উচ্চমাধ্যমিকে ভালো ফল করলেও, দুই মেধাবী ছাত্রীর দুশ্চিন্তায় দিনমজুর বাবা। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করলেও দুশ্চিন্তায় দুই মেধাবী ছাত্রীর পরিবার। পেশায় দিনমজুর ও রাজমিস্ত্রির মেধাবী ছাত্রীর উচ্চশিক্ষায় বিপাকে পড়েছেন তার পরিবার। বেতগাড়া চারেরবাড়ি নগেন্দ্র নাথ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়ে ভালো ফল করেছেন রিনা রায় ও জয়শ্রী রায়। এদের দুজনেরই প্রাপ্ত নম্বর ৪৮২। নিজেদের লক্ষে কিভাবে পৌঁছাবে তা নিয়েই উদ্বিগ্ন পরিবার। তাই উচ্চশিক্ষায় সাহায্যের আরজি জানিয়েছেন দুই মেধাবী ছাত্রীর পরিবার।
ময়নাগুড়ি ব্লকের আমগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রত্যন্ত গ্রাম ধওলাগুড়ি। সেই গ্রামের প্রান্তভাগ তথা জলঢাকা নদীর তীরবর্তী এলাকায় বাড়ি রিনা রায়ের। উচ্চমাধ্যমিকে ভালো ফল করায় খুশি এলাকার সাধারণ মানুষসহ তার পরিজনেরা। রিনার প্রাপ্ত নম্বর ৪৮২। সে বাংলায় ৯২, ইংরেজি ৮৬, সংস্কৃতে ৯৯, ভূগোলে ৯৯, ইতিহাসে ৯৯, রাষ্ট্র বিজ্ঞানে ৯১ পেয়েছে । রিনা আগামীতে নার্সিং নিয়ে পড়াশোনা করতে চায়।রিনা জানায়,”আগামীতে আমি নার্সিং নিয়ে পড়াশোনা করে গরিব মানুষদের পাশে দাঁড়াতে চাই।
আমার এই সাফল্যের পেছনে আমার পরিবার, শিক্ষক শিক্ষিকা সকলেই সহযোগিতা করেছেন। আগামী দিনে এভাবেই এগিয়ে যেতে চাই।” কিন্তু সেই লক্ষ্যে পৌঁছতে গেলে অর্থের প্রয়োজন। যা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে তার পরিবার। পেশায় দিনমজুর রিনার বাবা অরবিন্দ রায়।তিনি বলেন, “আমি পেশায় দিনমজুর। মেয়ের উচ্চশিক্ষায় প্রচুর অর্থের প্রয়োজন আছে। এই অবস্থায় কতটা কি করতে পারব মেয়ের জন্য এই দুশ্চিন্তায় রয়েছি। কোনরকম সহযোগীতা পাওয়া গেলে নীড় উচ্চশিক্ষা লাভ সহজ হত।”
আরও পড়ুন – সহজ ইংরেজি বানান বলতেই ভ্যাবাচ্যাকা! রাস্তায় অবরুদ্ধ করে পাশ করাতে হবে আকাশ কুসুম দাবি পড়ুয়াদের
অন্যদিকে, বেতগাড়া চারেরবাড়ি নগেন্দ্র নাথ উচ্চ বিদ্যালয় এর আরেক কৃতি ছাত্রী জয়শ্রী রায়। তার বাড়ি চারেরবারি এলাকায়। তারও প্রাপ্ত নম্বর ৪৮২। সে বাংলায় ৯৬, ইংরেজিতে ৮৩, ভূগোলে ৯৮, সংস্কৃতে ৯৯, ইতিহাসে ৯৫, শিক্ষা বিজ্ঞানে ৯৪ নম্বর পেয়েছে । শিক্ষকতা করতে চায় জয়শ্রী। অভাব অনটনের মধ্যে পড়াশোনা চালিয়ে গেলেও উচ্চশিক্ষা লাভের ক্ষেত্রে বাধার সম্মুখীন হয়েছে তার পরিবার। জয়শ্রী জানায়,”খুব কষ্ট করে পড়াশোনা করতে হয়েছে। টাকার সমস্যার জন্য ভালো করে টিউশনি করতে পারিনি। আগামীতে শিক্ষক হওয়ার ইচ্ছা রয়েছে।
কিন্তু এই উচ্চশিক্ষার জন্য যে খরচ সেই খরচ পরিবার জোগাড় করতে পারবে কিনা তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছি।” জয়শ্রীর বাবা অনিল রায় পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। এই কাজ করে যা উপার্জন হয় তা দিয়েই সংসার এবং পড়াশোনার খরচ যোগাতে হয় তাকে। রাজমিস্ত্রি কাজে প্রত্যহ কাজ না থাকায় অনেক সময়ই সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তাই কিভাবে উচ্চশিক্ষায় মেয়ের পড়াশোনার খরচ জোগাড় করবেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে অনিল বাবু। তিনি বলেন,”প্রত্যেকদিন আমার কাজ থাকেনা। ফলে যা টাকা উপার্জন হয় তা দিয়ে সংসার চালানো এবং পড়াশোনার খরচ চালানো খুবই কষ্টের। মেয়ে উচ্চমাধ্যমিকে ভালো ফল করলেও তার উচ্চশিক্ষা কতটা করাতে পারবো তা জানি না।”