বিনোদন – বাংলার আকাশে শরতের স্নিগ্ধ হাওয়া বইতে শুরু করেছে। পিতৃপক্ষের অবসান ঘটিয়ে বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসবের দিন গণনা শুরু হয়েছে মহালয়া থেকেই। এই বিশেষ দিনে ভোররাতের ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ সম্প্রচার শুধু আধ্যাত্মিকতারই নয়, বাঙালির আবেগের সঙ্গেও ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। আর কয়েক বছর ধরে চ্যানেলগুলির নিজস্ব মহালয়া অনুষ্ঠান দর্শকের কাছে আলাদা প্রত্যাশার জন্ম দিয়েছে। কে হচ্ছেন দুর্গা, কেমন হবে মঞ্চসজ্জা—এই কৌতূহল যেন উৎসবের আবহকে আরও বাড়িয়ে তোলে।
এবার সেই কেন্দ্রীয় চরিত্রে এসেছেন ইধিকা পাল। দীর্ঘদিন টেলিভিশনে নানা চরিত্রে অভিনয় করলেও প্রথমবার দুর্গারূপে তাঁকে দেখা যাবে। চ্যানেলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না হলেও দর্শকের আগ্রহ তুঙ্গে। একদিকে স্টার জলসায় কোয়েল মল্লিক দুর্গা, অন্যদিকে জি বাংলায় ইধিকার নাম ঘিরে উন্মাদনা—এই দ্বৈরথ বাংলার টেলিভিশন দর্শকের কাছে উৎসবের আরেক রঙিন দিক।
তবে এ প্রসঙ্গে মনে রাখা দরকার, মহালয়া কেবল নান্দনিকতার প্রদর্শনী নয়। এই দিনটি এক পবিত্র সাংস্কৃতিক পরম্পরার প্রতীক। তাই দুর্গার চরিত্রে নির্বাচিত অভিনেত্রীর ওপর থাকে দ্বৈত দায়িত্ব—নান্দনিক উপস্থাপনা ও দেবীসত্তার আভিজাত্য ফুটিয়ে তোলা। শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো জনপ্রিয় অভিনেত্রীরা এই পরীক্ষায় বারবার সফল হয়েছেন। এবার সেই শূন্যস্থান পূরণের বড় দায়িত্ব ইধিকার কাঁধে। তাঁর ব্যক্তিগত অনুভূতি ও মা দুর্গার প্রতি ভক্তি দর্শককে কতটা স্পর্শ করতে পারে, সেটাই দেখার বিষয়।
আসলে মহালয়ার অনুষ্ঠান আজ বাঙালির সাংস্কৃতিক আত্মপরিচয়ের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। অভিনয়শিল্পী যেই হোন না কেন, তাঁর কাছে দর্শকের চাওয়া শুধু সাজসজ্জা বা আড়ম্বর নয়—চাওয়া এক অনাবিল শ্রদ্ধার সঞ্চার। তাই ইধিকার এই প্রথম দুর্গারূপে আত্মপ্রকাশের সাফল্য নির্ভর করবে কতটা তিনি দর্শকের হৃদয় ছুঁতে পারেন তার ওপর। মহালয়া শুধু এক দিনের অনুষ্ঠান নয়, এটি বাঙালির শিকড়ের সঙ্গে জড়িত এক চিরন্তন আবেগ।
