মলদ্বারে লুকিয়ে আন্তঃরাজ্য সোনার চোরাচালান। আন্তঃরাষ্ট্র পাচারকারী গ্যাংয়ের কায়দায় রাজধানী এক্সপ্রেসকে হাতিয়ার করে পাচারের ছক। মলদাড় থেকে বেড়িয়ে আসে দুটি পৃথক প্যাকেটে চারটি সোনার বিস্কুট। ধৃতের নাম খুনডংবাম রণবীর মেইতি। ইম্ফল পশ্চিম মণিপুরের বাসিন্দা। মনিপুর থেকে ইন্দো মায়মামার সীমান্ত পারাপার করে গৌহাটি থেকে দিল্লীগামী রাজধানী এক্সপ্রেসে পাচারের উদ্দেশ্য ছিল।
জানা গিয়েছে গোপন সূত্রে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় রাজস্ব গোয়েন্দা দপ্তর ও শিলিগুড়ি শুল্ক দপ্তরের ডিপিইউয়ের আধিকারিকেরা মঙ্গলবার দুপুর একটা নাগাদ শিলিগুড়ি এনজেপি স্টেশনের রাজধানী এক্সপ্রেসে এ-ওয়ান কোচে বার্থ নাম্বার একে যাত্রীকে আটক করে। সূত্রে মেলা খবর মোতাবেক আধিকারিকদের কাছে আগাম ওই যাত্রী বেশে থাকা সোনা পাচারচক্রের সদস্যের যাবতীয় তথ্য হাতে এসে পৌঁছেছিল। সেমত এনজেপি স্টেশনে রাজধানী এক্সপ্রেস দুপুর একটা নাগাদ এসে পৌঁছতেই কেন্দ্রীয় রাজস্ব গোয়েন্দা দপ্তরের আধিকারিক ও শুল্ক বিভাগের আধিকারিকরা অভিযান চালায়।
তবে সূত্র ধরে যাবতীয় হিসেব নিকেশ মিলে গেলেও যাত্রীকে আটক করে তল্লাশী চালিয়ে কিছুই মেলেনা কেন্দ্রীয় রাজস্ব গোয়েন্দা দপ্তরের আধিকারিকদের। তার ব্যাগে তল্লাশী চালিয়েও মেলেনা কোনো সামগ্রী। বিশ্বস্ত সূত্রে ধরেই তাকে আটক করে শিলিগুড়ি কলেজ পাড়া ডিআরআই অফিসে নিয়ে আসা হয়। অধিকারিকেরা চাপ দিতেই বেড়িয়ে আসে অভিনব প্রশিক্ষণরত কায়দায় সুকৌশলে চারটি সোনার বিস্কুট পায়ু পথের ভেতর লুকিয়ে পাচারের কায়দা।
এরপরই ওষুধ প্রয়োগ করে মলত্যাগের মাধ্যমে চারটি সোনার বিস্কুট উদ্ধার করে কেন্দ্রীয় রাজস্ব গোয়েন্দা দপ্তর ও শুল্ক বিভাগের আধিকারিকেরা। উদ্ধার হওয়া সোনার বিস্কুটগুলির ওজন ৮৭১.৫০০গ্রাম। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে মনিপুর থেকে ভারত মায়ানমার সীমান্ত হয়ে গৌহাটি থেকে দিল্লিতে পাচারের উদ্দেশ্য ছিল। পাচারের কায়দা থেকে সাফ প্রশিক্ষণরত গ্যাংকে দিয়েই বড় কোনো চক্র এই কাজের নেপথ্যে রয়েছে।
আর ও পড়ুন ধর্ষণে বাধা দেওয়ায় গৃহবধূ ও তার বাবাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুনের চেষ্টা
কেন্দ্রীয় রাজস্ব গোয়েন্দা দপ্তর ও শুল্ক বিভাগের সরকারী আইনজীবী রতন বণিক জানান উদ্ধার হওয়া সোনার আনুমানিক বাজারমূল্য ৪৩লক্ষ ৬হাজার২১০টাকা। দুটো মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত হয়েছে। ধৃতের পায়ুপথে লুকিয়ে ক্যাপসুলের মোড়ক করে দুটো প্যাকেটে আয়তকার আকৃতির সোনার মোট চারটে বিস্কুট লুকোনো ছিল। যা সবটাই বৈদেশিক বেআইনী সোনা। দুটো মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
আরপিএফ এর তরফে ঘটনার সাক্ষী দেওয়া হয়েছে। চক্রে জড়িত এক দুজনের নামও উল্লেখ্য করেছে ধৃত। তা ধরেই তদন্তে এগোচ্ছে গোয়েন্দা বিভাগের আধিকারিকরা। উদ্ধার হওয়া সোনার মূল্য এক কোটি টাকার কম হওয়ায় এদিন আদালত ধৃতেই জামিন মঞ্জুর করা হয়।