ডিজিটাল মুদ্রা

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram



দেশ – ভারতে এবার আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হতে চলেছে ডিজিটাল মুদ্রা। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (RBI)-র নিয়ন্ত্রণে থাকা এই নতুন মুদ্রা ব্যবস্থাকে কেন্দ্র করে আর্থিক দুনিয়ায় শুরু হয়েছে নতুন আশার সঞ্চার। দেশের আর্থিক লেনদেনে গতি ও স্বচ্ছতা দুই-ই বাড়বে বলে দাবি করেছেন কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল। তাঁর কথায়, ডিজিটাল মুদ্রা ব্যবহারের ফলে কাগজের ব্যবহার অনেকটাই কমে যাবে এবং ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থায় লেনদেন হবে আরও দ্রুত ও নিরাপদ। ব্লকচেইন প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রতিটি লেনদেনের পূর্ণ ট্রেসেবিলিটি বা নজরদারি সম্ভব হবে, যা আর্থিক ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে।

গোয়েল আরও জানান, এই ডিজিটাল মুদ্রা কোনওভাবেই ক্রিপ্টোকারেন্সির মতো নয়। এটি সরাসরি রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার দ্বারা সমর্থিত এবং এর উপর সম্পূর্ণ সার্বভৌম বিশ্বাস ও নিশ্চয়তা থাকবে। অর্থাৎ, এই মুদ্রার পেছনে রয়েছে সরকারের সরাসরি নিয়ন্ত্রণ ও গ্যারান্টি, যা একে ক্রিপ্টোর তুলনায় অনেক বেশি নিরাপদ করে তোলে।

রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ইতিমধ্যেই পরীক্ষামূলকভাবে ‘সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক ডিজিটাল কারেন্সি’ (CBDC) চালু করেছে দুই ধাপে। প্রথম ধাপে ২০২২ সালের ১ নভেম্বর পাইকারি স্তরে (Wholesale) ডিজিটাল মুদ্রা চালু হয় এবং দ্বিতীয় ধাপে ১ ডিসেম্বর থেকে খুচরো স্তরে (Retail) পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয় এই প্রকল্প। আরবিআইয়ের সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের মার্চ মাসের শেষে দেশে প্রচলিত ডিজিটাল মুদ্রার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১,০১৬ কোটি টাকা।

মন্ত্রীর মতে, ক্রিপ্টোকারেন্সি কোনও দেশের সার্বভৌম মুদ্রা নয় এবং কোনও সরকারি ব্যাঙ্কের সমর্থনও নেই, ফলে এর ঝুঁকি অনেক বেশি। ভারত সরকার তাই ক্রিপ্টোকারেন্সির ব্যবহারকে উৎসাহ দিচ্ছে না। যদিও দেশে ক্রিপ্টো লেনদেন নিষিদ্ধ নয়, তবে তার উপর ৩০ শতাংশ কর আরোপিত হয়েছে। নাগরিকেরা নিজেদের ঝুঁকিতে ক্রিপ্টোতে লেনদেন করতে পারেন, তবে সরকারের পক্ষ থেকে কোনও আর্থিক সহায়তা বা সুরক্ষা দেওয়া হবে না।

বর্তমানে পীযূষ গোয়েল সরকারি সফরে রয়েছেন কাতারে, যেখানে ভারত-কাতার যৌথ অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য কমিশনের বৈঠকে তিনি সহ-সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে কাতারের বাণিজ্যমন্ত্রী শেখ ফয়সাল বিন হানি আল থানির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। গোয়েলের আশা, শীঘ্রই দুই দেশের মধ্যে একটি Comprehensive Economic Partnership Agreement (CEPA) বা বিস্তৃত মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির খসড়া চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে।

এইভাবে ভারতের ডিজিটাল মুদ্রা চালুর সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র দেশের আর্থিক ব্যবস্থাকেই নয়, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্পর্ককেও নতুন দিশা দিতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top