মালদা – ভিনরাজ্যে কাজ করতে গিয়ে দুই মাস ধরে নিখোঁজ থাকার পর অবশেষে সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে উদ্ধার হল মালদহের পরিযায়ী শ্রমিকের পচাগলা দেহ। মৃতের নাম মুকেশ মণ্ডল (৩০)। তিনি মালদহের চাঁচল-২নং ব্লকের ক্ষেমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পরাণপুর গ্রামের বাসিন্দা। পরিবারের দাবি, কয়েক মাস আগে কাজের সন্ধানে কর্ণাটকের বেঙ্গালুরুতে গিয়েছিলেন মুকেশ। কিন্তু সেখান থেকে প্রায় দু’মাস ধরে তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। সম্প্রতি বেঙ্গালুরুর এক সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে উদ্ধার হয়েছে তার দেহ।
ঘটনার খবর পাওয়া মাত্র বুধবার মৃত শ্রমিকের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে তাদের বাড়ি পৌঁছান মালতীপুর বিধানসভার বিধায়ক আবদুর রহিম বক্সি। তিনি শোকাহত পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন এবং জানিয়েছেন, সরকারের পক্ষ থেকে যথাসম্ভব সাহায্য করা হবে। বিধায়ক বলেন, “এখানে মুকেশ কাজ করতেন। ও বেঙ্গালুরুতে কাজ করত। দুই মাস পর ওর দেহ পাওয়া গেছে। ওর বাবারা গিয়েছিলেন। এখনও কোম্পানি কোনও প্রতিশ্রুতি দেয়নি।”
এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও অধিকার নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠছে। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বারবার পরিযায়ী শ্রমিকদের হেনস্থার খবর উঠে আসছে। এদিকে, বাংলা ভাষা ও বাঙালি অস্মিতা নিয়ে সরব হয়েছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। তাদের অভিযোগ, ভিনরাজ্যে বাংলা ভাষায় কথা বলার কারণে অনেক বাঙালিকে বাংলাদেশি হিসেবে চিহ্নিত করে হেনস্থা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই এই প্রসঙ্গে বিধানসভায় বিশেষ অধিবেশনও ডেকেছে রাজ্য সরকার।
বেঙ্গালুরুর সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে মুকেশ মণ্ডলের দেহ উদ্ধারের ঘটনা সেই আলোচনায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে। পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া, আর গ্রামে ছড়িয়েছে শোকের আবহ। ভিনরাজ্যে কাজ করতে গিয়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিয়ে যে গভীর সংকট রয়েছে, এই ঘটনাই তার তীব্র প্রতিফলন ঘটিয়েছে।
