‘মাটির সৃষ্টি’ প্রকল্পে, মহিলাদের স্বনির্ভর করে তুলেছে আমলাজোড়া গ্রাম পঞ্চায়েত। প্রায় ৭২ বিঘা সরকারি জমির ওপর রাজ্য সরকারের ‘মাটির সৃষ্টি’ প্রকল্পের মাধ্যমে, মানিকারা গ্রামের প্রায় ৩০০ জন জবকার্ড ধারক মহিলাদের স্বনির্ভর করে তোলার কাজ করেছে আমলাজোড়া গ্রাম পঞ্চায়েত। এই জমিতে ফল বাগান করা হয়েছে। আম, পেয়ারা, লেবু ইত্যাদি গাছ লাগানো হয়েছে।
এই ৭২ বিঘে জমির মধ্যে থাকা ৬ বিঘে জমিতে অন্যান্য কৃষি কাজ করা হয়। চলতি বছরে এই জমিতে ‘অরহর ডাল’ চাষ করা হয়। জমি থেকে উৎপাদিত প্রায় ৪ কুইন্টাল ‘অরহর ডাল’ কিষাণ মান্ডিতে পাঠানো হয়। একথা জানালেন, আমলাজোড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান চয়নিকা পাল। তিনি বলেন, এরফলে গোষ্ঠীর প্রায় ৩০০ মহিলা স্বাবলম্বী হয়েছে। তিনি বলেন, ৯টি মৌজার ১৫টি গ্রাম নিয়ে আমলাজোড়া গ্রাম পঞ্চায়েত, যার মধ্যে ২১টি সংসদ রয়েছে।
প্রধান বলেন, রাজবাঁধ ছাড়া বাকি সমস্ত এলাকা কৃষিকাজে নির্ভরশীল। সুতরাং রাজ্য সরকারের ‘মাটির সৃষ্টি’ প্রকল্পের কাজ এই অঞ্চলে বেশী পরিমাণে করা হয়েছে। যার লাভ পেয়েছে এলাকার স্থানীয় গ্রামবাসীরা। জমি চাষ যোগ্য করা, বীজ, সার এবং পর্যাপ্ত জলের ব্যাবস্থা সমান ভাবে করে গিয়েছে পঞ্চায়েত। বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের মাধ্যমে সৌর বিদ্যুৎ পরিচালিত সাবমার্সিবল পাম্প বাসানো হয়েছে চাষ জমি লাগোয়া।
এছাড়াও জেলাপরিষদ দ্বারা পুকুর কাটার কাজ করা হয়েছে। যে পুকুরের জল যেমন চাষের জন্য ব্যাবহার হয়, পাশাপাশি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যারা মাছ চাষ করেও নিজেদের উপার্জনে বৃদ্ধি করতে পারছেন। তিনি বলেন, পঞ্চায়েত নাগরিক পরিষেবার কাজের ক্ষেত্রে, নিকাশি নালা, পাকা সড়ক, পানীয় জলের ব্যাবস্থা করেছে প্রতিটি গ্রামে। তবে প্রধান বলেন, তৃনমূল কংগ্রেস পরিচালিত আমলাজোড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে ২০১৫ সালে তৎকালীন বিধায়ক নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়ের সময়ে, সিলামপুরে একটি কমিউনিটি হল তৈরি করে।
কিন্তু, আজ পর্যন্ত সেই কমিউনিটি হল পঞ্চায়েত সমিতির তরফ থেকে আমলাজোড়া গ্রাম পঞ্চায়েত-কে হস্তান্তর করা হয় নি। যারফলে পঞ্চায়েত এলাকার মানুষ স্বল্প মুল্যে তা ব্যাবহার করতে পারছেন না। তিনি আক্ষেপের সূরে বলেন, পঞ্চায়েত সমিতি সহযোগিতা করছে! কিন্তু, আরও একটু সহযোগিতা করলে আমলাজোড়া গ্রাম পঞ্চায়েত, এলাকার মানুষের জন্য রাজ্য সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পগুলির কাজ আরও দ্রুততার সাথে তাদের কাছে পৌঁছে দিতে পারবে। সুত্রে জানা গিয়েছে, গত বিধানসভা নির্বাচনে প্রায় ৩ হাজার ভোটে তৃনমূল কংগ্রেসকে লিড দিয়েছে আমলাজোড়া গ্রাম পঞ্চায়েত।
সেইমত এলাকার মানুষের চাহিদা সম্পূর্ণ করা পঞ্চায়েতের প্রথম কাজ। তবে, বিভিন্ন প্রতিকুলতার মধ্যেও পঞ্চায়েত নাগরিক পরিষেবা এবং এলাকার মানুষের চাহিদা পূর্ণ করার কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান প্রধান চয়নিকা পাল। প্রধান বলেন, দুর্গাপুর পূর্বের বিধায়ক তথা রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার আমলাজোড়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা সম্পর্কে ওয়াকিবহল বলেই অনেকটা সহজ হচ্ছে নাগরিক পরিষেবা সহ পঞ্চায়েত এলাকার মানুষদের চাহিদা সম্পূর্ণ করার কাজ। আগামী দিনে মন্ত্রীর সহানুভূতি এবং তাঁর সুদক্ষ্য মতামত আমলাজোড়া গ্রাম পঞ্চায়েতকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ করবে, যা আমি মনে করি।