Deprecated: version_compare(): Passing null to parameter #2 ($version2) of type string is deprecated in /home/u517603494/domains/shinetv.in/public_html/wp-content/plugins/elementor/core/experiments/manager.php on line 129
ভেণ্ডী চাষ পদ্ধতি এর জলবায়ু (Climate )ও মৃত্তিকা (Soil)

ভেণ্ডী চাষ পদ্ধতি এর জলবায়ু ও মৃত্তিকা

ভেণ্ডী চাষ পদ্ধতি এর জলবায়ু ও মৃত্তিকা

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram
ভেণ্ডী

ভেণ্ডী চাষ পদ্ধতি এর জলবায়ু ও মৃত্তিকা। গ্রীষ্মকালীন সবজির মধ্যে ভেণ্ডী বা ঢেঁড়স অন্যতম প্রিয় সবজি। হাইব্রিড বা সংকর জাতের ভেন্ডী  গ্রীষ্মকাল ছাড়াও প্রায় সারাবছরই চাষ করা চলে। কারণ, ভেণ্ডী চাষের প্রধান সমস্যা, ‘সাহেব রোগ’ বা মোজেইক রোগ অধিকাংশ সংকর জাতের ভেণ্ডীতেই হয় না। এতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, খনিজ পদার্থ, ভিটামিন এ. বি ও সি এবং আয়োডিন পাওয়া যায়। আয়োডিন থাকায় নিয়মিত ভেণ্ডী খাওয়ার ফলে গলগণ্ড রোগের সম্ভাবনা কমে যায়। মস্তিষ্ক ও হৃৎপিণ্ডের দৌর্বল্যের প্রতিরোধে ভেণ্ডী বেশ উপকারী।

 

ভেণ্ডী চাষ পদ্ধতি এর জলবায়ু ও মৃত্তিকা

দীর্ঘস্থায়ী উষ্ণ আবহাওয়া ভেণ্ডী চাষের পক্ষে অনুকূল। এইজন্য, গ্রীষ্মকালেই অধিক পরিমাণে ঢেঁড়স চাষ হয়।
দীর্ঘস্থায়ী ঠাণ্ডা আবহাওয়া ও তুষারপাতে ঢেঁড়স গাছ বাঁচে না।২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এর কম উষ্ণতায় ঢেঁড়স বীজ অঙ্কুরিত হয় না।

 

গ্রীষ্ম ছাড়াও বর্ষাকালে, এমনকি বৃষ্টিবহুল অঞ্চলেও হাইব্রিড ভেণ্ডী চাষ করা যায়।জৈব পদার্থ যুক্ত হালকা দো-আঁশ মাটি ভেণ্ডী চাষের পক্ষে আদর্শ হলেও প্রায় সবরকম মাটিতেই এর চাষ করা যায়।
সামান্য অম্লত্ব সহনশীল হলেও ক্ষার বা নোনামাটিতে ঢেঁড়স ভালো হয় না।ঢেঁড়স চাষের উপযুক্ত অম্লত্ব হলো ৬-৬.৮।ফাল্গুন মাস থেকে শুরু করে শ্রাবণ মাস পর্যন্ত হাইব্রিড ভেণ্ডীর বীজ বোনা যায়।

 

বীজের হার ও বীজ বোনা :
দেশী বীজ–বিঘা প্রতি ১-২ কেজি এবং হাইব্রিড বীজ-বিঘা প্রতি ৫০০-৭৫০ গ্রাম। গ্রীষ্মকালে গাছের বৃদ্ধি অপেক্ষাকৃত কম হয়।সেইজন্য গ্রীষ্মকালে বীজের হার বেশি লাগে। বর্ষাকালে অপেক্ষাকৃত কম বীজ লাগে।
গ্রীষ্মকালে সারি থেকে সারির দূরত্ব হবে ৬০ সেমি. (২ ফুট) এবং চারা থেকে চারার দূরত্ব হবে ৪৫ সেমি. (১.৫ ফুট)।বর্ষাকালে সারি থেকে সারির দূরত্ব হবে ৭৫ সেমি. (২.৫ ফুট) এবং চারা থেকে চারার দূরত্ব হবে ৪৫ সেমি. থেকে ৬০ সেমি (১.৫-২ ফুট)।

