Deprecated: version_compare(): Passing null to parameter #2 ($version2) of type string is deprecated in /home/u517603494/domains/shinetv.in/public_html/wp-content/plugins/elementor/core/experiments/manager.php on line 170
ব্রিটিশদের দখলে থাকা দ্বীপপুঞ্জ বুঝে নিল মরিশাস (marishas)

ব্রিটিশদের দখলে থাকা দ্বীপপুঞ্জ বুঝে নিল মরিশাস

ব্রিটিশদের দখলে থাকা দ্বীপপুঞ্জ বুঝে নিল মরিশাস

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram
মরিশাস

মরিশাস সরকারের পাঠানো একটি নৌকা সম্প্রতি ভারত মহাসাগরের বিতর্কিত চাগোস দ্বীপপুঞ্জে পৌঁছেছে। ছাপ্পান্নো বর্গকিলোমিটারের এ দ্বীপপুঞ্জ মরিশাসের কাছে ফিরিয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছে যুক্তরাজ্য। মরিশাস সরকার যুক্তরাজ্যকে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধের’ দায়ে অভিযুক্ত করছে এবং আন্তর্জাতিক আইনের কাছে নতি স্বীকার করে চাগোস দ্বীপপুঞ্জ তাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছে। জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালতও রায় দিয়েছে যে, এ দ্বীপে যুক্তরাজ্যের দখলদারত্ব ‘অবৈধ’। কিন্তু তারপরও যুক্তরাজ্য আনুষ্ঠানিকভাবে দ্বীপপুঞ্জের মালিকানা মরিশাসকে বুঝিয়ে দেয়নি।

 

অর্ধশতাব্দী আগে ১৯৭২ সালে ভারত মহাসাগরের গভীরে এ প্রত্যন্ত দ্বীপপুঞ্জ থেকে ব্রিটিশরা উচ্ছেদ করেছিল দ্বীপের আদি বাসিন্দাদের। ঝকঝকে পরিষ্কার এক দিনে, উষ্ণ বিকেলে তাঁরা আবার সেখানে ফিরে এলেন। পা রাখলেন পেরস বানহস দ্বীপের তীরে, চুমু খেলেন বালিতে, খুশিতে কেঁদে ফেললেন। ‘দারুণ এক মূহুর্ত’, বলছিলেন অলিভিয়া ব্যানকোল্ট। চাগোসবাসীদের এ দ্বীপপুঞ্জে ফিরতে না দেওয়ার জন্য ব্রিটিশ সরকারকে ‘বর্ণবাদী’ বলে তীব্র সমালোচনা করলেন। অলিভিয়া ব্যানকোল্ট বলেন, ‘এটি আমাদের জন্মভূমি। ওরা কীভাবে আমাদের এ অধিকার অস্বীকার করে?’

 

তীরে নামার সঙ্গে সঙ্গেই মরিশাসের সরকারি কর্মকর্তারা সেখানে পতাকার খুঁটি গাড়ার জন্য কংক্রিট ঢালতে শুরু করেন। মরিশাসের প্রতিনিধি দলের নেতা জগদীশ কুনজাল বলেন, ‘এটি অস্বাভাবিক কিছু নয়। কোনো দেশ তার নিজের সীমানায় জাতীয় পতাকা ওড়ানোর মধ্যে অস্বাভাবিক কিছু নেই।’ পঞ্চাশ বছর আগে এ দ্বীপের মানুষদের মাত্র কয়েক দিনের নোটিশে সেখান থেকে চলে যেতে বলা হয়েছিল। তারপর থেকে দ্বীপটি যে অবহেলার শিকার, তার চিহ্ন ছড়িয়ে আছে একটি মরচে ধরা রেললাইন, ভাঙাচোরা বাড়িঘর আর কংক্রিটের এক ঘাটের ধ্বংসাবশেষে। পুরোনো গির্জাটির চারপাশে এখন ঘন জঙ্গল। ৬৮ বছর বয়সি লিসবি এলিস এ গির্জার দায়িত্বে ছিলেন। সেখানে ঢুকে চাগোসবাসীরা জমে থাকা ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করতে শুরু করলেন। এলিস বলেন, ‘আমি এখানে ফিরে আসতে পেরে খুশি।

