৩১টি দেশে শনাক্ত হয়েছে ওমিক্রন, নয়া ভ্যাকসিন তৈরির সিদ্ধান্ত নোভাভ্যাক্সের। সময় যত এগোচ্ছে বিশ্বে চিন্তা বাড়াচ্ছে করোনাভাইরাসের নয়া প্রজাতি ওমিক্রন। নভেল করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন দ্রুত বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। এরই মধ্যে দেশেও দুজন শনাক্ত হয়েছেন। এখন পর্যন্ত মোট ৩১টি দেশে শনাক্ত হয়েছে এ ধরনটি। ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর ডিজিজ প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোলের (ইসিডিসি) মতে, যে গতিতে ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়ছে, শিগগিরই ডেলটাকে সরিয়ে এটিই হয়ে উঠবে বিশ্বে মূল সংক্রামক করোনার ধরন।
যে ৩১ দেশে ওমিক্রন ছড়িয়েছে সেগুলো হলো—ভারত, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, বতসোয়ানা, নেদারল্যান্ডস, হংকং, ইসরায়েল, বেলজিয়াম, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, ইতালি, চেকিয়া, ডেনমার্ক, অস্ট্রিয়া, কানাডা, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, স্পেন, পর্তুগাল, জাপান, ফ্রান্স, ঘানা, দক্ষিণ কোরিয়া, নাইজেরিয়া, ব্রাজিল, নরওয়ে, সৌদি আরব, আয়ারল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও যুক্তরাষ্ট্র। এদিকে, বিপজ্জনক এ ভ্যারিয়্যান্ট ঠেকাতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বিশ্বে অনেক দেশ।
এ ছাড়া আফ্রিকার সাতটি দেশ থেকে আসা যাত্রীদের জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন। এই সাতটি দেশ হলো—বতসোয়ানা, ইসোয়াতিনি, ঘানা, নামিবিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, জিম্বাবুয়ে ও লেসোথো। গত ৮ নভেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকার সবচেয়ে জনবহুল প্রদেশ হাওতেং থেকে নেওয়া একটি নমুনায় প্রথম করোনাভাইরাসের নতুন এই ভ্যারিয়েন্টটি শনাক্ত হয়।
দক্ষিণ আফ্রিকায় মঙ্গলবার যতজন ওমিক্রন রোগী শনাক্ত হয়েছিল পরদিন বুধবার তার দ্বিগুণ সংখ্যক শনাক্ত হয়েছে বলে রয়টার্স জানিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) এপিডেমিওলজিস্ট মারিয়া ফান কারকোয়েভা এক ব্রিফিংয়ে জানান, ওমিক্রন কতোটা সংক্রামক এ বিষয়ক তথ্য ‘কয়েকদিনের মধ্যেই’ জানা যেতে পারে।
আর ও পড়ুন ৬ ডিসেম্বর ‘মৈত্রী দিবস’ হিসেবে উদযাপন করবে ভারত ও বাংলাদেশ
স্পাইক প্রোটিন বদলে ভাইরাসটি আদৌ মারণ হয়ে উঠতে পারে কি না তা অবশ্য এখনও গবেষণার পর্যায়ে রয়েছে। এখনও পর্যন্ত যে তথ্য পাওয়া গিয়েছে তা থেকে জানা যাচ্ছে দুটি কোভিড টিকা নিয়েছে এমন ব্যক্তিরা আক্রান্ত হয়েছে। আর সেখানেই প্রশ্ন উঠছে সব ভ্যাকসিনের কার্যকারীতা নিয়ে। নয়া প্রজাতির বিরুদ্ধে বিশ্বের কোন ভ্যাকসিন কতটা কার্যকর তা এখন পরীক্ষা নীরিক্ষার পর্যায়ে রয়েছে। সেই আবহেই নোভাভ্যাক্সের তরফে জানান হয়েছে নতুন বছরে জানুয়ারি থেকেই এই প্রজাতির বিরুদ্ধে টিকা তৈরি শুরু করবে সংস্থাটি।
সংস্থার তরফে জানান হয়েছে, নোভাভ্যাক্সের টিকা নিয়েছেন এমন ব্যক্তিদের দেহে তৈরি অ্যান্টিবডি এই প্রজাতিকে নিষ্ক্রিয় করতে পারছে কি না তা গবেষণা করে দেখা হচ্ছে। নোভাভ্যাক্স আরও বলেছে যে এটি একটি ওমিক্রন-এর স্পাইক প্রোটিনের মতো অ্যান্টিজেন তৈরি করা শুরু করেছে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে একটি নতুন ভ্যাকসিনের পরীক্ষাও শুরু করবে। তবে শুধু নোভাভ্যাক্স নয়, ফাইজার মডার্নার মতো ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী সংস্থারাও ওমিক্রণ রুখতে কোভিড শট তৈরির কাজ শুরু করেছে।