আসছে ভুত! সবাই সাবধান

আসছে ভুত! সবাই সাবধান

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram
ভুত

আসছে ভুত! সবাই সাবধান। বলা যায় রাত পোহালেই কালীপুজো, ঠিক তার আগের দিনটিতে কেমন যেমন গা ছম ছমে পরিবেশ হ্যাঁ ঠিক ধরেছেন ভূত চতুর্দশী। আগের রাতটাকেই বলা হয় ‘ভূত চতুর্দশী। কিন্তু কেন পালন করা হয় এই রীতি? হিন্দু পুরাণ বলছে, এই তিথিতে সন্ধ্যে নামার পর পরই অশরীরী প্রেতাত্মারা বের হন। আর তাদের হাত থেকে নিস্তার পেতেই এদিন সন্ধ্যার পর গৃহস্থের বাড়িতে ১৪টি প্রদীপ জ্বালানোস হয়ে থাকে। এটাই নিয়ম। কারন ভূত চতুর্দশীকে নরক চতুর্দশীও বলা হয়। পুরাণ অনুযায়ী মনে করা হয়, এই দিন স্বর্গ ও নরকের দ্বার কিছু ক্ষণের জন্য উন্মোচিত হয়। এএকই সঙ্গে বিদেহী আত্মা এবং স্বর্গত ব্যক্তিরা নেমে আসেন পৃথিবীতে। প্রদীপের চিহ্ন দেখে নিজেদের উত্তর পুরুষের ভিটেয় পৌঁছে যান। তাঁদের আশীর্বাদ করেন।

 

এই ভূত চতুর্দশীর দিনে ১৪ শাক খাওয়ার রীতি রয়েছে। এইদিন চোদ্দো রকমের শাক খাওয়া হয়। শাকের মধ্যে থাকে– বেতো কালকাসুন্দা, নিম, সরিষা, শালিঞ্চা বা শাঞ্চে, জয়ন্তী, গুলঞ্চ, পলতা, ঘেঁটু বা ভাঁট, হিঞ্চে, শুষনি ইত্যাদি)। আয়ুর্বেদ মতে প্রাচীন বাংলায় চোদ্দো শাক ছিল– পালং, লাল শাক, সুষণি শাক, পাট শাক, ধনে শাক, পুঁই শাক, কুমড়ো শাক, গিমে শাক, মূলো শাক, কলমি শাক, সরষে শাক, নোটে শাক, মেথি শাক, লাউ শাক বা হিঞ্চে শাক।

 

আসলে দিনেরবেলা ভূতেরা কী করবে? অন্ধকার না হলে তাদের কাজ কী? তখনই তো আদাড়-বাদাড়, বেলগাছ, শেওড়াগাছ, বনঝোপ থেকে দলে দলে বেরিয়ে পড়ে রাশি রাশি বেঁটে ভূত, মোটা ভূত, হোঁৎকা ভূত, মামদোভূত, গেছোভূত, মেছোভূত, পেত্নি, শাঁকচুন্নি, ব্রহ্মদত্যিরা। এই সব ভূতেদের ভয়ে ভূত চতুর্দশীর দিনে বাড়ির অন্ধকার কোনায় কোনায় জ্বেলে দেওয়া হয় চোদ্দো প্রদীপ। ব্যাপারটি প্রতীকী। কেননা, ওইদিনই শুধু ভূতেরা আসবে আর প্রদীপ জ্বলছে দেখে ফিরে চলে যাবে, বিষয়টা মোটেই এমন সাদা নয়। ভূত আছে, এটা বিশ্বাস। আর এই বিশ্বাস করেই বরং অনেকের আনন্দ হয়, রোমাঞ্চ হয়। তাহলে আসুন আজ আমরা কিছু ভুতেদের সমন্ধে জেনে নি।

 

আর ও পড়ুন      শ্বশুরবাড়ি গিয়ে কী খাবেন জামাই? রইল কিছু পরামর্শ

 

যেমন ধরুন ব্রাহ্মণেরা অপঘাতে মরলে ব্রহ্মদৈত্য হয়। ধুতি, খালি গা, গায়ে পৈতে। থাকে বেল গাছে। মুসলমানদের অপঘাতে মৃত্যু হলে তারা হয় মামদো ভূত। মামদো নাকি ‘মহম্মদ’ থেকে এসেছে। মামদোরা ঘাড়ে চাপলে বলা হয় জিনে ধরেছে। মাছপ্রিয় বাঙালি মৃত্যুর পরও মাছের লোভ ছাড়তে না পারলে মেছোভূত হয়ে পুকুরের চারধারে ঘোরে। রাতে বা ভরদুপুরে নির্জন রাস্তা দিয়ে কেউ মাছ কিনে ফিরলে এরা তাদের ঘাড়ে চেপে বসে মাছ ছিনিয়ে নেয়। ট্রেন বা বাসে কাটা পড়লে যদি মুণ্ডচ্ছেদ হয়ে মৃত্যু হয়, তা হলে সে হল স্কন্ধকাটা ভূত। নিজের কাটা মাথাটার খোঁজেই নাকি সে পৃথিবীতে ঘুরে বেড়ায়!

 

পেত্নি। এ হল মানুষজন্মে অবিবাহিত। মরে গিয়ে অতৃপ্ত বাসনা নিয়ে ঘুরে বেড়ায় এরা। জলা জায়গা বা শ্যাওড়া গাছে বাসা বাঁধে৷ তবে শাঁকচুন্নিরা বিবাহিত। তাই হাতে শাঁখা, পলা, সিঁথিতে সিঁদুর পরে এরা ঘুরে ঘুরে বেড়ায়। আর রয়েছে নিশি। রাতের অন্ধকারে আমাদের নাম ধরে ডাকে এই নিশি। সেই ডাকে সাড়া দিলে টেনে নিয়ে যায় ঘরের বাইরে, বাড়ির বাইরে, এলাকার বাইরে, আমাদের চেনা জগতের বাইরে। সেখানে কেউ নেই, কিছু নেই। শুধু ঘন গাঢ় অন্ধকার। সেই আঁধারে চিরকালের মতো হারিয়ে যেতে হয় নিশির ডাক শোনা সেই মানুষটিকে। সেখান থেকে কেউ ফিরে আসে না।

 

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top