হুগলি – ভোটার তালিকার নিবিড় পরিমার্জন বা এসআইআর (SIR) নিয়ে চলা বিতর্কের মাঝেই স্পষ্ট অবস্থান জানালেন সিপিআইএম সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তাঁর মতে, এসআইআর-এর সঙ্গে নাগরিকত্বের কোনও সম্পর্ক নেই। পাশাপাশি তিনি দাবি করেন, আধার কার্ডের ভিত্তিতেই এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। শনিবার হুগলির ত্রিবেণীতে নভেম্বর বিপ্লবের সভায় যোগ দিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি এবং সেখানেই এই মন্তব্য করেন।
বিকাশবাবুর বক্তব্য, “কে বলেছে আধার কার্ডে হবে না? ওটাতেই হবে।” তিনি জানান, বিহারের অভিজ্ঞতার পর বাংলায় নির্বাচন কমিশন সতর্ক হয়েছে। “বিহারে SIR বুমেরাং হয়ে গিয়েছে। তাই তো বাংলায় বলছে, ফর্ম ফিল-আপের সময় কোনও নথি লাগবে না। কিন্তু চাপ বাড়লে কমিশন বলবে—আধার কার্ডেই হবে।”
প্রসঙ্গত, বিহারে ভোটার তালিকার নিবিড় পরিমার্জন চলাকালীন সুপ্রিম কোর্টে উঠেছিল আধার কার্ড সংক্রান্ত বিষয়টি। শীর্ষ আদালতের নির্দেশেই নির্বাচন কমিশন আধার কার্ডকে দ্বাদশ নথি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে। তবে কমিশন স্পষ্ট জানিয়েছে—আধার নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়, এটি কেবলমাত্র পরিচয়ের প্রমাণ।
বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য শুধু আত্মবিশ্বাসই নয়, সতর্কবার্তাও দিয়েছেন। তাঁর কথায়, “আধার কার্ডেই কাজ হবে। তারপরেও যদি কারও নাম বাদ যায়, তা হলে রাজ্যের আইনজীবীরা তো মরে যায়নি।” অর্থাৎ, প্রয়োজনে কমিশনের বিরুদ্ধে আইনি পথে নামার বার্তা দিয়েছেন তিনি।
রাজ্যে ইতিমধ্যেই এসআইআর নিয়ে তৈরি হয়েছে ব্যাপক আতঙ্ক। একের পর এক মৃত্যুর ঘটনাও এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে জুড়ে যাচ্ছে। শাসক তৃণমূল এই নিয়ে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেও, বিজেপির দাবি—তৃণমূল অকারণেই ‘এসআইআর আতঙ্ক’ ছড়াচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে বিকাশবাবু প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাঁর অভিযোগ, “প্রশাসনের অনেকেই আত্মহত্যাকে উৎসাহ দিচ্ছেন, মানুষের সমস্যার কথা বলছেন না। এটা মানবতাবিরোধী কাজ।” একই সঙ্গে তিনি আহ্বান জানান, “মানুষকে বোঝাতে হবে এসআইআর মানে নাগরিকত্ব নয়। ভরসা তৈরি করতে হবে জনগণের মনে।”




















