মদের আবদার না মেটায় বঁটি দিয়ে গলা কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা। পা ভেঙে বাড়িতে পড়ে। তবু হোলিতে মদের আবদার না মেটায় মানসিক অবসাদে বঁটি দিয়ে গলা কেটে আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনা এবার হাওড়ায়। হাওড়ার চ্যাটার্জিহাট থানা এলাকার ডুমুরজলায় এই ঘটনায় শনিবার সকালে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ জানিয়েছে, মদ না পেয়ে মানসিক অবসাদ থেকে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন পেশায় ছোটখাটো হোটেল ব্যবসায়ী ওই ব্যক্তি।
শনিবার সকাল পৌনে ৯টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে হাওড়ার ইছাপুর ডুমুরজলার এইচআইটি কোয়ার্টারে। পুলিশ সূত্রের খবর, এলাকার বাসিন্দা অরূপ পাল (৪০) বাবার সঙ্গে একটি ছোটখাটো হোটেল চালান। দিন কয়েক আগে এক দুর্ঘটনায় তাঁর পা ভেঙে যায়। এরপর থেকে তিনি কার্যত বাড়িতেই ঘরবন্দী হয়ে রয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, ৩-৪ দিন আগে পা ভেঙে অরূপের পায়ে প্লাস্টার করা হয়। বাড়ির নিচের রুমেই তিনি রয়েছেন।
তাঁর মদে আসক্তি রয়েছে। এই নিয়ে পারিবারিক অশান্তিও রয়েছে। যেহেতু কয়েকদিন তিনি বাইরে বেরতে পারছিলেন না তাই এদিন বাড়িতেই মদ কিনে আনতে বলেছিলেন। বাড়ির লোক মদ এনে দেননি। সেই রাগেই সম্ভবত ঘরের বঁটি নিয়ে নিজেই নিজের গলার বাঁ দিকে কোপ চালান তিনি। এদিন সকালে তাঁর স্ত্রী হোটেলের কাজ সেরে ঘর ঘরে ফিরে দেখেন তাঁর স্বামী রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে আছেন।
পাশেই পড়ে রয়েছে রক্তমাখা বঁটি। তার স্ত্রী সঙ্গে সঙ্গে খবর দেন প্রতিবেশীদের। ঘটনাস্থলে ছুটে আসে চ্যাটার্জিহাট থানার পুলিশ। দ্রুত তাকে নিয়ে যাওয়া হয় হাওড়া জেলা হাসপাতালে। সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে রক্তমাখা বঁটিটি উদ্ধার করেছে। স্ত্রী জোৎস্না পাল জানিয়েছেন, স্বামী অরূপ নিয়মিত অত্যধিক মদ্যপান করতেন। এনিয়ে পরিবারে মাঝেমধ্যেই অশান্তি হত।
কিন্তু উনি নেশা ছাড়তে পারেননি। তবে গত কয়েকদিন ধরে অসুস্থতার কারণে বাড়িতেই ছিলেন। কারও সঙ্গেই বিশেষ কথা বলতেন না। জোৎস্নাদেবী এদিন আরও জানান, এদিন সকাল ৭টা নাগাদ দেখেন তাঁর স্বামী রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন। কোনও কথা বলতে পারছেন না। চোখ পিটপিট করছেন। হাতটা নড়ছে। গোটা শরীর রক্তে ভরে গিয়েছে। এরপর তিনি গামছা দিয়ে রক্ত পরিষ্কার করার চেষ্টা করেন। পরে প্রতিবেশীদের ডেকে হাসপাতালে নিয়ে যান।
আর ও পড়ুন সামসেরগঞ্জে সিপিআইএমে বড়সড় ধাক্কা
গত পাঁচ দিনের মধ্যে তাদের মধ্যে তাঁদের মধ্যে কোনও ঝগড়া অশান্তি হয়নি বলে তাঁর দাবি। পাশেই বঁটি পড়েছিল। সেই বঁটিতে রক্ত লাগা ছিল। তাঁর অনুমান বঁটি গলায় চালিয়ে তাঁর স্বামী আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। তবে কি কারণে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন তা তাঁর জানা নেই। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।