উত্তর 24 পরগনা – এসআইআরের আবহে আরও চওড়া হল মতুয়া ঠাকুরবাড়ির অন্দরের ফাটল। কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের সংগঠনের বিরুদ্ধে দালালচক্র ও অর্থ নয়ছয়ের অভিযোগ তুলে নতুন কমিটি গঠন করলেন গাইঘাটার বিজেপি বিধায়ক দাদা সুব্রত ঠাকুর। মঙ্গলবার বিকেলে ঠাকুরনগরে কয়েকশো মতুয়ার উপস্থিতিতে তৈরি হয় এই নতুন সংগঠন। সংগঠনের সংঘাধিপতি হন সুব্রত ঠাকুর, সভাপতি বৈদ্যনাথ বালা, কার্যকরী সভাপতি কৃষ্ণপদ মণ্ডল ও সৈকত মণ্ডল, প্রধান সেবায়েত মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুর এবং প্রধান উপদেষ্টা সুব্রতের মা ছবিরানি ঠাকুর। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন শান্তনু বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর দুই বিধায়ক স্বপন মজুমদার ও অসীম সরকার।
সুব্রত ঠাকুর বলেন, “শান্তনু ঠাকুরের সংগঠনে দালাল রাজ চলছে, অর্থ নয়ছয় হয়েছে। বারবার বলেও কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তাই মতুয়াদের স্বার্থে আমি নতুন সংগঠন গড়েছি।” অন্যদিকে শান্তনু ঠাকুর জানান, “আলাদা সংগঠন করার অধিকার সকলেরই আছে। তবে সংগঠন টিকিয়ে রাখতে হলে কাজের মাধ্যমেই নিজের অস্তিত্ব প্রমাণ করতে হবে।”
এতদিন মতুয়া সমাজে দুটি বড় সংগঠন সক্রিয় ছিল—একটি তৃণমূল প্রভাবিত, অপরটি বিজেপি ঘনিষ্ঠ। এসআইআরের প্রতিবাদে মমতাবালা ঠাকুরের অনশন শুরুর একদিন আগে বিজেপি প্রভাবিত সংগঠনের এই বিভাজন রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। রাজনৈতিক মহলের মতে, বিধানসভা নির্বাচনের আগে এটি বড় প্রভাব ফেলতে পারে। এদিন সুব্রতের পদক্ষেপের প্রশংসা করে মমতাবালা ঠাকুর বলেন, “সত্যি কথা বলার সাহস দেখিয়েছে সুব্রত। ও বড় ছেলে, সংগঠন তৈরি করা ওর অধিকার।”
২০১০ সালে বড়মা বীণাপাণি ঠাকুর অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘ গঠন করেছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর সংঘাধিপতি হন কপিলকৃষ্ণ ঠাকুরের স্ত্রী মমতাবালা ঠাকুর। সংগঠনের দখলদারি নিয়ে তখন থেকেই ঠাকুরবাড়িতে বিবাদ শুরু হয়। পরে মঞ্জুলকৃষ্ণের বড় ছেলে সুব্রত আলাদা সংগঠন তৈরি করলেও, ২০১৯ সালে শান্তনু ঠাকুর বিজেপির টিকিটে নির্বাচিত হওয়ার পর সেই সংগঠন নিজের নিয়ন্ত্রণে নেন বলে অভিযোগ ওঠে।
গত মাসে সিএএ আবেদনের জন্য ঠাকুরবাড়িতে আলাদা আলাদা ক্যাম্প করার মধ্য দিয়ে দুই ভাইয়ের দূরত্ব আরও বেড়ে যায়। মঞ্জুলকৃষ্ণের স্ত্রী ছবিরানি ঠাকুর বড় ছেলে সুব্রতর পাশে দাঁড়ান। এরই মধ্যে মঙ্গলবার সুব্রত নতুন সংগঠন ও কমিটি ঘোষণা করায় ঠাকুরবাড়ির অন্দরের দ্বন্দ্ব এখন প্রকাশ্যে চূড়ান্ত রূপ নিল।




