 

গভীরভাবে লাঙল দিয়ে ৪-৫ চাষ দেওয়ার পর বিঘাপ্রতি ৪ টন গোবর সার মাটির সঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে দিতে হবে এবং ১৫দিন পর শেষ চাষের আগে বিঘাপ্রতি ১০ কেজি নাইট্রোজেন, ১৫ কেজি ফসফেট ও ১০ কেজি পটাশ এবং ৩ কেজি কার্বোফিউরান মাটির সঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে মই দিয়ে জমি সমান করতে হবে।এর ৭ দিন পরে দূরত্ব অনুযায়ী সারিতে ১টি বা ২টি করে বীজ ১ সেমি. গভীরে বসাতে হবে।বীজ বসানোর আগে ১২-২৪ ঘন্টা জলে ভিজিয়ে রাখলে অঙ্কুরোদগম ভালো হবে এবং তাড়াতাড়ি ও সুষমভাবে চারা বের হবে।ভেণ্ডী বীজ ২ গ্রাম কার্বেণ্ডাজিম প্রতি কেজি বীজে মিশিয়ে বীজ শোধন করে নিতে হবে।বীজ বোনার পর হালকা সেচ দিতে হবে এবং লক্ষ্য রাখতে হবে যেন জমি খুব বেশি ভিজে না যায় বা খুব বেশি শুকিয়ে না যায় ৷

 

ভেণ্ডী চাষ পদ্ধতি তে চাপান`সার প্রয়োগ ও পরিচর্যা :
বীজ বোনার একমাস পরে বিঘা প্রতি ৫ কেজি হারে নাইট্রোজেন সার প্ররো করে চারার গোড়ায় মাটি দিয়ে গোড়া বেঁধে দিতে হবে ও সেচ দিতে হবে।প্রথম চাপান সার প্রয়োগের তিন সপ্তাহ পরে দ্বিতী চাপান হিসাবে পুনরায় ৫ কেজি করে নাইট্রোজেন ও পটাশ প্রয়োগ করতে হবে এবং সেচ দিতে হবে।মাঝে মাঝে নিড়ানি দিয়ে আগাছা পরিষ্কার করে দিতে হবে এবং গোড়ার মাটি আলগা করে দিতে হবে। প্রয়োজন মতো ৭-১০ দিন অন্তর সেচ দিতে হবে।বীজ বোনার ৫০-৬০ দিনের মাথায় ফসল তোলা শুরু হয়। প্রতি ৩/৪ দিন অস্তর ছুরি দিয়ে বোঁটা কেটে ভেণ্ডী তোলা উচিত। রাত্রের দিকে ফলের বৃদ্ধি ভালো হয়।তাই, সকালে ফসল তোলা অধিক লাভজনক ৷ সযত্ন ও পরিচ্ছন্ন চাষ করা সত্ত্বেও নানা রোগ-পোকার আক্রমণ দেখা দেয়। সে ক্ষেত্রে, প্রয়োজন অনুযায়ী ফসল সুরক্ষার ব্যবস্থা নিতে হবে।

 

আর ও পড়ুন       ধার দেওয়া টাকা চাইতে গিয়ে বন্ধু ও তার দলবলের হাতে আক্রান্ত হলেন দিনমজুর

 

ফলন :
বিঘা প্রতি হাইব্রিড ভেণ্ডীর গড় ফলন ২৫-৩০ কুইন্টাল।হাইব্রিড ভেণ্ডীর অধিকাংশ জাতের বৈশিষ্টা হলো, গাছ লম্বা হয়ে যায়। কখনও কখনও ৮-১০ ফুট লম্বা গাছও দেখা যায়।এসব ক্ষেত্রে, মাটি থেকে ১-১.৫ ফুট উঁচু থেকে গাছ কেটে বিঘা প্রতি ৫ কেজি হারে নাইট্রোজেন চাপান সার হিসাবে প্রয়োগ করে সেচ দিলে নতুন ডালপালা বেরিয়ে অধিক ফলন দেয়।

