ভিক্ষা করে জমানো টাকা মা তুলে দিল ছেলের হাতে,শখ একটি স্কুটি! মায়েরা সন্তানের জন্য সত্যিই কি না করতে পারে। আবার মিলল এরকমই উদাহরণ। সূত্রের খবর,নদীয়ার কৃষ্ণনগর পালপাড়া মোড়ের কাছে একটি মোটরসাইকেল শোরুমে হঠাৎ ই বন্ধুদের নিয়ে হাজির হন রাকেশ পাঁড়ে নামে এক যুবক।
জানা গেছে,নদীয়ার ভীমপুর গোবরাপোতা মাছ বাজার এলাকায় যুবকের বাড়ি।তার পছন্দসই স্কুটির দাম – ৭০,০০০ টাকা। এই টাকা টি সম্পূর্ণই খুচরো কয়েনে দিতে চান সেই যুবক। এ শুনে মাথায় হাত পড়ল শোরুম ম্যানেজার থেকে সরাসরি মালিকের। বেশ খানিকটা সময় ফোনাফুনি চলে তাদের।
আরও পড়ুন – আইপিএল-এর ১৪ বছরের মেগা ফাইনাল
তারপর সেই এক টাকার কয়েনে দোকানদার একরকম বাধ্য হয়েই সরকারি নিয়ম-নীতির কথা জেনেই হয়ত শেষমেষ রাজি হলেন মালিক। তারপরেই বস্তা করে নিয়ে আসা সেই কয়েন মেঝের ওপর উপুড় করে ঢেলে দেন সেই যুবক। আর সেই বিশাল কয়েনের অংক গুনে টাকার অংক বুঝে নিতে শোরুমের বেশ কয়েকজন কর্মীদের গলদঘর্ম অবস্থা হয়। এদিকে, সূত্রের খবরে জানা যায়, রাকেশের বাবার নাম ভুল্লুর পাঁড়ে। তার স্ত্রী ধুলু পাঁড়ে।রাকেশের মা তিনি। দুই ছেলে রেখে বাবা মারা যান বহুদিন আগে। তারপর থেকেই সংসার চালানোর খরচ জোগাতে বাধ্য হয়ে ভিক্ষাবৃত্তি বেছে নিয়েছেন মা। এই দিন আনা দিন খাওয়া সংসারে পাঁচ টাকা দশ টাকা দুই টাকা সংসারে যায়। সঞ্চয় বলতে পড়ে থাকে শুধু এক টাকার কয়েন।
আরও পড়ুন – বিএসএফের বাধায় পাট চাষ করতে পারছে না কৃষকরা, অবশেষে দ্বারস্থ হলেন মহকুমা শাসকের
এদিকে,রাকেশ ছোটো ছেলে। তার বড় ছেলে বিবাহ করে শ্বশুর বাড়িতেই থাকেন। তাঁর সাথে এনাদের বিশেষ যোগাযোগ নেই। কিন্তু, রাকেশ মায়ের অত্যন্ত আদরের।মা কে ছেড়ে যান নি তিনি। তিনি কলকাতায় লোহার তৈরি জিনিসপত্রের দোকানে কাজ করেন। কিন্তু এতই স্বল্প উপার্জন যে, মোটরসাইকেলের শখ কোনদিন পূরণ হবে না,তাও বুঝে যান তিনি। তাই,ছেলের মুখে হাসি ফোটাতে মায়ের এপর্যন্ত জমানো যা ছিল সম্বল – দু বস্তা ১ টাকার কয়েন, তাই তিনি তুলে দেন রাকেশের হাতে। বিষয়টি নিয়ে কিছুটা লজ্জিত হয়েই রাকেশ জানিয়েছেন,” মায়েরও ইচ্ছে ছিল একটি স্কুটি আলো করে থাকুক আমাদের ভাঙ্গা ঘরে।”