রাতভর টানা বৃষ্টিতে জলে ভাসছে শহর কলকাতা, একই ছবি জেলায় জেলায় ।রাতভর একটানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে শহর কলকাতার বিভিন্ন এলাকা। ফলে দুর্ভোগ বাড়ছে শহরবাসীর। আজ সকাল থেকেও বৃষ্টিপাত চলছে। উত্তর কলকাতার ঠনঠনিয়া কালীবাড়ি চত্বর থেকে শুরু করে মুক্তারাম বাবু স্ট্রিট কিংবা সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ের দিকে একাধিক রাস্তা এখনও রয়েছে জলের তলায়। বুক সমান জলেই ভাসছে রাস্তা।
জল জমেছে লেকটাউনের পাতিপুকুর এলাকায়, সল্টলেকের সেক্টর ফাইভ এলাকাতেও জল জমে রয়েছে একাধিক রাস্তায়। যার জেরে সেক্টর ফাইভে কাজে আসা মানুষজন পড়ছেন সমস্যায়। ‘লাগাতার বৃষ্টির জেরে জল জমেছে শহরের একাধিক এলাকায়। তবে কলকাতা পুরসভার কর্মীরা কাজে নেমে পড়েছে। কলকাতা পুরসভার ৭৬ টি পাম্পিং স্টেশন সচল রাখা হয়েছে। উত্তর কলকাতার বিভিন্ন এলাকা এবং দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন ওয়ার্ডে কিবা গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় জমা জল বের করতে অতিরিক্ত পাম্প কাজে লাগানো হচ্ছে।
গতকাল থেকেই টানা বৃষ্টিপাতের জেরে জল জমেছে শহর কলকাতার সর্বত্র। প্রায় একই অবস্থা জেলাগুলিরও। জমা জলে বাড়ছে দুর্ভোগ। কলকাতা এবং সন্নিহিত জেলাগুলিতে আজ ভারী বৃষ্টিপাত লেগেই থাকবে, এমনটাই জানাচ্ছে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, দফায় দফায় ভারী বৃষ্টি হবে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে। উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে তৈরি হয়েছে ঘূর্ণাবর্ত। দক্ষিণবঙ্গে সক্রিয় মৌসুমী অক্ষরেখা। ফলে আজ সারা দিন বৃষ্টি চলবে। বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টি হবে কয়েকটি জেলায়। আগামীকাল থেকে কমবে বৃষ্টির পরিমাণ।
মূলত উত্তর বঙ্গোপসাগরের ওপরে থাকা ঘূর্ণাবর্ত গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের ওপরে চলে আসায় প্রচুর পরিমাণে জলীয় বাষ্পও ঢুকেছে। যার জেলে কলকাতা এবং সংলগ্ন উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি এবং পূর্ব মেদিনীপুরে রবিবার রাত থেকে টানা বৃষ্টিপাত চলছে। সোমবার সকাল থেকে বিভিন্ন জায়গাতে এই বৃষ্টির পরিমাণ আরও বেড়েছে। আগামী ২৪ ঘন্টাতে বৃষ্টি এমনই চলতে থাকবে বলে পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে হাওয়া অফিসের তরফে।
আর ও পড়ুন ৩০ বছরের আগেই সন্তান নিন, কেন এমন বলছেন চিকিতসকেরা
তবে আবহাওয়াবিদদের একাংশ জানাচ্ছে, এমন আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা আগে দেখা যায়নি। তবে গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের কারনে গোটা বিশ্বেই আবহাওয়ার পরিবর্তন ঘটছে। যার প্রভাব পড়ছে এখানেও। আর সেই কারনে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত দেখছে বাংলা।
রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি কলকাতায়। শুধু কলকাতায় নয়, শহরতলিতেও রবিবার মধ্যরাত থেকে টানা বৃষ্টি হয়ে যাচ্ছে। যার কারনে বিভিন্ন অংশে জল জমতে শুরু করেছে। কলকাতার উত্তর থেকে দক্ষিণ সর্বত্র জলের তলাতে। তবে আরও ভয়ঙ্কর হতে পারে শহর জল ছবি।
জানা গিয়েছে, কলকাতার অন্তত ৮টি জায়গায় ১০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হয়েছে। রাত ১২ টা থেকে আজ সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত নিকাশি পাম্পিং স্টেশন ভিত্তিক বৃষ্টিপাতের যে পরিমাণ সামনে এসেছে তা কার্যত অবাক করে দেওয়ার মতো। মানিকতলাতে সকাল ৮টা পর্যন্ত ৯৮ মিমি বৃষ্টি হয়েছে। বীরপাড়া ১০০ মিমি, বেলগাছিয়া ১০০ মিমি, ধাপা লক ১৪৬ মিমি, তপসিয়া ১৩০ মিমি বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। উল্টোডাঙ্গা ১২৫ মিমি, পামার বাজার ১২১ মিমি, ঠনঠনিয়া ১০০ মিমি, বালিগঞ্জ ১২৩ মিমি, মোমিনপুর ১১৬ মিমি, চেতলা লক ১১৪ মিমি, যোধপুর পার্ক ১১৭ মিমি, কালীঘাট ১২৭ মিমি, কাম ডহরি ৮৮ মিমি, কিপিটি ক্যানাল ১৮ মিমি, দত্ত বাগান ৯৩ মিমি, জিনজিরা বাজার ৮৯ মিমি, বেহালা ফ্লায়িং ক্লাব ১০২ মিমি বৃষ্টির রেকর্ড করা হয়েছে। তবে যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে তাতে এই সংখ্যা শীঘ্র বদলে যাবে।
শহরের সবকটি পাম্পিং স্টেশন খোলা রয়েছে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় জল বের করার কাজ হচ্ছে। অন্যদিকে দমকল, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকেও তৈরি রাখা হয়েছে। তবে প্রবল বৃষ্টির কারনে টালিগঞ্জে বেশ কয়েকটি বড় গাছ রাস্তার উপরে ভেঙে পড়েছে। যার ফলে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়েছে সেখানে।যদিও দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। বাগুইআটিতে একটি বাড়ি ভেঙে পড়েছে বলে জানা গিয়েছে। যদিও ক্ষয়ক্ষতির কোনও খবর পাওয়া যায়নি।