 

উন্নত জাত :
বিজয়, বিশাল, বর্ষা, নং-৭, মাহিকো-১০, মাহিকো-১২, ইমপ্রুভড্ বিজয়, নাথশোভা-১১০, অমর, অজয়-২, শ্যামলী, গ্রীন বেস্ট (সাকাতা) ইত্যাদি।দেশী জাতের মধ্যে পার্বণী ক্রান্তি ও সাতশিরা কিছু পরিমাণে সাহেবরোগ সহনক্ষম।তবে, বর্ষাকালের জন্য হাইব্রিড জাতের ভেণ্ডী চাষ করাই উচিত।

ভেণ্ডী চাষ পদ্ধতি তে রোগ:
ক) হলুদ শিরা মোজেইক বা সাহেব রোগভেণ্ডী চাষের প্রধান সমস্যা হলো এই সাহেব রোগ। পাতার শিরা হলুদ ও বর্ণহী হয়ে যায়, শিরা-উপশিরাগুলি মোটা হয়ে যায় এবং কখনও কখনও শিরা-মধ্যবর্তী অংশও হলুদ হয়ে বিবর্ণ হয়ে যায় এবং পাতাগুলো হলুদ ছাপ ছাপ দেখায়, গাছের বৃদ্ধি ব্যহত হয়, ফল ছোটো ছোটো, ফ্যাকাসে রঙের, বিকৃত আকার-আকৃতি লাভ করে।এটি একটি ভাইরাস ঘটিত রোগ।

প্রতিকার
কার্বোসালফান (০.২%) বা ইমিডাক্লোপ্রিড (০.০২%) পর্যায়ক্রমে স্প্রে করলে সাদামাছি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়। তবে, ওষুধ স্প্রে করার পর কমপক্ষে ৭ দিন ফল তোলা যাবে না।ফলন্ত গাছে তামাকপাতা সাবান জল মিশ্রণ স্প্রে করে সাদা মাছির প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে আনা যায়।

 

 ঝিমিয়ে পড়া রোগ :
ছত্রাকঘটিত এই রোগের আক্রমণে গাছ হলুদ বর্ণ ধারণ করেও বেঁটে হয়ে যায়, পাতা পুড়ে যায় ও গাছ ঝিমিয়ে পড়ে, অবশেষে মরে যায়।অনেক সময় গাছ সতেজ থাকে, কিন্তু অগ্রমুকুল এবং কচিফল শুকিয়ে যায়।
রোগাক্রান্ত গাছের মূল বা কাণ্ড লম্বালম্বিভাবে কাটলে ভিতরে কালোকালো লম্বা দাগ দেখা যায়।খুব বাড়াবাড়ি হলে পুরো কাণ্ডই কালো হয়ে যায়।

প্রতিকার
শস্যচক্র মেনে চাষ, রোগাক্রান্ত গাছের মূলসহ তুলে ফেলা, গ্রীষ্মকালে গভীর চাষ-এই রোগের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার প্রধান উপায়।এছাড়া, রোগের সম্ভাবনা দেখা দিলে ২.৫ গ্রাম প্রতিলিটার হিসাবে ম্যানকোজেব এবং ১ গ্রাম প্রতিলিটার হিসাবে কার্বেন্ডাজিম জলে গুলে পর্যায়ক্রমে ৭ দিন অন্তর স্প্রে করতে হবে।

 পাতায় দাগ :
পাতায় গোলগোল জলবসা দাগ দেখা যায়। দাগ ক্রমশঃ কালচে রং ধারণ করে, পাতা গুটিয়ে যায়, ঝিমিয়ে পড়ে এবং ঝুলে পড়ে। ছত্রাকঘটিত রোগ এটি।

প্রতিকার
এ রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য ঝিমিয়ে পড়া রোগে যে ওষুধ ব্যবহার করা হয়, সেই একই ওষুধ একই মাত্রায় ব্যবহার করতে হবে।

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top