ভোটার তালিকা সংশোধনের প্রথম দিনেই পথে তৃণমূল, পালটা মিছিলে বিজেপি

ভোটার তালিকা সংশোধনের প্রথম দিনেই পথে তৃণমূল, পালটা মিছিলে বিজেপি

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram



কলকাতা – আজ মঙ্গলবার, ৪ নভেম্বর থেকে পশ্চিমবঙ্গে শুরু হয়েছে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের কাজ (SIR)। এই দিন থেকেই রাজ্যজুড়ে বুথ লেভেল অফিসাররা (BLO) বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের তথ্য যাচাই ও সংগ্রহের কাজ শুরু করেছেন। আর ঠিক এই গুরুত্বপূর্ণ দিনেই রাজনৈতিকভাবে সরগরম রাজ্য— ভোটার তালিকা সংশোধনের সূচনা দিনেই রাস্তায় নামছে তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপি, বিপরীত বার্তা নিয়ে।

দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার দুপুর দেড়টা নাগাদ কলকাতার রেড রোডে ড. বি. আর. আম্বেদকরের মূর্তির সামনে থেকে মিছিল শুরু করবেন তৃণমূলের সর্বময় নেত্রী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মিছিল যাবে রানি রাসমণি রোড হয়ে কে.সি. দাস মোড় পেরিয়ে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে পৌঁছবে। আম্বেদকর থেকে রবীন্দ্রনাথ— এই দুই প্রতীকের নাম যুক্ত করে সাংবিধানিক মূল্যবোধ ও বাঙালিয়ানার বার্তা দিতে চাইছে তৃণমূল।

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিকল্পনা ছিল ২ নভেম্বর শহিদ মিনারে এক বিশাল সমাবেশ করার। কিন্তু অনুমতি না মেলায় সেই কর্মসূচি স্থগিত রাখতে হয়। তবে ভোটার তালিকা সংশোধনের শুরুর দিনটি রাজনৈতিকভাবে হাতছাড়া করতে নারাজ তৃণমূল। তাই সংবিধান রক্ষার আহ্বান ও নাগরিক অধিকারের বার্তা নিয়েই মিছিল করছে শাসক দল।

অন্যদিকে, একই দিনই উত্তর ২৪ পরগনার আগরপাড়ায় ‘অনুপ্রবেশকারীদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার’ দাবিতে মিছিলের ডাক দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সম্প্রতি তিনিই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফরের কয়েকদিন পর আত্মঘাতী প্রদীপ করের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন— যিনি ‘এনআরসি আতঙ্কে’ আত্মহত্যা করেছিলেন বলে দাবি তৃণমূলের। ফলে, মঙ্গলবার কার্যত রাজ্যের দুই প্রধান রাজনৈতিক শক্তি মুখোমুখি পথে নামছে— একপক্ষ অনুপ্রবেশ রুখতে, অন্যপক্ষ নাগরিক অধিকার রক্ষায়।

এদিকে, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী রাজ্যজুড়ে ৮০ হাজার ৬৮১ জন বুথ লেভেল অফিসার (BLO) মাঠে নেমেছেন, সঙ্গে রয়েছেন আরও ১৪ হাজার অতিরিক্ত কর্মী। তাঁরা আগামী ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজ্যের প্রতিটি বাড়িতে অন্তত একাধিকবার যাবেন ভোটার তথ্য যাচাই করতে। নতুন নাম সংযোজন, ঠিকানা সংশোধন বা মৃত ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার কাজ চলবে এই সময়ের মধ্যেই।

প্রতারণা বা বিভ্রান্তি এড়াতে কমিশন জানিয়েছে, ‘আসল’ বিএলও চেনার তিনটি চিহ্ন থাকবে— সরকারি পরিচয়পত্র (যাতে কিউআর কোড সংযুক্ত), বিশেষ SIR কিট ব্যাগ ও ছাপানো ফর্ম, এবং কমিশনের দেওয়া সরকারি টুপি। পাশাপাশি, কমিশনের ওয়েবসাইট ও অ্যাপে ‘Book a Call with BLO’ এবং ‘Connect with Election Officials’ অপশন ব্যবহার করে নিজের এলাকার অফিসারের তথ্য যাচাই করা যাবে।

রাজ্যজুড়ে ভোটারদের উদ্দেশে কমিশনের বার্তা স্পষ্ট— কোনও সন্দেহ হলে তথ্য মিলিয়ে নিন, অফিসারের পরিচয় যাচাই করুন এবং ভুয়ো ব্যক্তির দেখা মিললে সঙ্গে সঙ্গে কমিশনে জানান। কারণ গণতন্ত্র রক্ষার প্রথম ধাপই হচ্ছে সঠিক ভোটার তালিকা গঠন।

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top