 

কিন্তু আমার কষ্ট লাগছে যে, আমাকে আবার ফিরে যেতে হবে। আমি এখানে স্থায়ীভাবে থাকতে চাই।’ যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের অনেক আপত্তি ও বিরোধিতা সত্ত্বেও, মরিশাস আইনি লড়াইয়ে একের পর এক জয় পেয়েছে। প্রথমে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে। এর পর জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক আদালতে। সর্বশেষ জাতিসংঘের যে ট্রাইব্যুনাল সমুদ্রসীমা সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি করে, সেখানকার রায়ও মরিশাসের পক্ষে গেছে। জাতিসংঘের মানচিত্রে এখন এ দ্বীপপুঞ্জকে মরিশাসের বলে দেখানো হয়। দুটি আন্তর্জাতিক আদালত সম্প্রতি যুক্তরাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছে চাগোস দ্বীপপুঞ্জের ওপর তাদের সার্বভৌমত্বের আনুষ্ঠানিক অবসান ঘটিয়ে যেন তারা সেখানে দখলদারির ইতি টানে।

 

মামলায় মরিশাসের পক্ষ হয়ে ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই করা ব্রিটিশ ব্যারিস্টার ফিলিপ স্যান্ডস বলেন, ‘আমরা যে এখানে এসেছি, এটা একদম অলৌকিক বলে মনে হচ্ছে। মরিশাসের সরকারের জন্য এটা একটা বিরাট ব্যাপার। স্বাধীনতার পর থেকে মরিশাস এ দ্বীপগুলো ফেরত পাওয়ার জন্য লড়ছে।’ যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তর এ বিষয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে। চাগোস দ্বীপপুঞ্জের ওপর আগের মতো সার্বভৌমত্বের দাবির পুনরাবৃত্তি আর করেনি যুক্তরাজ্য। তবে তারা বলছে, এ সফরের ব্যাপারে তাদের যেহেতু আগে থেকেই জানানো হয়েছে, তাই তারা এতে বাধা দেবে না।

 

আর ও পড়ুন    টাকি পৌরসভা দখলের দোরগোড়ায় তৃণমূল কংগ্রেস

 

চাগোস দ্বীপপুঞ্জের সব মানুষকে যুক্তরাজ্য ১৯৭০-এর দশকে সেখান থেকে অপসারণ করেছিল। তারা দেখাতে চেয়েছিল, সেখানে স্থায়ীভাবে থাকে এমন কোনো জনবসতির অংশ নয় তারা। অথচ তারা সেখানে কয়েক প্রজন্ম ধরে বাস করেছে। ব্রিটিশ কূটনীতিকেরা জানতেন যে, এ কাজটি আন্তর্জাতিক আইনে অবৈধ। বিশেষ করে একটি দেশকে স্বাধীনতা দেওয়ার আগেই এভাবে ভাগ করে ফেলা। কিন্তু তারা ভেবেছিলেন, জনবসতি নেই—এমন দ্বীপকে আলাদা করে ফেললে, তা কারও নজরে পড়বে না। যুক্তরাজ্য তখন গোপনে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটা চুক্তি করে ফেলে দিয়েগো গার্সিয়া দ্বীপটি তাদের কাছে লিজ দেওয়ার জন্য। মরিশাসের কর্মকর্তারা বলছেন, যুক্তরাজ্য তাদের রীতিমতো ব্ল্যাকমেইল করেছিল এতে রাজি হতে। যুক্তরাজ্য বলেছিল, হয় এসব দ্বীপ দিয়ে দিতে হবে, নয়তো স্বাধীনতা পাওয়ার কথা ভুলে যেতে হবে।

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top